কেন্দ্রের 'বালা' প্রকল্প নিয়ে শিক্ষক মহলে অসন্তোষ
কেন্দ্রীয় 'বালা' প্রকল্পে স্বাধীনতা দিবসের আগে প্রাথমিক স্কুলগুলিকে ছবির মাধ্যমে সাজাতে নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র। কিন্তু এই প্রকল্পের অর্থ এখনও অমিল। ফলে নয়া …
কেন্দ্রের 'বালা' প্রকল্প নিয়ে শিক্ষক মহলে অসন্তোষ
কেন্দ্রীয় 'বালা' প্রকল্পে স্বাধীনতা দিবসের আগে প্রাথমিক স্কুলগুলিকে ছবির মাধ্যমে সাজাতে নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র। কিন্তু এই প্রকল্পের অর্থ এখনও অমিল। ফলে নয়া নির্দেশিকা পেয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় শিক্ষক মহলে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। শিক্ষকদের প্রশ্ন, টাকার দেখা নাই। অথচ দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণের নির্দেশিকা কেন এসেছে? কেনই বা কিছু স্কুল এই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
'বালা' প্রকল্পে স্কুলের শ্রেণিকক্ষ, মাথার উপর ছাদ, জানলা, দরজা, সিঁড়ি থেকে চৌকাঠ সব জায়গায় শিক্ষা নির্ভর ছড়া, ছবি, মানচিত্র আঁকা হবে। কোথাও পরিবেশ সংক্রান্ত চিত্র তো কোথাও আবার সুস্বাস্থ্যের স্লোগান। আবার কোথাও সাধারণ জ্ঞান নির্ভর বিভিন্ন তথ্য ডুলে ধরা হচ্ছে দেওয়াল চিত্রের মাধ্যমে। স্কুলের পরিবেশকে সুন্দর করে "তুলতে সমগ্র শিক্ষা মিশনের নির্দেশিকা অন্য বছরের মতো এ বছরও জারি হয়েছে। ১০০ ছাত্র, ছাত্রী রয়েছে তেমন প্রাথমিক স্কুলগুলি এই সুযোগ পাবে।
সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফ থেকে সেজন্য ৩০০০ টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে। উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলির জন্য খরচ হবে ৫,০০০ টাকা ও হাই স্কুলগুলির জন্য বরাদ্দ হচ্ছে ৭ হাজার টাকা। ১৫ আগস্টের আগে ১৩ এবং ১৪ আগস্টের মধ্যে স্কুলে এই চিত্রাঙ্কনের কাজ শেষ করতে হবে। গত ৭ আগস্ট নির্দেশিকা জারির পরই শুরু হয়েছে শিক্ষক, শিক্ষিকা মহলে গুঞ্জন। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সুব্রত পণ্ডা জানান, "স্কুলগুলি নিজের খরচে চিত্রাঙ্কনের কাজ করবে। অথচ টাকার দেখা নেই। গত বছর টাকা দেওয়া হয়নি। এবছর টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। টাকা কবে আসবে তা কে জানে। কেনই বা ১০০ পড়ুয়া সংখ্যার স্কুলগুলি এই সুযোগ পাবে। যে সব স্কুলে একশো পড়ুয়া নেই তাঁরা এই আনন্দের শরিক হতে পারবে না। এই প্রকল্প থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা কি হচ্ছে। কাজেই 'বালা' প্রকল্পে এমন বৈষম্য দূর হোক।" ওয়েস্ট বেঙ্গল তৃণমূল প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক রঞ্জিত দাস "সমগ্র শিক্ষা মিশন কথার বলছেন, মধ্যে সামগ্রিক ভাবনা জড়িয়ে থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। শুধুমাত্র ১০০ ছাত্র-ছাত্রী বিশিষ্ট প্রাথমিক স্কুলগুলিতে এই সুযোগ দেওয়া হবে। তার চেয়ে কম ছাত্র ছাত্রীর ভুলগুলি বঞ্চিত হবে কেন। সমগ্র শিক্ষা মিশনের এমন বৈষম্যমূলক ভাবনার পরিবর্তন করা জরুরি।" বিষয়টি যেহেতু সমগ্র শিক্ষা মিশনের তাই এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে পারছেন না পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) সরকার। তবে এনিয়ে মাধ্যমিক কোনও ক্ষোভ, বিক্ষোভ। পঙ্কজ স্তরে জেলা মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক শুভাশিস মিত্র বললেন, "ছবি আঁকার মাধ্যমে স্কুলগুলির পরিবেশ সুন্দর রাখতে বলা হয়েছে এই প্রকল্পে। ইতিমধ্যে বেশকিছু স্কুল সেই বার্তা পেয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন সেই কাজ শেষ করে ফেলবে ভুলগুলি।" জেলায় ৯৬৯টি মাধ্যমিক স্কুল 'বালা' প্রকল্পের কাজে এগিয়ে থাকলেও ৩ হাজার ২৬৪টি প্রাথমিক স্কুলকে নিয়ে জোর বিতর্ক চলছে। কেন এত সংখ্যক স্কুল এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, "সমগ্র শিক্ষা মিশন তাঁদের একটা নির্দিষ্ট মাপকাঠি ধরে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু বলার থাকে না। তবে ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটা একটা সুস্থ প্রতিযোগিতাও বলা যেতে পারে।
No comments