সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের হিসাব পাবে এস এম এস এর দ্বারা
প্রতি মাসে এসএমএসের মাধ্যমে বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের হিসেব পাবেন রাজ্যের ১ কোটি ৭৬ লক্ষ উপভোক্তা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এই পরিষেবা ভবিষ্যৎ সুরক্ষার বিষয়ে …
সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের হিসাব পাবে এস এম এস এর দ্বারা
প্রতি মাসে এসএমএসের মাধ্যমে বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের হিসেব পাবেন রাজ্যের ১ কোটি ৭৬ লক্ষ উপভোক্তা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এই পরিষেবা ভবিষ্যৎ সুরক্ষার বিষয়ে তাঁদের আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষের উদ্দেশে প্রতি মাসে ‘সামাজিক সুরক্ষার’ বার্তা বহন করবে এই উদ্যোগ। মত রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের।
অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার লক্ষ্যে হুবহু প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) মতো, অথচ বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বাংলার একজন ব্যক্তি ১৮ বছর বয়সে এই প্রকল্পে নাম লেখালে, ষাটোর্ধ্ব হওয়ার পর একলপ্তে মেলে ২ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা (বর্তমান সুদের হার অনুযায়ী)। এছাড়া রয়েছে অ্যাক্সিডেন্টাল বেনিফিটের মতো আরও একাধিক সুবিধা প্রাপ্তিরও সুযোগ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের তৎপরতায়, বর্তমানে এই প্রকল্পের উপভোক্তার সংখ্যা ১ কোটি ৭৬ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
এঁদের প্রত্যেকের জন্য রাজ্যকে প্রতি মাসে ৫৫ টাকা করে জমা করতে হয়। আগে মাথাপিছু ২৫ টাকা দিতে হতো উপভোক্তাকে এবং বাকি ৩০ টাকা দিত রাজ্য সরকার। ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে এই অনবদ্য প্রকল্পের সম্পূর্ণ খরচ রাজ্যই বহন করে। তবে প্রতি মাসে প্রত্যেকের নামে প্রদেয় টাকা আদৌ জমা পড়ছে কি না—তার উত্তর পেতে উপভোক্তাদের দীর্ঘসময় লেগে যায়। কারণ, সরকারিভাবে তথ্য সংরক্ষণের জন্য বর্তমানে এই প্রকল্পের সমস্ত তথ্য নির্দিষ্ট পোর্টালে লিপিবদ্ধ হলেও, দীর্ঘদিনের প্রথা অনুযায়ী উপভোক্তাদের একটি করে ‘পাস বই’ দেওয়া হয়। সেটি সংশ্লিষ্ট অফিসে বা রাজ্যের নিযুক্ত লেবার অর্গানাইজারদের দ্বারা বা দুয়ারে সরকারে আপডেট করলে তবেই মেলে এর উত্তর। কিন্তু, প্রতি মাসে টাকা জমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেই তথ্য উপভোক্তাদের জানাতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তাতে মানুষ নিজদের সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ নিয়ে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হবেন বলেই মত প্রশাসনিক মহলের।
ঠিক এই কারণেই প্রতি মাসে টাকা জমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই উপভোক্তাদের মোবাইল ফোনে এসএমএস মারফত সেই বার্তা পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছে নবান্ন। ঠিক যেমন সংগঠিত বা চাকরিজীবীদের পিএফের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। এই বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছে রাজ্য শ্রমদপ্তর। তাদের তরফে এই পরিষেবা দ্রুত চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও সূত্রের খবর। আবার সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়েও এই প্রকল্পের উপভোক্তারা নিজদের অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য যাতে দেখতে পান, সেই লক্ষ্যেও অনলাইন ব্যবস্থা চালু করারও তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সাল থেকে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য বিভিন্ন স্কিম চালু হয়। তার থেকে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতো। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর পর্যায়ক্রমে সমস্ত স্কিম একছাতার তলায় এনে সামগ্রিকভাবে এই সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু করা হয়। এই প্রকল্পে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে প্রতি মাসে ৯৬ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়। অর্থাৎ, এই বাবদ বার্ষিক ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১২০০ কোটি টাকা! রাজ্যের পরিসংখ্যান অনুসারে, একেবারে শুরু থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মাত্র ৪৪ হাজার ৬৩০ জন এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন, যার জন্য রাইটার্সের মোট খরচ হয়েছিল মাত্র ৯ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। সেই জায়গায়, ২০১১ থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত, অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় ৩৪ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮৪৭ জন এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। তার ফলে মা-মাটি-মানুষের সরকারের মোট খরচ হয়েছে ২,৬০৬ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা!
No comments