বৌদ্ধ মন্দির সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটেছে এবছর হলদিয়ার দুর্গাচক মিলন সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপেনেপাল, চীন, ভুটান, সিকিমের বৌদ্ধ মন্দির সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটেছে এবছর হলদিয়ার দুর্গাচক মিলন সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপে। একইসঙ্গে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের সমন…
বৌদ্ধ মন্দির সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটেছে এবছর হলদিয়ার দুর্গাচক মিলন সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপে
নেপাল, চীন, ভুটান, সিকিমের বৌদ্ধ মন্দির সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটেছে এবছর হলদিয়ার দুর্গাচক মিলন সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপে। একইসঙ্গে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের সমন্বয়ের রূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপসজ্জায়। নেপালের কালভৈরবের মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপের প্রবেশদ্বার। মণ্ডপে প্রবেশ করেই মনে হবে সিকিম কিংবা ভুটানের কোনও প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির। বুদ্ধের সৌম্যদর্শন ধ্যানগম্ভীর মূর্তির সামনে অবিরত উচ্চারিতহবে শান্তির বাণী। এক কথায়, মিলন সঙ্ঘের মণ্ডপ হয়ে উঠছে একটুকরো ‘ল্যান্ড অব বুদ্ধ’।
শিল্পশহরের খেলাধুলো ও সংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত দুর্গাচক মিলন সঙ্ঘ এবছর উৎসব প্রাঙ্গণে শান্তি ও সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দেবে। এবার তাদের মণ্ডপ ভাবনার নাম ‘শান্তিরূপেণ সংস্থিতা’। শিল্পী চন্দন মাইতি ও তাঁর পঁচিশ জন সহযোগী তিন মাসের পরিশ্রমে বৌদ্ধ সংস্কৃতিকে জীবন্ত করে তুলেছেন। বিশালাকৃতির ড্রাগন, ভয়ঙ্কর কালভৈরবের মূর্তি, সৌম্যদর্শন দেবদেবীর মূর্তি, ধ্যানমগ্ন বুদ্ধের মূর্তিগুলি দেখলে সত্যিই চোখ ফেরাতে পারবেন না দর্শনার্থীরা। কাঠ, ফাইবার কাস্টিংয়ের মূর্তি, তাল আঁটির মূর্তিগুলি সত্যিই নয়নাভিরাম। মণ্ডপ নয়, যেন রঙিন মূর্তি খচিত আস্ত এক মন্দির হঠাৎ আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের ছোঁয়ায় গড়ে উঠেছে শহরের মাঝে। দুর্গাচক মিলন সঙ্ঘের সভাপতি মিলন মণ্ডল বলেন, এবছর হীরক জয়ন্তী বর্ষের পুজোয় জাঁকজমক বেশি হচ্ছে। পুজোর বাজেট ৫০ লক্ষ টাকা। মণ্ডপসজ্জায় ২৫ লক্ষ টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। চারদিকে অশান্ত সামাজিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। তাই উৎসব শুধু মেলবন্ধনের প্রাঙ্গণ নয়, সেখান থেকে শান্তি ও সুস্থ সংস্কৃতির বার্তাও পৌঁছে দিতে হবে।
উৎসব প্রাঙ্গণের নান্দনিক পরিবেশ মানুষের মনকে সুন্দর করবে আশা করি। এবার মণ্ডপে বৌদ্ধ সংস্কৃতির নানারূপ তুলে ধরা হয়েছে। ৬ অক্টোবর রবিবার তৃতীয়ায় পুজোর উদ্বোধনে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী ও শিল্প সংস্থার পদস্থ আধিকারিকরা। পুজোর সময় ক্লাবের ব্রতচারী দলের প্রদর্শনী রয়েছে। তৃতীয়, চতুর্থী ও পঞ্চমীর সন্ধ্যায় নানা বয়সের ছেলেমেয়েরা ব্রতচারী প্রদর্শন করবে। ক্লাবে নাচ, গান, আবৃত্তি ও নাটকের চর্চা হয় সারা বছর। ক্লাবের নাটক ও নাচের দলই পুজোর দিনগুলিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে। স্থানীয় সারদা শিশু নিকেতনের পড়ুয়াদের নাচ গানের অনুষ্ঠান রয়েছে অষ্টমীতে। এছাড়া পুজো উপলক্ষ্যে নানা ধরনের সামাজিক কর্মসূচি রয়েছে। পুজোর সময় শতাধিক গরিব স্কুল পড়ুয়াকে স্কুল ব্যাগ দেওয়া হবে।
ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খেলাধুলো ও সংস্কৃতি চর্চার জন্য মিলন সঙ্ঘের সুনাম জেলাজুড়ে রয়েছে। মিলন সঙ্ঘের উদ্যোগে ফুটবল চর্চার ক্যাম্প চলে হলদিয়ায়। কলকাতার সেকেন্ড ডিভিশনে জানবাজার মিলন সঙ্ঘ দাপটের সঙ্গে খেলে। প্রতিবছর পুজোর সময় সেই বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়। হলদিয়ার দুর্গাচক মিলন সঙ্ঘের সদস্যরা ও পুজো মণ্ডপ।
No comments