আইসিডিএস কর্মী ও সহায়িকা পদে নতুন নিয়োগ হয়নি, প্রকল্পের কাজ চালাতে সমস্যা! ২০০৯ সালের পর থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় আইসিডিএস কর্মী ও সহায়িকা পদে নিয়োগ হয়নি। দীর্ঘ ১৬ বছরে এই জেলায় তিন হাজারের বেশি শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। প্রতি মাসে…
আইসিডিএস কর্মী ও সহায়িকা পদে নতুন নিয়োগ হয়নি, প্রকল্পের কাজ চালাতে সমস্যা!
২০০৯ সালের পর থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় আইসিডিএস কর্মী ও সহায়িকা পদে নিয়োগ হয়নি। দীর্ঘ ১৬ বছরে এই জেলায় তিন হাজারের বেশি শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। প্রতি মাসে অবসর নেওয়ার ঘটনা ঘটছে। কিন্তু, নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলেই রয়েছে। এরফলে এই জেলায় আইসিডিএস প্রজেক্ট চালু রাখাই মস্তবড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। জেলায় মোট ৬৩৪৫টি আইসিডিএস সেন্টার ৬৩৪৫টি। কর্মীপদ ফাঁকা ১৪৯৪টি। সহায়িকা পদ ফাঁকা ১৭৫৫টি। কর্মী ও সহায়িকা মিলে মোট শূন্যপদ ৩২৪৯টি। শুধু তাই নয়, ৩০টি সিডিপিও ব্লকে মোট আধিকারিকের সংখ্যা মাত্র ১৪জন। এই জেলায় আইসিডিএস সুপারভাইজার পদ ২৪৯টি। তারমধ্যে ফাঁকা রয়েছে ১০৬টি। আইসিডিএসের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টে বিপুল সংখ্যক শূন্যপদ তৈরি হওয়ায় দৈনন্দিন কাজ করতে নানা অসুবিধা হচ্ছে। প্রজেক্ট চালাতে হিমশিম অবস্থা।
ওবিসি জটে গোটা রাজ্যে সরকারি ক্ষেত্রে নিয়োগ আটকে রয়েছে। একই কারণে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় আইসিডিএস কর্মী ও সহায়িক পদে নিয়োগও ঝুলে রয়েছে। এরআগে আইসিডিএস কর্মী ও সহায়িকা নিয়োগের জন্য ডিস্ট্রিক্ট লেভেল রিক্রুটমেন্ট কমিটি নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছিল। এজন্য পূর্ব মেদিনীপুরের পাশাপাশি পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, মালদহ এবং পুরুলিয়া জেলায় নিয়োগ আটকে গিয়েছিল। আদালতে সেই মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পর রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ডিস্ট্রিক্ট লেভেল কমিটি গঠন করে। ওই মামলা মিটে যাওয়ার পর ২০২৩-’২৪ সাল নাগাদ এই জেলায় আইসিডিএস কর্মী ও সহায়িকা পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তোড়জোড়ও শুরু হয়েছিল। তারপরই ওবিসি জট সামনে আসে। যেকারণে বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার আগেই ফের মামলার জটে আটকে গিয়েছে। দীর্ঘ কয়েকবছর আইসিডিএস কেন্দ্রে শূন্যপদে নিয়োগ না হওয়ায় সর্বভারতীয়স্তরে সেমিনারে এনিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় জেলা প্রশাসনকে। এত পদ খালি থাকলে সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প স্বাভাবিকভাবে চলছে কীভাবে, এধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
গর্ভস্থ মা ও শিশুর পুষ্টিকর খাবার ও তাদের স্বাস্থ্যের নজরদারির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে আইসিডিএ সেন্টারের। শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে কিনা সেটা নজরদারি চালানো হয় ওই সেন্টার থেকেই। নিয়মিত ওজন নেওয়ার মাধ্যমে শিশুর স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা হয়। কিন্তু, কর্মী ও সহায়িকা মিলিয়ে ৩২৪৯ পদ ফাঁকা থাকায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ওই কাজ ব্যাহত হচ্ছে। একের পর এক মামলার জটে নিয়োগ অথৈ জলে।
কোলাঘাট ব্লকে মোট আইসিডিএস সেন্টারের সংখ্যা ৩৬৫টি। প্রতিটি সেন্টার একজন করে কর্মী ও সহায়িকা থাকার কথা। অথচ, সহায়িকা আছেন মাত্র ৮৮জন। কর্মীর সংখ্যা মাত্র ১২৬জন। অর্থাৎ ১২৬টি সেন্টারে কর্মী নেই। সহায়িকা নেই আরও ২৭৭টি সেন্টারে। এছাড়াও ওই ব্লকে সিডিপিও নেই। বিভিন্ন জায়গায় স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং আগ্রহী স্থানীয়রা সেন্টারগুলি চালাতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। অন্যথায় সেন্টার চালানো সম্ভব নয়। প্রশাসন অস্থায়ীভিত্তিতে কাউকে দায়িত্ব দিতে পারছে না। কারণ, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হতে তাঁরা বাড়তি সুবিধার জন্য আন্দোলন শুরু করে দেবেন। তখন নতুন করে সমস্যা তৈরি হবে।
আইসিডিএস-র জেলা প্রকল্প আধিকারিক বিপ্লবকুমার বিশ্বাস বলেন, এই জেলায় কর্মী ও সহায়িকা পদে মোট ৩২৪৯পদ ফাঁকা। সিডিপিও এবং সুপার ভাইজারের পদ বেশকিছু খালি রয়েছে।
No comments