Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

লালমাটির আকাশে ড্রোনের ওড়ান: জঙ্গলমহলের ভবিষ্যৎ বদলে দিচ্ছেন ডঃ অনির্বাণ দাস

লালমাটির আকাশে ড্রোনের ওড়ান: জঙ্গলমহলের ভবিষ্যৎ বদলে দিচ্ছেন ডঃ অনির্বাণ দাস

 সুবর্ণরেখার তীর ঘেঁষে সবুজে মোড়া জঙ্গলমহল। ল্যাটেরাইট মাটির রুক্ষতা আর শাল-পলাশের ছায়ায় ঘেরা এই জনপদ কেবল এক ভূখণ্ড নয়, এক জীবন্ত সত্তা। তবে এই প্রাকৃতি…

 



লালমাটির আকাশে ড্রোনের ওড়ান: জঙ্গলমহলের ভবিষ্যৎ বদলে দিচ্ছেন ডঃ অনির্বাণ দাস



 সুবর্ণরেখার তীর ঘেঁষে সবুজে মোড়া জঙ্গলমহল। ল্যাটেরাইট মাটির রুক্ষতা আর শাল-পলাশের ছায়ায় ঘেরা এই জনপদ কেবল এক ভূখণ্ড নয়, এক জীবন্ত সত্তা। তবে এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আড়ালে মিশে থাকে অনাহারী দীর্ঘশ্বাস আর প্রান্তিক মানুষের না-বলা হাহাকার। সেই মাটির ভাষা বুঝে, গত দুই দশক ধরে একাই এক দীর্ঘ পথ হাঁটছেন ডঃ অনির্বাণ দাস। তাঁর লক্ষ্য স্থির—এই জনজাতি অধ্যুষিত গ্রামগুলোর পরবর্তী প্রজন্ম যেন শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়।

ডঃ দাসের লড়াইটা কেবল অক্ষরজ্ঞানের নয়, বরং আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে এই প্রান্তিক জনপদকে জুড়ে দেওয়ার। বছরের অধিকাংশ সময় তিনি কাটিয়ে দেন খেমাশোল, অসুরহাটা, ভালুকতারা কিংবা শালবনির মতো প্রত্যন্ত গ্রামে। তাঁর কাছে শিক্ষা কোনো বিলাসিতা নয়, বরং বাঁচার হাতিয়ার। আর সেই হাতিয়ার হিসেবেই তিনি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন আধুনিক যন্ত্র, সার্কিট আর ড্রোন। টেকনোলজি, রোবোটিক্স কিংবা ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT)-এর মতো বিষয়গুলো এখন জঙ্গলমহলের কুঁড়েঘরগুলোতে আর ভিনগ্রহের শব্দ নয়।

সম্প্রতি জঙ্গলমহলের এক অবারিত প্রাঙ্গণে দেখা গেল এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। সমবেত হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক জনজাতি পড়ুয়া। চোখেমুখে তাদের বিস্ময় আর কৌতূহল। উপলক্ষ—ড্রোন প্রযুক্তির এক বিশেষ কর্মশালা। হেক্সাকপ্টার, FPV ড্রোন, কোয়াডকপ্টার কিম্বা ন্যানো ড্রোন—যান্ত্রিক নামগুলো তাদের কাছে নতুন হলেও, ওড়ানোর নেশায় তারা মশগুল। কয়েক ঘণ্টার নিবিড় প্রশিক্ষণে তারা বুঝে নিল, প্রযুক্তির আকাশ ছোঁয়া মোটেই অসম্ভব নয়।

জঙ্গলমহলে শিক্ষা আজও এক কঠিন সংগ্রাম। অভাবের তাড়নায় প্রতি বছর স্কুলছুট বা ‘ড্রপআউট’-এর তালিকা দীর্ঘতর হয়। গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিও এখানে কেবল খাতা-কলমের পরিসংখ্যান। কিন্তু এই কর্মশালাটি যেন ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে। ড্রোন ওড়ানোর আনন্দ আর নতুন কিছু শেখার জেদ পড়ুয়াদের মনে এক নতুন সংকল্প গেঁথে দিয়েছে—তারা আর পড়াশোনা ছাড়বে না। তারা চায় দেশের অগ্রগতির গল্পে নিজেদের নাম লেখাতে।

এই মহৎ কর্মযজ্ঞের প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন নিবেদিতা চ্যাটার্জি (ডিরেক্টর, ভিজিলান্টিয়া প্রিসিডিয়াম প্রাইভেট লিমিটেড)। উপস্থিত ছিলেন শ্রী সাগর ধাওয়া, শ্রী নরেন চ্যাটার্জি, শ্রী সৌম্যজিৎ ঘোষ, শ্রী বিশাল দুবে, শ্রী জাসাই টুডু এবং শ্রী কুঁয়ার সোরেন। তাঁদের মতে, এ ধরনের উদ্যোগ জঙ্গলমহলের আর্থ-সামাজিক কাঠামো বদলে দিতে পারে।

No comments