নগ্ন করে প্যারেড ? ভুলুন্ঠিত নারী সম্মান, উত্তাল নন্দীগ্রাম!
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে সরব গোটা রাজ্য। ‘মেয়েরা, রাত দখল করো’ ডাকে সাড়া দিয়ে গভীর রাতে পথে নেমেছিলেন বাংলার মহিলারা। আর এই পর্বেই এক গৃ…
নগ্ন করে প্যারেড ? ভুলুন্ঠিত নারী সম্মান, উত্তাল নন্দীগ্রাম!
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে সরব গোটা রাজ্য। ‘মেয়েরা, রাত দখল করো’ ডাকে সাড়া দিয়ে গভীর রাতে পথে নেমেছিলেন বাংলার মহিলারা। আর এই পর্বেই এক গৃহবধূর দু’দফায় ‘সম্ভ্রম লুণ্ঠনের’ সাক্ষী হয়ে রইল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম। ঘটনায় অভিযোগের তির বিজেপির মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার, স্বাধীনতা দিবসের সকালে প্রথমে বেধড়ক মারধর করা হয় নন্দীগ্রামের গোকুলনগর গ্রামের ওই বধূকে। তারপর টেনেহিঁচড়ে তাঁকে নামানো হয় রাস্তায়। আর পরদিন ঘটে আরও এক ন্যক্কারজনক ঘটনা। ওই বধূকে নগ্ন করে গোটা গ্রামে প্যারেড করানো হয়। জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে বিজেপির এমন কয়েকজনও রয়েছে, যারা আর জি কর ইস্যুতে ব্যাপক ‘তৎপর’। গোটা ঘটনায় তুমুল আলোড়ন রাজ্যজুড়ে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ, রবিবার গোকুলনগর যাচ্ছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল। কুণাল ঘোষের নেতৃত্বে সেই দলে থাকবেন বীরবাহা হাঁসদা, মমতা ঠাকুর, উত্তরা সিং এবং দোলা সেন।
বৃহস্পতিবার মায়ের লাঞ্ছনার ভিডিও মোবাইলে বন্দি করেছিল ১৩ বছরের কিশোরী কন্যা। সেই সূত্র ধরে তাপস দাস নামে বিজেপির এক স্থানীয় মাতব্বরকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। এরপর শুরু হয় নতুন এক পর্ব। চেন্নাইয়ে কর্মরত মহিলার স্বামীকে ফোন করে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয় গেরুয়া পার্টির মাতব্বররা। সঙ্গে চাপা হুমকি, অন্যথায় পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে। ভদ্রলোক অবশ্য সেই চাপে মাথা নত করেননি। সেই আক্রোশে ফের শুক্রবার পদ্মপার্টির লোকজনের ‘নিশানা’য় আসেন মহিলা। তবে এবার রাতে। বাড়ির বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে হামলা চলে। ফের ওই গৃহবধূকে লাঠি আর বাঁশ দিয়ে গোরু-ছাগলের মতো পেটানো হয়। তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ। এখানেই নিরস্ত হয়নি ‘বীরপুঙ্গব’রা। চুলের মুঠি ধরে ঘরের বাইরে এনে ‘নগ্ন’ করা হয় মহিলাকে। মায়ের সঙ্গে হেনস্তার শিকার হয় কিশোরী কন্যাও। বিবস্ত্র অবস্থায় ৩০০ মিটার হাঁটানো হয় গৃহবধূকে। স্থানীয় কয়েকজন ‘সহৃদয়ে’র সাহায্যে গুরুতর জখম মহিলা ও তাঁর কন্যাকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার চেন্নাই থেকে বাড়ি ফিরে আসেন নিগৃহীতা মহিলার স্বামী। তাঁর কথায়, ‘পড়শিরা সবাই বিজেপির সমর্থক, আমরা তৃণমূলের। নিকাশি নিয়ে সামান্য বচসা হয়েছিল মহিলাদের মধ্যে। সেটাকেই হাতিয়ার করে বিজেপির লোকজন স্ত্রীর আর মেয়ের সম্ভ্রম আর সম্মানহানি করল। এরাও তো বাংলারই মেয়ে!’
ঘটনায় সাত বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে নন্দীগ্রাম থানায়। তাদের মধ্যে শম্ভু দাস নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শনিবার। বাকিরা পলাতক। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের বিজেপি আহ্বায়ক অভিজিৎ মাইতির দাবি, পারিবারিক বিবাদের জেরে এই ঘটনা। তাতে রাজনীতি জড়াচ্ছে তৃণমূল।
No comments