ডাক্তারির উচ্চশিক্ষায় ভর্তির প্রায় সমস্ত পরীক্ষার পদ্ধতি পাল্টে ফেলল কেন্দ্রীয় সরকারনিরাপত্তার দোহাই দিয়ে ডাক্তারির উচ্চশিক্ষায় ভর্তির প্রায় সমস্ত পরীক্ষার পদ্ধতি পাল্টে ফেলল কেন্দ্রীয় সরকার। নয়া পদ্ধতিতে পরীক্ষার মোট প্রশ…
ডাক্তারির উচ্চশিক্ষায় ভর্তির প্রায় সমস্ত পরীক্ষার পদ্ধতি পাল্টে ফেলল কেন্দ্রীয় সরকার
নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে ডাক্তারির উচ্চশিক্ষায় ভর্তির প্রায় সমস্ত পরীক্ষার পদ্ধতি পাল্টে ফেলল কেন্দ্রীয় সরকার। নয়া পদ্ধতিতে পরীক্ষার মোট প্রশ্ন ও সময়কে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এক-একটি ভাগের প্রশ্নের উত্তর লেখা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারলে তবেই পরবর্তী ধাপে যাওয়া যাবে। উত্তর লেখার পর আর তা পরিবর্তন করার কোনও সুযোগও থাকছে না। জাতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল বোর্ড অফ এগজামিনেশনস ইন মেডিক্যাল সায়েন্সেস এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপরই দেশজুড়ে চিকিৎসক ও ছাত্রছাত্রী মহলে হইচই পড়ে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ এমডি, এমএস পাঠ্যক্রমে ভর্তির জন্য অপেক্ষারত বহু পরীক্ষার্থী।
এসব পাঠ্যক্রম ভর্তির পরীক্ষার নাম নিট পিজি। আগামী ২৩ শে জুন হতে চলেছে এবারের নিট পিজি। পরীক্ষায় বসবেন কয়েক লক্ষ ছাত্রছাত্রী। তার মাত্র কয়েকমাস আগে পরীক্ষাপদ্ধতি পাল্টে দেওয়ার সিদ্ধান্তে চটে লাল বহু তরুণ চিকিৎসক। ডাক্তারদের অন্যতম সর্বভারতীয় সংগঠন ইউনাইটেড ডক্টর্স ফ্রন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ লক্ষ্য মিত্তল বলেন, ‘ছয় সপ্তাহও বাকি নেই। অথচ পরীক্ষা পদ্ধতি পাল্টে গেল। এসব কী হচ্ছে! নিরাপত্তার দোহাই দেওয়া হচ্ছে। কীসের নিরাপত্তা আমরা বুঝতে পারছি না। তাছাড়া নিয়ামক সংস্থা তো নিরাপত্তায় বিশেষজ্ঞ নয়। যাই হোক, তাও যখন করা হয়েছে, আমরা মানতে রাজি। সামনের বছর হোক। এ বছর যেন আগের পরীক্ষা পদ্ধতিতেই পরীক্ষা নেওয়া হয়।’
নয়া নিয়ম কার্যকর হবে ডাক্তারি এবং ফার্মাসি মিলিয়ে মোট ন’টি পরীক্ষায়। নিট পিজি ছাড়া বাকি পরীক্ষাগুলি হল নিট এমডিএস, নিট এসএস, ডি এনবি-পিডিসিইটি, এফএম জিই, এফইটি, এফডিএসটি, জি পিএট এবং ডিপিইই। দন্ত চিকিৎসক, বিদেশ থেকে পাশ করা মডার্ন মেডিসিন এবং দাঁতের ডাক্তাররা ছাড়াও ফার্মাসির স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষা রয়েছে এই তালিকায়।
কী ধরনের পরিবর্তন করা হয়েছে পদ্ধতিতে? যেমন, নিট পিজিতে মোট ২০০টি প্রশ্ন থাকে। নম্বর থাকে ৮০০। সময় সাড়ে তিন ঘণ্টা। ন্যাশনাল বোর্ড এই ২০০টি প্রশ্নকে ৫ ভাগে ভাগ করেছে (এ, বি, সি, ডি এবং ই)। প্রতিটি সেকশনের জন্য বরাদ্দ থাকছে চল্লিশটি প্রশ্ন। মোট সময়কেও ভাগ করা হয়েছে পাঁচ ভাগে। প্রতিটি বিভাগের জন্য ৪২ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, পরীক্ষার্থীরা একটি বিভাগের উত্তর লেখা শেষ করতে পারলে তবেই দ্বিতীয় বিভাগের উত্তর দেওয়া শুরু করতে পারবে। শেষ করতে হবে ওই ৪২ মিনিটের মধ্যেই।
প্রতিটি সেকশনের উত্তর লেখার পর রিভিউ বা পরিবর্তন করার ইচ্ছা থাকলে তা করতে হবে ৪২ মিনিটের মধ্যেই। তবে এবারও পরীক্ষা নেওয়া হবে অনলাইনে এবং এমসিকিউ পদ্ধতিতে। কিন্তু এসব পরিবর্তনের কারণ বুঝতে পারছেন না দিনরাত এক করে প্রস্তুতিতে যুক্ত পরীক্ষার্থীরা। নিট পিজিতে বসতে চলেছেন বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজের এক তরুণ চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘এসবের সঙ্গে ডাক্তারির কী সম্পর্ক? আর নিতান্তই যদি তা করতে হয়, পরের বছর থেকে হোক। আমরা তো চলতি পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিতে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিলাম।’
No comments