অভিষেকের নির্দেশ, মৃত পরিযায়ীর দেহ নিয়ে নন্দীগ্রামে দেবাংশু!ঘড়িতে তখন বিকেল প্রায় তিনটে। সবুজে ঘেরা ধান ক্ষেতের মাঝে টালির চালা বাড়িতে শুধুই কান্নার রোল। ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে কফিনবন্দী হয়ে ফিরতে হল নন্দীগ্রাম- ২ ব্লকের বির…
অভিষেকের নির্দেশ, মৃত পরিযায়ীর দেহ নিয়ে নন্দীগ্রামে দেবাংশু!
ঘড়িতে তখন বিকেল প্রায় তিনটে। সবুজে ঘেরা ধান ক্ষেতের মাঝে টালির চালা বাড়িতে শুধুই কান্নার রোল। ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে কফিনবন্দী হয়ে ফিরতে হল নন্দীগ্রাম- ২ ব্লকের বিরুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভীমচরণ বারিককে(৪৫)। পরিযায়ীর মৃত্যুর খবর পেয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শুক্রবার সকালে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ভীমচরনের দেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে এসে হাজির হন দেবাংশু ভট্টাচার্য। সাথে ছিলেন তৃণমূলের জেলার নেতারাও। বাড়ির ছেলের নিথর দেহ বাড়িতে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফ থেকে এদিন পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন দেবাংশু সহ নেতারা। জানা গেছে, ভীমচরণবাবু দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে কেরলে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন। প্রায় মাস পাঁচেক আগে শেষবার বাড়ি এসেছিলেন ভীমচরণ। এরপর পুনরায় কেরলে কাজে যান তিনি। গত মঙ্গলবার আচমকা একটি বহুতলে কাজের সময় মাথায় লোহার কড়াই থাকা অবস্থায় উল্টে নিচে পড়ে যান ভীমচরণবাবু। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বুধবার রাতে মৃত্যু হয় তার। এই ঘটনার খবর পেয়ে পরিবারের লোকজনেরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। স্থানীয় বিজেপি বিধায়ককে কাছে না পেয়ে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বদের সাথে যোগাযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে নন্দীগ্রামের এই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পৌঁছায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তৎক্ষণাৎ গোটা পরিবারের পাশে দাঁড়ান অভিষেক। তড়িঘড়ি দেহ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন অভিষেক। শুক্রবার সকালে কেরল থেকে বিমানে করে কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় ভীমচরণবাবুর দেহ। সেখানে অভিষেকের নির্দেশে হাজির ছিলেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, জেলা তৃণমূল সভাপতি সুজিত রায়, নন্দীগ্রামের দুই ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুনীল জানা, বাপ্পাদিত্য গর্গ সহ অন্যান্যরা। দেবাংশু জানান, “এই ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে উনাদের পাশে থাকার জন্য বলেছিলেন। সেইমতো আমরা বিমানবন্দর থেকে উনার বাড়ি পর্যন্ত দেহ নিয়ে পৌঁছালাম। ওনাদেরও রুজি রুটির জন্য বেশ কিছু দাবি রয়েছে। আমরা সরকারের কাছে সেগুলি জানাবো।”
উল্লেখ্য, ভীমচরণবাবু বাড়ির একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন। তার বাড়িতে রয়েছে বৃদ্ধ মা, ভাই, স্ত্রী এবং তিন সন্তান। যাদের মধ্যে দুজন নাবালক। আগামী দিনে সরকারকে পরিবারের পাশে থাকার জন্য আবেদন জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। মৃতের মা লতারাণী বারিক বলেন, “আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আমাদের বলার ভাষা নেই। আগামী দিনেও আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আবেদন জানাবো।”

No comments