তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলারের মদতে তাঁর ঘনিষ্ঠরা জমি জবর দখল করেছে বলে অভিযোগতমলুক শহরে তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলারের মদতে তাঁর ঘনিষ্ঠরা জমি জবর দখল করেছে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করায় এক ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয়েছে। খুনেরও হুমকি দেওয়া হয়…
তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলারের মদতে তাঁর ঘনিষ্ঠরা জমি জবর দখল করেছে বলে অভিযোগ
তমলুক শহরে তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলারের মদতে তাঁর ঘনিষ্ঠরা জমি জবর দখল করেছে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করায় এক ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয়েছে। খুনেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। ১৫ দিন অভিযোগপত্র থানায় ফেলে রাখার পর অবশেষে কাউন্সিলার ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে এফআইআর করল পুলিস। গোটা ঘটনায় তমলুক শহরজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত ওই তৃণমূল নেতার নাম বিমল ভৌমিক। তিনি তমলুক পুরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলার। পাশাপাশি দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি।
তমলুক শহরের ৪নম্বর ওয়ার্ডে বাড়পদুমবসান মৌজায় ব্যবসায়ী অপরূপ দে-র পরিবারের ৪৩ শতক জমি আছে। সেই জমির উপর নির্মিত বিল্ডিংয়ে একসময় পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদ অফিস চলত। এখন সেই বিল্ডিংয়ের মধ্যে পিএইচই দপ্তরের নন্দীগ্রাম প্রজেক্টের(পিআইইউ) সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারের অফিস। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক থেকে ওই বিল্ডিংয়ে ঢোকার জন্য ২০ফুট রায়ত জায়গা আছে। কিন্তু, সেই জায়গা দখল করে নিচ্ছেন পূর্তদপ্তরের জায়গা জবরদখল করে বসে থাকা কয়েকজন দোকানদার। তাঁরা ওই ২০ফুট চওড়া রাস্তার অনেকটা দখল করে নেওয়ায় অপরূপবাবুদের পরিবার থেকে আপত্তি আসে। কিন্তু, কাউন্সিলারের নাম ভাঙিয়ে জবরদস্তি চলে। শেখ মুক্তার, মধুসূদন জানা, গৌতম নায়েক ও মইদুল খান প্রমুখ কাউন্সিলারের ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে জোর করে ওই জায়গা ঘিরে ফেলে বলে অভিযোগ।
গত ২৪জুলাই জমি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় অপরূপ দে-র পরিবার। তাঁর বাবা ও দুই কাকা ওই সম্পত্তির মালিক। ওইদিন দু’পক্ষের মধ্যে এনিয়ে ঝামেলার পর থানায় জেনারেল ডায়েরি করে দে পরিবার। তারপর ২৬তারিখ ফের ২০ফুট চওড়া ওই রাস্তার অনেকটা অংশ ঘিরে ফেলা হয়। বাধা দিতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হন অপরূপবাবু ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এরপর থানায় অভিযোগ জানাতে যান অপরূপবাবুর বাবা অমিতকুমার দে। সেখানে পুলিস তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে অমিতবাবুর অভিযোগ। পুলিস তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলারের পক্ষ নিয়ে তাঁকে লকআপে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ।
তমলুক থানায় ১৫দিন অভিযোগ পড়ে থাকার পর অবশেষে ১৩আগস্ট এফআইআর লিপিবদ্ধ করা হয়। তৃণমূল কাউন্সিলার বিমল ভৌমিক, তাঁর শাগরেদ শেষ মুক্তার, মধুসূদন জানা, গৌতম নায়েক ও মইদুল খানদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। গোটা ঘটনায় তমলুক শহরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের ধারে পূর্তদপ্তরের জায়গায় কাউন্সিলার ঘনিষ্ঠদের দোকান গজিয়ে উঠেছে। রাজ্য সরকার সরকারি জায়গা থেকে জবর দখল উচ্ছেদ করার নির্দেশ দিলেও কাউন্সিলার ঘনিষ্ঠদের উপর কোনওরকম আঁচ পড়েনি। বরং তারা অন্যের রায়ত জমির উপর জুলুমবাজি করছে।
অভিযুক্ত কাউন্সিলার বিমলবাবু বলেন, পূর্তদপ্তরের জায়গার উপর কয়েকজনের দোকান আছে। তাদের প্রতি আমার কোনওরকম পক্ষপাতিত্ব নেই। কয়েকদিন আগে তাদের দোকানের সামনে বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। তানিয়ে ঝামেলা বাধে। আমি পূর্তদপ্তরকে ফোন করে বিষয়টি জানাই। এই ঘটনায় আমার কোনও ভূমিকা নেই। থানায় এফআইআর হয়েছে বলেও জানা ছিল না।
অভিযোগকারী অপরূপবাবু বলেন, কাউন্সিলারের মদতে তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা সরকারি জায়গা দখল করে দোকান করেছে। এবার তাদের লক্ষ্য আমাদের রায়ত জায়গা। সেই জায়গার উপর বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দিয়েছে। প্রতিবাদ করায় মারধর করেছে। থানাকে ম্যানেজ করায় পুলিসও কাউন্সিলারের পক্ষ নেয়। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।
তমলুক থানার আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ বলেন, ওই ঘটনায় এফআইআর হয়েছে। কাউকে কোনওরকম হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানা নেই।
No comments