রাজ্যে ১২৮টি পৌরসভার গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগে দায়িত্বে- জেলাশাসক
পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে উত্তাল গোটা রাজ্য। তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সির জোড়া ফলা ইডি-সিবিআই। লোকসভা ভোটের আগে এই ইস্যুকে সামনে রেখে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে…
রাজ্যে ১২৮টি পৌরসভার গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগে দায়িত্বে- জেলাশাসক
পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে উত্তাল গোটা রাজ্য। তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সির জোড়া ফলা ইডি-সিবিআই। লোকসভা ভোটের আগে এই ইস্যুকে সামনে রেখে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছে বিরোধীরা। তাই এবার পুরসভাগুলিতে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ নিশ্চিত করতে কড়া পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। গোটা প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ দূর করতে খর্ব করা হচ্ছে চেয়ারম্যানদের ক্ষমতা। তাদের পরিবর্তে এবার নিয়োগ কমিটির প্রধান হবেন জেলাশাসকরা। মূল উদ্দেশ্য একটাই, আইন মেনে যোগ্যতা অনুযায়ী পুরসভাগুলিতে শূন্যপদ পূরণ। রাজ্যের ১২৮টি পুরসভাতেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
এ প্রসঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ আমলা বলেন, বামফ্রন্ট আমলের পুর দুর্নীতির ভার বয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে এখনও। কিন্তু কেন? জবাবে ওই আমলা জানান, বাম জমানায় পুরসভায় গ্রুপ এ, বি, সি এবং ডি পদমর্যাদার কর্মী নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া ছিল সংশ্লিষ্ট পুর কর্তৃপক্ষের হাতেই। ফলে এই চাকরি পাওয়ার একরকম অলিখিত শর্তই হয়ে যায় স্বজন-পোষণ আর দুর্নীতি। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন গঠন করে তৃণমূল সরকার। স্বশাসিত এই কমিশনের হাতে বাংলার সব পুরসভার গ্রুপ এ, বি এবং সি কর্মী নিয়োগের ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু গ্রুপ ডি নিয়োগের ভার থেকে যায় পুরসভার কাঁধেই।
সেই সময় প্রশাসনের যুক্তি ছিল— কেন্দ্রীয়ভাবে অষ্টম শ্রেণি পাশ যোগ্যতার এই চাকরির জন্য বিজ্ঞাপন প্রকাশ হলে লক্ষ লক্ষ আবেদন জমা পড়বে। ফলে কমিশনের পক্ষে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে বহু সময় লেগে যাবে। তাছাড়া সামান্য বেতনের জন্য কোচবিহারের কোনও চাকরিপ্রার্থী পানিহাটি পুরসভায় গ্রুপ ডি পদে আগ্রহ দেখাত কি না সন্দেহ। তাই স্থানীয়ভাবে এই নিয়োগ করার পক্ষে মত দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রশাসকরা। তারপরই ধরা পড়ে আরও এক অসুখ। গ্রুপ ডি চাকরির রাশ নিজের হাতে রাখতে সংশ্লিষ্ট পুরসভার চেয়ারম্যানরাই হয়ে যান নিয়োগ কমিটির প্রধান। তার জেরে আজ এই পরিস্থিতি। পুর নিয়োগ দুর্নীতির সিংহভাগ অভিযোগই এই গ্রুপ ডি চাকরি কেনা-বেচা সংক্রান্ত। তাই চেয়ারম্যানদের ‘দৌরাত্ম্য’ কমাতে এবার ১২৮টি পুরসভার নিয়োগ কমিটির প্রধান পদে বসানো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের। সেক্ষেত্রে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি পথ বন্ধ হবে বলে আশাবাদী নবান্ন।
No comments