পূর্ব মেদিনীপুরের ১৭০ বাজিকরকে সবুজ বাজি তৈরির প্রশিক্ষণ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণে পূর্বমেদিনীপুর জেলার বাজি নির্মাতাদের নিয়ে শুরু হল সবুজ বাজি নির্মাণের প্রশিক্ষণ। জেলার এগরা, মহিষাদল, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, নন্দীগ্রাম, কাঁথি-সহ বিভিন্ন…
পূর্ব মেদিনীপুরের ১৭০ বাজিকরকে সবুজ বাজি তৈরির প্রশিক্ষণ রাজ্য
দূষণ নিয়ন্ত্রণে পূর্বমেদিনীপুর জেলার বাজি নির্মাতাদের নিয়ে শুরু হল সবুজ বাজি নির্মাণের প্রশিক্ষণ। জেলার এগরা, মহিষাদল, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, নন্দীগ্রাম, কাঁথি-সহ বিভিন্ন এলাকার ১৭০ জন বাজিকরকে নিয়ে কলকাতার শোভাবাজার সংলগ্ন সুতানুটি ভবনে শুরু হয়েছে সেই প্রশিক্ষণ। রাজ্য সরকারের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের উদ্যোগে এবং রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দপ্তরের তত্ত্বাবধানে সোমবার সেই প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। চলছে পাঁশকুড়ার রাতুলিয়ায় ছয় একর জায়গাজুড়ে বাজি ক্লাস্টার গড়ার তোড়জোড়।রাজ্যের বেশকিছু জায়গার পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরার খাদিকুল, কোলাঘাটের পয়াগ বাজি বিস্ফোরণ-কাণ্ড নিয়ে শোরগোল পড়েছিল। বাজি কারবারি-সহ বেশ কিছুজনের মৃত্যুও হয়েছিল বাজি বিস্ফোরণ-কাণ্ডে। ওই সমস্ত বিস্ফোরণের ঘটনায় রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে সরব হন রাজ্যের বিরোধী শিবির থেকে সাধারণ মানুষ। বারবার পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও ওঠে। সেই সমস্ত কথা মাথায় রেখে গ্রিন ফায়ারক্র্যাকার কিংবা সবুজ শব্দবাজি তৈরিতে তৎপর হয়েছে রাজ্য সরকার। সামনে পুজোর মরশুম। তাই পূর্ব মেদিনীপুরের ১৭০ জন বাজি নির্মাতাকে নিয়ে সেই কাজ শুরু হয়েছে। চকোলেট বোম, দোদমা, হাওয়াই, চরকির পাশাপাশি রং- বেরঙের বাজি তৈরির প্রশিক্ষণ চলবে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত। নাগপুরের ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট ৫ দিনের এই বাজি প্রশিক্ষণ দেবে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ১২৫ ডেসিবেলের মধ্যে থাকবে শব্দবাজির মাত্রা। এমন সবুজ বাজি তৈরির সুযোগ পেয়ে পাঁশকুড়ার সুশান্ত ঘোড়ই জানান, "সরকারি উদ্যোগে সবুজ বাজি তৈরির প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছি। এটা খুব দরকার ছিল। এটাই আমাদের একমাত্র জীবিকা।" মহিলাদলের চিংডুরমারি গ্রামের বাজি নির্মাতা সঞ্জয় মাইতি জানান, "সরকারি বিধি মেনে এবার বাজি নির্মাণ করতে পারব। এটা আমাদের কাছে খুব আনন্দের বিষয়। আর পুলিশের ধরপাকড়ের ভয় থাকবে না।" এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার গৌতম সাধুখাঁ বলেন, "সবুজ বাজি তৈরির উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের ভাবনা। সামনে পুজোর মরশুম। তাই আগাম সবুজ বাজি তৈরির প্রশিক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে। আগামিদিনে এই সমস্ত প্রশিক্ষিত ব্যক্তি সরকারি বিধি মেনে বাজি তৈরি করবেন। এমন সমস্ত বাজি মজুত করা, বিক্রি করা সবটাই বৈধ। সাধারণ মানুষ এদের কাছ থেকে সবুজ বাজি কিনতে পারেন। তাতে কোনও সমস্যা থাকবে না।" এই প্রশিক্ষণে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ১১৮০০ টাকা খরচ করা হচ্ছে সরকারের তরফে। মোট ২০ লাখ ৬ হাজার টাকা খরচ করে পাঁচদিনের এই সবুজ বাজি প্রশিক্ষণ বাজি নির্মাতাদের স্থায়ী জীবিকার রাস্তা খুলে দিল।
No comments