Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

জেলে বসেই অপরাধীরা বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ

জেলে বসেই অপরাধীরা বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ
জেলে  অথবা সংশোধনাগার বসেই বাড়ির লোকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলা যাবে । কথা বলা যাবে আইনজীবীর সঙ্গে । জেল জীবনের আড়ষ্টতা কাটাতে নতুন ২০২৫ জানুয়ারী ইংরেজি বছরের শুরুতে এমনই সুবিধা…

 


জেলে বসেই অপরাধীরা বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ


জেলে  অথবা সংশোধনাগার বসেই বাড়ির লোকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলা যাবে । কথা বলা যাবে আইনজীবীর সঙ্গে । জেল জীবনের আড়ষ্টতা কাটাতে নতুন ২০২৫ জানুয়ারী ইংরেজি বছরের শুরুতে এমনই সুবিধা পেতে চলেছেন হলদিয়া উপ-সং শোধনাগারের সকল আসামি । আর এই বার্তা পাওয়ার পর থেকেই বদ্ধ জীবনের উদ্বেগ কাটিয়ে তারা কিছুটা স্বস্তিতে । 

         হলদিয়া পৌর এলাকার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের দেভোগ মৌজায় ২০১১ সালে হলদিয়া উপ-সং শোধনাগার চালু হয় । চালুতে ১০ - ১৫ জন আসামি ছিলেন । পরে তা বেড়ে যায় । এখন ১১৬ জন আসামি  এখানে রয়েছেন । চুরি ছিনতাই ডাকাতির আসামির পাশাপাশি খুনের চেষ্টা কিংবা খুন করার দায়ে রয়েছেন ধৃত আসামি । গার্হস্থ্য হিংসা, সংঘর্ষ, মারামারি, রাহাজানি, প্রতারণা ইত্যাদি অপরাধী অনেকেরই ঠাঁই হয়েছে এই জেলে । দিনের পর দিন, মাসের পর মাস একই জায়গায় থাকার কারণে আসামিরা মানসিক অবসাদের শিকার হন । একে জেলবন্দী জীবন, অপরাধবোধ তাদের কুরে কুরে খায় । মানসিক স্ফুর্তি হারিয়ে মনমরা অবস্থায় দুর্বিষহ হয়ে ওঠে অনেকের জীবন । সেই সমস্ত অবস্থা কাটিয়ে আসামিদের প্রাণবন্ত রাখতে জেলে টিভি দেখা, গান-বাজনার ব্যবস্থা রয়েছে । রয়েছে ক্রিকেট ভলিবল কাবাডি ব্যাডমিন্টন ক্যারাম খেলার ব্যবস্থা । এখানেই শেষ নয় বাগান তৈরির পাশাপাশি হাতের কাজ করবারও পরিবেশ রয়েছে এই জায়গায় । বেশ কিছুজনের হাতের তৈরি পুতুল নজর কেড়ে নেয় বৈকি । এত কিছুর মধ্যেও বাইরের জগত থেকে তারা বিচ্ছিন্ন । পরিবারের কে কখনো আসবেন, মনের দুটি কথা ভাগ করে নেবেন সেই অপেক্ষায় মুখিয়ে থাকেন । তার বেশি কিছু উপায় ছিল না । এবার সেই অবস্থার অবসান ঘটতে চলেছে । জেলে বসেই বাড়ির লোকজনের সঙ্গে তারা কথা বলতে পারবেন । সরকারের নিয়ম অনুযায়ী সেক্ষেত্রে আসামির মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ের ফোন নাম্বার রাখা হবে সংশোধনাগারে । সেই সঙ্গে আসামি পক্ষের আইনজীবীর ফোন নাম্বারও সংগৃহীত থাকবে । সংশোধনাগারের ফোন থেকে আসামি সপ্তাহে একবার বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন ।  দুই থেকে দশ মিনিটের সময়সীমা । সেই সঙ্গে সপ্তাহে এক থেকে দু'বার নিজের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন আসামি । তবে সমস্ত কথোপকথনের রেকর্ড থাকবে সংশোধনাগারে । কথোপকথনের সময় টেলিফোন সংস্থার পাশাপাশি সংশোধনাগারের একজন করে মোট দুজন সুপারভাইজার কথোপকথনের নজরদারিতে থাকছেন । কথোপকথনের সময় সরকারি নিয়মবিধি কেউ যদি ভেঙে ফেলেন, তাহলে অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী শাস্তি স্বরূপ তিনি এক সপ্তাহ থেকে এক মাস ফোনে কথা বলতে পারবেন না পরিবারের সঙ্গে । কোন বিদেশি আসামির ক্ষেত্রে কথা বলার জন্য সেই দেশের দূতাবাসের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে(কনসোলার এক্সেস)কথোপকথন করতে হবে । এ প্রসঙ্গে হলদিয়া উপ-সংশোধনাগারের নিয়ামক সমর পাল জানিয়েছেন,"সরকারি নিয়মে রাজ্যের সংশোধনাগারগুলিতে প্রভূত পরিবর্তন ঘটেছে । আসামিরা ভালই সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন । তাদের শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখারও চেষ্টা থাকে । গান-বাজনা, অভিনয়,হাতের কাজ, খেলাধুলা ইত্যাদি বিভিন্ন সংশোধনাগারে রয়েছে । আমাদের হলদিয়া উপ-সংশোধনাগারেও তেমন ব্যবস্থাপনা রয়েছে ।  বাড়ির লোকদের সঙ্গে আসামিদের কথা বলার জন্য ২০২১ সালে প্রকল্প "ই-মোলাকাত"চালু হয়েছে ।‌ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেই সুবিধা তারা পান । এবার সেই জায়গায় চালু হচ্ছে ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা ।

 বাড়ির লোকদের সঙ্গে জেলে বসেই তারা কথা বলতে পারবেন । তবে সবটাই প্রশাসনিক নজরদারির মধ্যে থাকবে । নতুন ইংরেজি বছরের শুরুতেই আসামিরা সেই সুযোগ পাবেন ।" এই ব্যবস্থা চালু করার আগে ইতিমধ্যে প্রশাসনিক স্তরের সমীক্ষার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে । রাজ্যের ৯ টি সেন্ট্রাল জেলে এই ফোন সিস্টেম চালু হয়েছে । ১৬ টি জেলা  স্তরের জেলে এটি চালু করার জন্য পরিকাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে । সেই সঙ্গে ৩৩ টি উপ-সংশোধনাগারে চালু করার উদ্যোগ চলছে । হলদিয়া উপ-সংশোধনাগার তার মধ্যে অন্যতম । ভাব বিনিময়ের এই সুযোগ পাওয়ার বার্তায় স্বস্তিতে আসামিরা ।

No comments