পাঁশকুড়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন সৌমেন মহাপাত্রের পত্নী সুমনা পাত্র
পাঁশকুড়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন সৌমেন মহাপাত্রের পত্নী সুমনা পাত্র। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির কাছ…
পাঁশকুড়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন সৌমেন মহাপাত্রের পত্নী সুমনা পাত্র
পাঁশকুড়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন সৌমেন মহাপাত্রের পত্নী সুমনা পাত্র। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির কাছে তিনি ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করে পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে দেন। এরআগে মন্ত্রিসভা, দলের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হয় সৌমেন মহাপাত্রকে। এবার সুমনাদেবীর সরে দাঁড়ানোর ঘটনায় পাঁশকুড়ায় দলের অন্দরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ২০২২সালে পাঁশকুড়া পুরসভায় বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই যে কোনও সময় পুরসভা নির্বাচন হবে। তারআগে দলের শহর সভানেত্রীর পদ থেকে সুমনাদেবীর সরে দাঁড়ানোর ঘটনা ইঙ্গিতপূর্ণ।
গত লোকসভা নির্বাচনে পাঁশকুড়া শহর থেকে তৃণমূল লিড পেলেও সুমনাদেবীর নিজের ওয়ার্ড ১০নম্বরে ১৩ভোটে পিছিয়ে পড়ে তৃণমূল। ওই ঘটনায় নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় শহর সভানেত্রীকে। তাছাড়া পাঁশকুড়া শহরের তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তুঙ্গে। পাঁশকুড়া পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন নন্দ মিশ্র এবং ভাইস চেয়ারপার্সন জইদুল ইসলাম খানের সঙ্গে সুমনাদেবীর গোষ্ঠীর রেষারেষি বেড়েই চলেছে। শহরে দলের কর্মসূচিতে পরস্পরকে এড়িয়ে চলতেন। কর্মী ও সমর্থকরাও বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ছেন। সাম্প্রতিক বন্যায় পাঁশকুড়া পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়। সেই সময় সুমনাদেবী নিজের এলাকায় ছিলেন না। এনিয়েও পাঁশকুড়ায় বিস্তর চর্চা হয়।
শুক্রবার পাঁশকুড়া শহরে সুড়া মহামায়া বালিকা বিদ্যালয়ে শহর কমিটির উদ্যোগে বিজয়া সম্মিলনির প্রস্তুতি মিটিং ছিল। শহর কমিটির সহ সভাপতি জাহের আলির ডাকে ওই মিটিং ছিল। সেখানে ১১টি ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি উপস্থিত হন। বাকি সাতটি ওয়ার্ড থেকে সভাপতিরা আসেননি। সেই সভায় সুমনাদেবী ইস্তফা দেওয়ার বিষয়টি নিজে থেকেই ঘোষণা করেন। দলের মধ্যে রেষারেষি চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছে যাওয়ার কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অনেকেই মনে করছেন।
এনিয়ে সুমনাদেবী বলেন, লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরই আমি এই পদ ছাড়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। ২০২১সালে দলের কয়েকজন নেতৃত্ব ফিরোজা বিবিকে হারানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল। আমরা জানপ্রাণ দিয়ে লড়াই করে শহর থেকে সাড়ে ছ’হাজারের বেশি লিড দিই। লোকসভাতেও শহর থেকে দল লিড পায়। কিন্তু, আমার ওয়ার্ড থেকে দল পিছিয়ে পড়ে। তখন থেকেই আমার মনে হয়, আমার জায়গায় যোগ্য নেতৃত্বের আসা উচিত। পাঁশকুড়ায় অনেক বেশি দক্ষ নেতা আছেন। একজন মানুষ সবসময় এক জায়গায় থাকলে গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়। এটা আমার মনে হয়েছে। পরবর্তী ভোটে অন্য নেতৃত্বকে সুযোগ দিতে আমি ইস্তফা দিয়েছি। জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সুমনা মহাপাত্র শহর সভানেত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য সুব্রত বক্সিকে চিঠি দিয়েছেন। শুক্রবার ফোনে আমাকেও এনিয়ে বলেছেন। দল এবিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।
সৌমেনবাবু বলেন, লোকসভা ভোটে শহর থেকে লিড থাকলেও নিজের ওয়ার্ডে পিছিয়ে দল। তখনই সুমনা আমাকে বলেছিল পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চায়। দলকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে। ইতিমধ্যেই দলকে বিষয়টি জানিয়েছে। শুক্রবার একটি অনুষ্ঠানে সেকথা বলেছে।
No comments