পরীক্ষার গার্ডে ইউনিয়নের দাদাগিরি! ধুন্ধুমার মহিষাদল
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা। আর সেই পরীক্ষায় নাকি গার্ড দিচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিয়নের দাদারা। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল রাজ কলেজ…
পরীক্ষার গার্ডে ইউনিয়নের দাদাগিরি! ধুন্ধুমার মহিষাদল
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা। আর সেই পরীক্ষায় নাকি গার্ড দিচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিয়নের দাদারা। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল রাজ কলেজে। হলদিয়া ল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার সিট পড়েছে মহিষাদল রাজ কলেজে। আর সেখানেই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার গার্ড দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত ছাত্র ইউনিয়ন সদস্যরা। পরীক্ষার্থীদের পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা দাবি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। আর এই সমস্ত অভিযোগকে কেন্দ্র করে কার্যত ধুন্ধুমার পরিস্থিতি সৃষ্টি হল মহিষাদল রাজ কলেজে। পরীক্ষার্থী এবং ইউনিয়ন সদস্যদের মধ্যে তুমুল হাতাহাতি বেঁধে যায় এদিন। গুরুতরভাবে আহত হন বেশ কয়েকজন। ক্ষিপ্ত পরীক্ষার্থীরা প্রিন্সিপালের ঘরের সামনেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। প্রিন্সিপালের দরজাও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। এদিকে মহিষাদল থানার ওসি নাড়ুগোপাল বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলেও পুলিশকে ঘিরে চলে ব্যাপক বিক্ষোভ। পরীক্ষার্থীদের মূলত অভিযোগ, পরীক্ষার হলে গার্ড দিচ্ছিল ইউনিয়নের দাদারা। সেখানে পরীক্ষার্থীদের বারবার হুমকি দেয় তারা। পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য কাউকে প্রতি সেমিষ্টারে এক লক্ষ আবার কাউকে ৯ লক্ষ টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়নের বিরুদ্ধে। এদিকে মহিলা পরীক্ষার্থীদের সাথেও দুর্ব্যবহার করে ইউনিয়নের সদস্যরা। পরীক্ষার মাঝে তারা বাথরুমে গেলে সেখানে গিয়ে তাদের চেকিং করা হয় বলে অভিযোগ। এই সমস্ত বিষয়ের প্রতিবাদ করলে পরীক্ষার্থীদেরকে ইউনিয়ন রুম থেকে উইকেট, ব্যাট দিয়ে মারধর পর্যন্ত করা হয়। আর এসবের প্রতিবাদেই ল কলেজের পরীক্ষার্থীরা সেকেন্ড হাফের পরীক্ষা বয়কট করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঐতিহ্যবাহী মহিষাদল রাজ কলেজের ঐতিহ্য ও গরিমা ক্রমে ক্রমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ইউনিয়নের দৌরাত্ম্যে। কয়েকদিন আগেই কলেজে ইউনিয়ন রুমের বিরুদ্ধে এক ছাত্রনেতার আইবুড়ো ভাত অনুষ্ঠান করার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনাতেও নিন্দার ঝড় উঠেছিল এলাকায়। এরপর ফের পরীক্ষায় অব্যবস্থা।
হলদিয়া ল কলেজের এক পরীক্ষার্থী অনন্যা ঘোষ জানান, “বাথরুমে নিয়ে গিয়ে আমাদের প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে চেকিং করা হচ্ছে। আমরা কিছু বলতে গেলেই মারধর করছে ইউনিয়নের ছেলেরা। ইউনিয়নের ছেলেরা আমাদের পরীক্ষার জন্য ৯ লাখ টাকা করে চেয়েছে। এরই প্রতিবাদে আমরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছি।”
এদিকে গন্ডগোলের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান হলদিয়া ল কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ সমিত মাইতি। ঘটনায় তিনিও আক্রান্ত হন। ডঃ সমিত মাইতি জানান, “আমাদের কলেজের পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে মহিষাদল রাজ কলেজের ইউনিয়নের সদস্যদের মধ্যে গন্ডগোল বাঁধে। যার জেরে হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। আমি রাজ কলেজের প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলে দেখছি যাতে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া যায়।”
এদিকে মুখে কুলুপ এঁটেছেন মহিষাদল রাজ কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ গৌতম মাইতি। তিনি জানান, “টাকা চাওয়া হয়েছে এমন খবর আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব। এটা খুবই নিন্দনীয়। মহিষাদল রাজ কলেজে আগে এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি আশা করি ঘটবেও না।”
No comments