চ্যাম্পিয়ন হলেন হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজো উৎসবমুখী জনসমাগমের নিরিখে!এবছরও চ্যাম্পিয়ন হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজো। উৎসবমুখী জনসমাগমের নিরিখে। দর্শনার্থীদের ভিড় বললে কম বলা হয়, জনসমুদ্রের উচ্ছ্বাসের পারদ চড়েছে প্রতিঘণ্টায়। গ্রা…
চ্যাম্পিয়ন হলেন হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজো উৎসবমুখী জনসমাগমের নিরিখে!
এবছরও চ্যাম্পিয়ন হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজো। উৎসবমুখী জনসমাগমের নিরিখে। দর্শনার্থীদের ভিড় বললে কম বলা হয়, জনসমুদ্রের উচ্ছ্বাসের পারদ চড়েছে প্রতিঘণ্টায়। গ্রাম শহর নির্বিশেষে উৎসব নিঙড়ে আনন্দে ভরপুর থেকেছেন এই পুজোকে ঘিরেই। এবার শহর হলদিয়া ও গ্রাম হলদিয়ায় থিমের মণ্ডপগুলি নজর কেড়েছে মানুষের। কোথাও কোটি টাকার গয়নায় সেজেছে প্রতিমা। কোথাও মণ্ডপে আলোর কারিকুরি তাক লাগিয়েছে দর্শনার্থীদের। মণ্ডপের থিমের অভিনবত্ব, নান্দনিক শিল্পকলা চমকে দিয়েছে মানুষকে। সেই পঞ্চাশ লাখি মণ্ডপও লহমায় পিছিয়ে পড়েছে হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজোর কাছে। ওই মণ্ডপ ও প্রতিমা নজর কেড়েছে, তাক লাগিয়েছে, কিন্তু হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজো যেন মন কেড়েছে দর্শনার্থীদের। তাঁদের হৃদয়ের পুজো হয়ে উঠেছে। তা না হলে, হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজো ঘিরে এত 'রিল' বানায় তরুণ প্রজন্ম। মাত্র ছ'বছরেই হলদিয়ার সেরা পুজোর তকমা পেয়েছে এই পুজো দর্শনার্থীদের কাছে। হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজো শুরুর পর মাত্র কয়েক বছরেই জৌলুসের দিক থেকে শারদোৎসবের সমস্ত নজর শুষে নিয়েছে নিজের দিকেই। এবছরের পুজো সব দিক থেকেই অন্য মাত্রায় পৌঁছেছে মানছেন উদ্যোক্তারাও। পুজোর বোধনেই শারদোৎসবের প্রাণপুরুষ লক্ষ্মণ শেঠ আর এক বৃহৎ উৎসবের সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন। ২০২৫ সালের শুরুতে প্রায় ১৯ বছর পর নতুন করে শুরু হতে চলেছে হলদিয়া উৎসব। হলদিয়ার রানিচক সংহতি ময়দানে। হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির উদ্বোধনী মঞ্চে তাঁর এই ঘোষাণার পরই বন্দর শহরে আলোড়ন পড়েছে। ২০২৪ সালের সুতাহাটায় হলদিয়া উৎসব কমিটির উদ্যোগে বইমেলা ও গণবিবাহের উৎসব আয়োজনে হলদিয়াবাসীর মধ্যে উৎসাহ তৈরি হয়েছে। এবার নতুন রূপে হলদিয়া উৎসবের অপেক্ষায় আমরা সবাই রয়েছি, পুজোর প্রেসমিটে সেই কথার প্রতিধ্বনি করেছেন পুজো কমিটির সভাপতি সুদীপ্তন শেঠ। তিনি বলেন, এবারের পুজো বড় আকারে যেমন হচ্ছে, মানুষের মধ্যে অনেক আশা তৈরি হয়েছে হলদিয়া উৎসব নিয়েও। লক্ষ্মণ শেঠের উত্তরসূরী হিসেবে সেই দায়িত্ব নিয়ে আমরা এগনোর চেষ্টা করছি। বাস্তবিকই, হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজো শুধু মণ্ডপ ও প্রতিমা নয়, পুজো ঘিরে একসঙ্গে একটি প্যাকেজ। নতুনগ্রামের কাঠপুতুলের আদলে তৈরি হাজার দুর্গার মুখ নিয়ে তৈরি মণ্ডপভাবনার সঙ্গে ছোটদের পার্ক, বাহারির আলোর সঙ্গে ডান্সিং ফোয়ারা, বিশাল ফুড কোর্ট, মেলা, সেইসঙ্গে পুজো বোনাস টলিউড-বলিউডের শিল্পীদের নাচ ও গান। এমন বিশাল মাঠ জুড়ে এমন পুজো হলদিয়া শহর কেন, জেলাতেও কোথাও নেই। মিমি চক্রবর্তী, সায়ন্তিকাদের দেখতে রাত জেগেছে মানুষ। ব্রজলালচকের টোটোচালক আনসার বলেন, এক একদিনে ১৯০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয়েছে। সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত দম নেওয়ার সময় পাইনি। বুকিংয়ের মাঝখানেও ট্রিপ করেছি। হলদিয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজোকে 'লক্ষ্মণবাবু' পুজো নামেই চেনে অর্চনা আড়ির মতো গ্রামের মহিলা পুরুষরা। সাইকেলে দুই ছেলেকে চাপিয়ে ১০ কিলোমিটার দূর থেকে ঠাকুর দেখতে এসেছিলেন অর্চনা। দশমীর রাতে তাঁর পুরনো হলদিয়া উৎসবের স্মৃতি উসকে মাতিয়ে দিলেন বম্বের অমিত কুমার। ফিরে গিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে লক্ষ্মণ শেঠের 'ম্যাজিক' নিয়ে প্রশংসা করে পোস্টও দিয়েছেন, যা মুহূর্তে ভাইরাল হয়েছে। এবারও নবমীর দিন নরনারায়ণ সেবায় পাত পড়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষের।
No comments