লস্যি বিক্রি করে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম করেন, এগরার মমতা দুয়ারী !
বর্তমান সময়ে যখন বহু মানুষ চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন, তখন এক সাধারণ মহিলা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে পরিশ্রম, সাহস আর সঠিক সিদ্ধান্তই সাফল্যের আসল চাবিকাঠি। পূর…
লস্যি বিক্রি করে মাসে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম করেন, এগরার মমতা দুয়ারী !
বর্তমান সময়ে যখন বহু মানুষ চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন, তখন এক সাধারণ মহিলা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে পরিশ্রম, সাহস আর সঠিক সিদ্ধান্তই সাফল্যের আসল চাবিকাঠি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরার বাসিন্দা মমতা দুয়ারী প্রমাণ করে দিয়েছেন, সঠিক সিদ্ধান্ত ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজস্ব ব্যবসা গড়ে তুলেও মোটা অঙ্কের আয় করাও সম্ভব। লস্যি বিক্রি করেই তিনি আজ মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা রোজগার করছেন, যা অনেক চাকরিজীবীর আয়ের চেয়েও বেশি। ছোট্ট একটি দোকান থেকেই শুরু হওয়া এই সাফল্যের গল্প এখন বহু মানুষের অনুপ্রেরণার কারণ।
মমতা দুয়ারীর ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু হয় কয়েক বছর আগে। সংসারের দায়িত্ব ও আর্থিক চাপে পড়ে তিনি নিজস্ব কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন। গরমের সময় ঠান্ডা পানীয়র জনপ্রিয়তা ভেবে তিনি লস্যির দোকান খোলেন। প্রথমদিকে বিক্রি কম হলেও, স্বাদের গুণমান ও আন্তরিক ব্যবহার দ্রুতই ক্রেতাদের মন জয় করে নেয়। ধীরে ধীরে দোকানে ভিড় বাড়তে থাকে, আর সাফল্যের পথ খুলে যায় তার সামনে।
সারা বছর দৈনিক ৩০০ থেকে ৪০০ গ্লাস লস্যি বিক্রি হলেও গরমের মৌসুমে সেই সংখ্যাটা প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ গ্লাসে গিয়ে ঠেকে। সাধারণ লস্যি ২৫ টাকা করে বিক্রি হয়, আর স্পেশাল লসির দাম ৫০ থেকে ১০০ টাকা। মান ও স্বাদের জন্য পর্যটক এবং স্থানীয় ক্রেতা, উভয়ের কাছেই সমান জনপ্রিয় এই লস্যি। বিক্রির এই ধারাবাহিকতাই তাকে প্রতি মাসে স্থায়ীভাবে ভালো আয়ের সুযোগ দিচ্ছে।
দিঘা যাওয়ার পথে হওয়ায় মমতার দোকানে প্রতিদিন পর্যটকদের ভিড় থাকে। দূরদূরান্ত থেকে আসা ভ্রমণকারীরা এখানে থেমে এক গ্লাস ঠান্ডা লস্যিতে ক্লান্তি দূর করেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও সন্ধ্যা নামলেই দোকানে ভিড় জমান। দোকানের স্বাদ, মান এবং মমতার আন্তরিক আচরণ ক্রেতাদের বারবার ফিরিয়ে আনে।
মমতা দুয়ারীর সাফল্য শুধু একটি ব্যবসায়িক কাহিনি নয়, বরং সমাজে নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, পরিশ্রম ও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে কোনও মানুষ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। এই গল্প শুধু এগরার নয়, গোটা সমাজের জন্যই এক অনুপ্রেরণা— যেখানে নারী ও পুরুষ সমান তালে কাজ করে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
No comments