অস্তিত্বের সংকটে ভুগছেন হলদিয়ার নেতারা?আসন্ন অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন দুয়ারে আগামী কাল ২৩ শেমে বৃহস্পতিবার প্রচারের শেষ। ২৫শে মে ষষ্ঠ দফায় নির্বাচনে ভোট দেবেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক কাঁথি সহ অন্যান্য লোকসভা কেন্দ্রের ভোটা…
অস্তিত্বের সংকটে ভুগছেন হলদিয়ার নেতারা?
আসন্ন অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন দুয়ারে আগামী কাল ২৩ শেমে বৃহস্পতিবার প্রচারের শেষ। ২৫শে মে ষষ্ঠ দফায় নির্বাচনে ভোট দেবেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক কাঁথি সহ অন্যান্য লোকসভা কেন্দ্রের ভোটারগন।
দীর্ঘ দুমাস ধরে চলছে নির্বাচনী প্রচার প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের প্রচারে জনসমুদ্র বয়ে যাচ্ছে ভোটাররা কাকে ভোট দেবেন এখনো কি সিদ্ধান্ত করতে পেরেছেন? না আবেগের বসে এখনো রাজনৈতিক দলের মিছিলে পা দিচ্ছেন? এবারের নির্বাচন সম্পূর্ণ আলাদা চিত্র মানুষের সামনে উঠে আসছে কে কাকে ভোট দেবে এ নিয়ে কি এখনো ভোটাররা কি দ্বন্দ্বে রয়েছেন? স্বাধীনতা আন্দোলনের পরবর্তী সময় থেকে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচিত হয়েছেন এলাকার ভূমি পুত্ররা পরবর্তীকালে এখন দেখা যাচ্ছে তমলুক লোকসভা এলাকার বাইরে মানুষজন প্রার্থী হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। যে তমলুক বা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাধীনতা আন্দোলনের মুখ সতীশ সামন্ত প্রথম সাংসদ হয়েছিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনের মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন অবিভক্ত মেদিনীপুর। সেই তমলুক লোকসভা অস্তিত্ব ধরে রাখতে শাসকবিরোধী দলের প্রার্থী বহিরাগত? তমলুক লোকসভা এলাকায় তাহলে কি যোগ্যতম প্রার্থী নেই? সে নিয়েও এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে চলছে গুঞ্জন। সকলেই রাজনৈতিক দলের চাপে মুখে চাবি দিয়েছে। কিন্তু ভোটটা দেওয়ার সময় কি ভাববেন। সকলেই তো বহিরাগত তাহলে উন্নয়ন শিল্পায়ন সামাজিক সুরক্ষা সবকিছু বিচার করে তারপরে নাগরিকত্ব প্রোয়োগ করবে?
তমলুকে ছিল তাম্রলিপ্ত বন্দর এখন ইতিহাস। হলদিয়া বন্দরকে ঘিরে গড়ে উঠেছে শিল্পায়ন কিন্তু সেই শিল্পায়ন এখন কি হোঁচট খেয়ে পড়ছে ভিনদেশে পাড়ি দিচ্ছে বহু পরিযায়ী শ্রমিক তার রেজিস্টার কি যথাযথ হচ্ছে? তাহলে জানা যাবে রাজ্য তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কত মানুষ পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বাইরে চলে যাচ্ছেন। যদিও জানা যায় কেন্দ্র সরকারের একটি আইন রয়েছে যারা ভিন দেশে পরিযায়ী হিসেবে যাবেন তাদের রেজিস্টার মেন্টেন করা কিন্তু কি বাস্তবে সেটা রূপায়িত হচ্ছে। যদিও বর্তমান রাজ্য সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের রেজিস্ট্রেশন করার উদ্যোগ নিয়েছেন দুয়ারে সরকারের পরিষেবার মধ্য দিয়ে।
ভারতবর্ষ সুজলাং সুফলাং মলয় তো শীতলাং সেই ভারতবর্ষের মানুষ এখন ভিন দেশে শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রের জন্য পাড়ি দিচ্ছেন। যেই বন্দরকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল হলদিয়ার ভবিষ্যৎ শিল্পায়নের রুপরেখা হলদিয়া বন্দর বা পোর্ট সেই বন্দরকে কি ভারত সরকার আলাদাভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন? সমীক্ষায় জানা যায় ভারতবর্ষের অন্যান্য বন্দরের থেকে আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে এখন হলদিয়া বন্দর প্রথম স্থান অধিকার করেছে। হলদিয়া বন্দরের অনুসারী শিল্প হিসেবে গড়ে উঠেছে অনেকগুলি কলকারখানা বন্ধ। তাহলে কি করে গড়ে উঠবে শিল্পায়ন কর্মক্ষেত্র শিক্ষা, সংস্কৃতি মানুষের উন্নয়ন। সেই বন্দরকে কি আলাদা ভাবে ভারত সরকার গুরুত্ব দিচ্ছেন না গুরুত্বহীন অবস্থায় দেখছেন? সেটাই এখন দেখার বিষয়।
যদিও হলদিয়া বন্দরের আরেকটি দ্বিতীয় বন্দর শালুকখালীতে তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল বন্দর সূত্রে জানা যায় তার ছাড়পত্র পেয়েছে কাজ ও শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আরেকটি বন্দর তাজপুরে তৈরি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজনীতির ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে হলদিয়া বন্দর আরো গুরুত্ব দিয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার বন্দরের পরিকাঠামো উন্নতি করার লক্ষ্যে যদি এগিয়ে যায় তবেই হলদিয়া বন্দর তার নিজ মহিমায় আরও বিস্তারিত করতে পারবে। হলদিয়া রিফাইনারি, এক্সাইড, হলদিয়া পেট্রো কেমিক্যাল তাদের প্লান্ট আরো বাড়িয়ে চলেছে । কিন্তু নতুন কারখানা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কোথাও কি সমস্যা তৈরি হচ্ছে? রাজনীতি ভুলে গিয়ে সমাজের উন্নয়ন নতুন প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করা তার জন্য শিক্ষা সংস্কৃতি শিল্পায়ন অবশ্যই দরকার সেদিকে কি কেউ গুরুত্ব দিচ্ছেন। নির্বাচন আসবে নির্বাচন যাবে কিন্তু উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে গেলে এখানকার শিল্পায়ন অন্য জায়গায় চলে গেলে সেই শিল্পায়ন কি ফিরে আসবে? হলদিয়াতে হলদিয়ায় রিফাইনারি আর একটি ক্যালস রিফাইনারি গড়ে তোলার জন্য মাতঙ্গিনী মোড়ের কাছে এই জায়গা অধিগ্রহণ করে তার বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ শেষ হয়েছিল শুধু ছিল সময়ের অপেক্ষা। সেই ক্যাল্স কেমিক্যাল চলে গেল অন্যত্র সেখানে তৈরি হয়েছে পুতুল কারখানা। হলদিয়া বন্দর কেন্দ্রিক বলেই কুকড়াহাটিতে গড়ে উঠবে জাহাজ মেরামতি কারখানা ।তার ভিত্তি প্রস্তর হয়ে গিয়েছিল সে ও এখন অথৈ জলে। সেখানে তৈরি হচ্ছে আবাসন। হলদিয়া ভবানীপুর থানা অন্তর্গত তৈরি হয়েছিল উড়াল ইন্ডিয়া। সেই কারখানা বন্ধ সেই জায়গার উপরে যে কারখানাটি ছিল সেও বিধ্বস্ত ।এলাকার মানুষ যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল জায়গা দিয়ে সে জায়গাটি এখন পড়ে রয়েছে অনাথ হয়ে। চকদ্বীপা মৌজাতে বৃহৎ জায়গা অধিগ্রহণ হয়েছিল তৈরি হবে বড় বৃহৎ শিল্প কারখানা সেই মৌজা দীর্ঘ কয়েক বৎসর পড়ে রয়েছে না হচ্ছে চাষ না হচ্ছে শিল্পায়ন। শুধু জায়গা অধিগ্রহণ করাই কি সরকারের আসল উদ্দেশ্য না সেই জায়গাতে নতুন করে শিল্প স্থাপন করা এলাকার উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অভিভাবকের মতো কাজ করা হবে সরকারের।
না শুধু নির্বাচন এলেই ভোটারদের কাছে কি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে সেটাই তুলে ধরা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি দিন দিন বেড়েই চলছে। সেদিকে শাসক বিরোধী দলের কোন ভূক্ষেপ নেই।বিধানসভা এলাকার মধ্যে শিল্পায়নের জন্য যে জায়গা অধিগ্রহণ করে ছিল পোর্ট বন্দর । সেই জায়গার অধিকাংশই এখন পড়ে রয়েছে অনাথ হয়ে।
নির্বাচনে যেই বা নির্বাচিত হোক, যারা হলদিয়া তমলুক এলাকার বাইরে রয়েছেন তারা কি এই এলাকায় এসে বসবাস করবেন। তাহলেই নির্বাচনের পরে যারা দেখবেন তারা এই এলাকারই মানুষ রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী। তাহলে ভালো প্রার্থী যোগ্য প্রার্থী এ কথা বলে লাভ কি?
যারা নির্বাচনের আগে যে সকল নেতাকর্মীরা এলাকার উন্নয়নের জন্য ভাবতেন । সরকারি কোন কাগজপত্র দরকার হলে যেতে হয় এলাকার নেতাকর্মীদের কাছে তারাই তো দেখবে নতুন করে তো কিছু হবে না।
হলদিয়া পৌরসভা প্রায় দুই বছর হতে চলল নির্বাচন হয়নি তাতে কি উন্নয়ন বন্ধ রয়েছে? সমস্যা কি কিছু হচ্ছে? মানুষদের পৌর নাগরিকদের সমস্যার জন্য প্রত্যেকটি পৌর ওয়ার্ডে রয়েছে সরকারি প্রতিনিধি তারাই তো সব কিছুই করে দিচ্ছে তাহলে জনপ্রতিনিধি প্রয়োজন কি আছে ?ভোট হওয়া মানেই তো কোটি কোটি টাকা খরচ। ভাই ভাইয়ের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম গড়ে উঠবে। হলদিয়ার মানুষ এই বেশ ভালো আছে।
কিন্তু শাসক বিরোধী দলের নেতাদের দাপট হলদিয়া পৌর এলাকায় পৌর নাগরিকদের উপরে নেই । কোন নেতাদের কাছে এলাকার মানুষ আর যায় না। প্রয়োজন হলে ওয়ার্ড অফিস অথবা পৌরসভার নিজস্ব ভবনেই পৌঁছে যাচ্ছেন। নাগরিক পরিষেবা পেয়ে যাচ্ছেন তাহলে কেনই বা নির্বাচন দরকার। এই ধরনের যদি হলদিয়া পৌর এলাকায় কিছুদিন চলতে থাকে শাসকবিরোধী দল থাকবে নেতারা তাদের অস্তিত্বের হারিয়ে ফেলবে তাদের কাছে কেউ আর যাবে না অস্তিত্বের সংকটে ভুগছেন। তাহলে কি আসন্ন অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে নেতারা সেই সংকটের আগাম ছায়া দেখতে পাচ্ছেন? শোনা যায় চায়ের দোকানে গল্পে যে আসুক তারা নির্বাচনে জয়লাভ হওয়ার পর চলে যাবে। কেবল থাকবো আমরাই।
No comments