টাকা না মিটিয়ে বিডিওর 'হুমকি'প্রশাসনিক অফিসের আধিকারিকদের নির্দেশে গত সেপ্টেম্বরে থেকে তাঁদের খাবার সরবরাহ করেছিল একটি ছোট চা খাবারের দোকান। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা খাবার দিলেও মহিষাদল ব্লক অফিস এখনও এক টাকাও মেট…
টাকা না মিটিয়ে বিডিওর 'হুমকি'
প্রশাসনিক অফিসের আধিকারিকদের নির্দেশে গত সেপ্টেম্বরে থেকে তাঁদের খাবার সরবরাহ করেছিল একটি ছোট চা খাবারের দোকান। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা খাবার দিলেও মহিষাদল ব্লক অফিস এখনও এক টাকাও মেটায়নি বলে অভিযোগ।
শুধু ১০ হাজার ৬০০ টাকার বিল বাকি রাখা এবং দোকানদারকে দিনের পর দিন ঘোরানোই নয়, টাকা চাওয়ার 'অপরাধে'র উপযুক্ত 'শিক্ষা' দিতে বিডিও বরুণাশিস সরকার ওই দোকানের জমির দলিল, ট্রেড লাইসেন্স চেয়ে পাঠিয়েছেন এবং ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। দোকানদার এ নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলি দাসকে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু শিউলি দাস অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।এ ধরনের ঘটনাকে সম্পূর্ণ অমানবিক বলে দাবি করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির জেলা (তমলুক)সহ-সভাপতি আনন্দময় অধিকারী বলছেন, "চা, কফি, খাবার খাওয়ার সময় রাজ্য সরকারের আমলাদের মনে হয় না দোকান আইনি ভাবে তৈরি হয়েছে কি না। যেই টাকা দেওয়ার সময় আসে তখন বৈধ-অবৈধর প্রশ্ন ওঁদের মাথায় আসে। আধিকারিকেরা তখন দোকানদারের দলিল দেখতে চান।" স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেছেন, "এ ধরনের ঘটনা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।"
কী যুক্তি দিচ্ছেন বিডিও বরুণাশিস সরকার? প্রথমে তাঁর বক্তব্য, "আমি গত অক্টোবরে এই অফিসে আসি। তারপর ওই দোকানের বিল সম্পর্কে জানতে পারি। খোঁজ নিয়ে দেখি যে, ওরা সরকারি ওয়ার্ক অর্ডার ছাড়াই অফিসে খাবার সরবরাহ করছিল। ওরা সব খাবারের অতিরিক্ত দাম নিয়েছে। দাম কমাতে বলায় ওরা রাজি হয়নি, তাই এখনও বিল মেটানো যায়নি।"
তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার কথা তো বিডিও-র। তা হলে তিনি সেটা দেননি কেন? কেনই বা কিনা ওয়ার্ক অর্ডারে সরকারি অফিসে এই খাবার নেওয়া হল? আগে থেকে কেন খাবারের রেট
জেনে ওয়ার্ক অর্ডার হল না? বিডিও'র জবাব, "দোখ তা হলে দুই পক্ষের। বিল তা হলে কবে, কী ভাবে মেটানোহবে, সেই উত্তর তিনি দিতে পারেননি।। বিল মেটানো নিয়ে টানাপড়েনে দোকানের বৈধতা নিয়ে বিডিও প্রশ্ন তোলাটা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে। একাধিক মহল। বিডিও দোকান তোলার হুমকি দিচ্ছেন। অভিযোগকারীদের দাবি, টাকা মেটানোর কথাতেই তাঁর এই পদক্ষেপ। এ প্রসঙ্গে বরুণাশিস বলেন, "একেবারেই নয়। মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ দখলদারদের সরানোর কথা বলেছেন। সেই কাজ করার জন্য ওই দোকানের কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে।" তাঁর হুঁশিয়ারি, ওই দোকানদারের কাগজপত্র কিছু নেই। তা সত্ত্বেও অনেক সরকারি অফিসের ভেতরে এসে ব্যবসা চালাচ্ছেন। চাইলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারি।'
হিজলি টাইডাল ক্যানেলের জমিতে দোকানটি তৈরি হয়েছে। এখন সেই দোকান বাঁচাতে আর প্রশাসনের থেকে বকেয়া টাকা আদায়ে দিশেহারার মতো সকলের কাছে ছুটছেন অসুস্থ দোকানি নন্দলাল মাইতি ও তাঁর মেয়ে অর্চনা মাইতি।
No comments