৪৬দিন ধরে গেটে বিক্ষোভ, শ্রমিকদের কাজে পূনঃ বহালের দাবিতে!
শারদীয়া দূর্গা উৎসব এবং দীপান্বিতা কালি মায়ের কাছে সকলেই প্রার্থনা করেন আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে। হলদিয়ার ভূমিহীন শ্রমিকরা দীর্ঘ ৪৬ দিন ধরে দুটো হাত নয় এক হাত…
৪৬দিন ধরে গেটে বিক্ষোভ, শ্রমিকদের কাজে পূনঃ বহালের দাবিতে!
শারদীয়া দূর্গা উৎসব এবং দীপান্বিতা কালি মায়ের কাছে সকলেই প্রার্থনা করেন আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে। হলদিয়ার ভূমিহীন শ্রমিকরা দীর্ঘ ৪৬ দিন ধরে দুটো হাত নয় এক হাতের কাজের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন । দীর্ঘ প্রায় ১২-১৫ বছর ধরে তাদের জীবন যৌবন সবটাই কারখানার স্বার্থে দিয়েছেন আর সেই কারখানা যখন নতুন মুহি রূপে স্থাপিত হচ্ছে তখন সেই কর্মরত সকল শ্রমিকদের বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে বহিরাগত শ্রমিকদের কাজে লাগানো হচ্ছে। পুরাতন শ্রমিকরা কাজের দাবিতে গেটের সামনে আন্দোলন করছেন।
এমনই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার শিল্পশহর হলদিয়া বিপিসিএল কারখানার শ্রমিকরা আইপিসিএল এর ভিতর কাজ করতেন বিপিসিএল এর গ্যাস লোডিং আন লোডিং এবং রিফলিং করতেন বর্তমানে আইপিসিএল কারখানা থেকে বিপিসিএল নিজস্ব কারখানা তৈরি হয়েছে। আর সেই কারখানায় নতুন করে যখন কাজ শুরু হচ্ছেন দীর্ঘ প্রায় আট বছর দশ বছর যারা কাজ করেছিলেন তাদেরকে বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে নতুন শ্রমিক নিয়োগ করছেন। বিপিসিএল কারখানাতে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তারা। হলদিয়া পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড উদ্বাস্তু ক্ষতিগ্রস্ত ভূমিহীন মানুষ। আজ তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আন্দোলন করছেন কাজের দাবিতে পরিবারের মুখে অন্য বস্ত্র তুলে দেওয়ার দাবি নিয়ে। ৩৬ দিনের মাথায় শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের আইএনটিইউসির কোর কমিটির সদস্য এসে বিধান দিয়েছিলেন বহিরাগত শ্রমিককে আটকাতে হবে গেটে, তবেই কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারবে তাহলেই কাজ হারা, পুরাতন শ্রমিকরা কাজ পাবে। যেমন কথা তেমন কাজ সেই অনুযায়ী তারা দীর্ঘ আরও দশ দিন আন্দোলন করেছেন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি ।অবশেষে আজ সকাল থেকেই আন্দোলন গত শ্রমিকরা কাজ ফিরে পাওয়ার দাবি নিয়ে বিপিসিএল কারখানার গেটের সামনে আন্দোলনে নামলেন। এবং বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে তোমরা বহিরাগত শ্রমিক কাজ করো কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন যারা কাজ করেছিলাম আমাদেরও কাজ চাই। তাই শ্রমিক ঐক্য এক হয়ে আমরা আসুন আন্দোলন করি, সেই অনুযায়ী যারা পুরাতন শ্রমিক কিছু কাজ করতেন তারা ভিতরে গেলেন কাজ শুরু করলেন কিন্তু কন্টাকটার এর কর্তৃপক্ষ ভিতরে গিয়েই কাজ বন্ধ করে দিলেন। নতুন বহিরাগত যে সকল শ্রমিক বাহিরে রয়ে গেলেন সেই সকল সমস্ত শ্রমিক ভিতরে না আসা পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে। কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করলেন কাজ শুরু করার জন্য । কাজ হারা শ্রমিক অরুণাংশু দেবনাথ বলেন আমরা কাজ বন্ধ করার পক্ষে নয়। কাজ চালু রেখে আন্দোলন করছি। পুরানো যে সকল শ্রমিক ছিলেন তাদেরকে আমরা কাজ শুরু করার জন্য বলেছি কিন্তু কন্টাকটার কর্তৃপক্ষ কাজ বন্ধ করে দিলেন। আমরা তীব্র প্রতিবাদ করছি কন্টাকটার কর্তৃপক্ষ যে ঘৃন চক্রান্ত সৃষ্টি করছেন তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করছি। আমরা কাজ চালু রেখে আন্দোলন করছি দীর্ঘ ৪৬ দিন। আমরা চাই সকল শ্রমিক কাজ করবে যারা বিশেষ করে হলদিয়া উদ্বাস ক্ষতিগ্রস্ত ভূমিহীন তারাই প্রথম অগ্রাধিকার পাক । যারা দীর্ঘদিন কাজ করে এসেছেন তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের কেই কাজে লাগানো হোক। কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা দিয়েছেন আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেই আগামী দিনে কাজে লাগাবেন। এই ঘটনাকে কটাক্ষ করেছেন ভারতীয় মজদুর সংঘ বিএমএস রাজ্য সভাপতি প্রদীপ বিজলী তিনি বললেন দীর্ঘ ৪৬ দিন শ্রমিকরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আন্দোলন করছেন মা মাটি মানুষের সরকার রয়েছেন নেত্রী একবারও এই সকল শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে কিছু বললেন না। তাদের শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের আজ যখন শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন এখন অনেক নেতা এসে তাদেরকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। একজন কন্ট্রাক্টর কিভাবে অর্থের বিনিময়ে বহিরাগত শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে দেয়। এটা তো পরিষ্কার বড় মাথার হাত যদি ওই কন্টাকটারের মাথায় না থাকে কোন দিনই সম্ভব নয়। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করব ঐ সকল শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের কথা শুনে অভিজ্ঞ শ্রমিকদের কাজে যোগদান করানো হোক।

No comments