হলদিয়া বাসুদেবপুর এইচএফসি মাঠে নবরাত্রি মহা পূজা মহাযজ্ঞ শুরু হল ৯ এপ্রিল থেকে চলবে আগামী ১৮ই এপ্রিল পর্যন্ত।
শ্রী শ্রী বাসন্তী দুর্গাদেবীর নবরাত্রি মহা পূজা ও মহাযজ্ঞের এবং শ্রী শ্রী মদনচাঁদ জীউর শুভাগমন উপলক্ষে এক অনন্য অনুষ্ঠ…
হলদিয়া বাসুদেবপুর এইচএফসি মাঠে নবরাত্রি মহা পূজা মহাযজ্ঞ শুরু হল ৯ এপ্রিল থেকে চলবে আগামী ১৮ই এপ্রিল পর্যন্ত।
শ্রী শ্রী বাসন্তী দুর্গাদেবীর নবরাত্রি মহা পূজা ও মহাযজ্ঞের এবং শ্রী শ্রী মদনচাঁদ জীউর শুভাগমন উপলক্ষে এক অনন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন।
জানালেন সভাপতি ভিগুরাম মণ্ডল, কোষাধ্যক্ষ সুদীপ নস্কর, নবরাত্রি মহা পূজা ও মহাযজ্ঞ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক অমিত প্রামানিক ও জহরলাল দাস সহ কমিটির অন্যান্য সদস্য সদস্যাবৃন্দ। অমিত প্রামানিক বলেন এই মহা নবরাত্রি পূজা ও মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠান শুরু করেছিলেন প্রয়াত বিশিষ্ট সমাজসেবী হলদিয়া পৌরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর এবং ক্ষুদিরাম মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রদ্ধেয় স্বপন নস্কর। তিনি আজ নেই তিনার দেখানো পথ ধরেই হলদিয়া সহ জেলা ও এলাকার মানুষের মঙ্গল ও শুক সমৃদ্ধি কামনায় আমরা ব্রত হয়েছি। হলদিয়া বন্দর ডিজিটাল অনলাইনে জানান প্রতিদিনই থাকছে মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠান সুদূর হিমালয় ও ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন বিভিন্ন সন্ন্যাসীগণ। বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে এখন চলছে নবরাত্রি মহা পূজা ও মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠান।
শ্রী শ্রী বাসন্তী দুর্গাদেবীর নবরাত্রি পূজার সময় নির্ঘন্ট
নবদুর্গা কাদের বলা হয়? নবদুর্গার রূপের নাম কি কি? নবরাত্রিতে দেবীর কোন কোন রূপের পূজা করা হয়? জেনে রাখা ভালো।পৌরাণিক মতে দেবী পার্বতীর দুর্গার রূপের নয়টি রূপকে নবদুর্গা নামে অভিহিত করা হয় ৷ এই নয় রূপ হল যথাক্রমে - শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘণ্টা, কুষ্মাণ্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী এবং সিদ্ধিদাত্রী ৷ প্রত্যেক শরৎকালে নবরাত্রির নয় দিনে প্রতিদিন দেবী পার্বতীর দুর্গা রূপের এই নয় রূপের এক এক দেবীকে পুজো করা হয় ৷ আসলে এই নয়টি রূপের স্বগুন বর্তমান দেবী পার্বতীর দুর্গা রূপের মধ্যে অন্তর্নিহিত হয়ে আসে। এই রূপে দেবী পার্বতী বধ করেছিলেন দুর্গম অসুরকে।শৈলপুত্রী- এই দেবীর দক্ষিণ হস্তে ত্রিশূল আর বাম হস্তে কমল আছে তাই দেবীর অপর নাম শুল ধরিনি। ইনি পূর্ব জন্মে দক্ষ নন্দিনী সতী দেবী ছিলেন । দক্ষের অমতে তিনি শিব কেই বিবাহ করেন । প্রতিশোধে দক্ষ এক শিব হীন যজ্ঞের আয়োজন করেন । বিনা নিমন্ত্রণে সতী দেবী পিত্রালয়ে গিয়ে অনেক অপমানিত হলেন ও সতী রূপে আবির্ভূত মহামায়া দেহত্যাগ করলেন । এরপর ভগবান শিব দক্ষ যজ্ঞ ধ্বংস করেন । এই দেবী মহামায়া পর জন্মে হিমালয় কন্যা পার্বতী রূপে জন্ম নেন । শৈলরাজ হিমালয়ের কন্যা হবার জন্য দেবীর এক নাম শৈলপুত্রী । এবং পরজন্মে তিনি দেবাদিদেব শিবকেই পতি রূপে বরন করলেন । নবরাত্রির প্রথম দিনে মা শৈলপুত্রীর আরাধনা করা হয় । মা শৈলপুত্রীর বাহন বৃষ।শ্রী শ্রী শৈলপুত্রি পূজা ২৬ শে চৈত্র ১৪৩০ (ইং- ৯ই এপ্রিল ২০২৪) মঙ্গলবার প্রতিপদ রাত্রি ১০/১ মিঃ, দিবা ৭/৫৪ গতে ১০/২৩ মধ্যে শ্রী শ্রী শৈলপুত্রি পূজা প্রতিপদাদি কল্পারম্ভ।
ব্রহ্মচারিণী- মা পার্বতীর নবশক্তির দ্বিতীয় রূপ হলেন ব্রহ্মচারিণী। এখানে ‘ব্রহ্ম’ শব্দের অর্থ হল তপস্যা। ব্রহ্মচারিণী অর্থাৎ তপশ্চারিণী বা তপ আচরণকারী। কথিত আছে যে,‘বেদস্তত্ত্বং তপো ব্রহ্ম’বেদ, তত্ত্ব এবং তপ হল ‘ব্রহ্ম’ শব্দের অর্থ। দেবী ব্রহ্মচারিণীর রূপ- জ্যোতিতে পূর্ণ, অতি মহিমামণ্ডিত। দেবী ডান হাতে জপের মালা এবং বাঁ হাতে কমণ্ডলু ধারণ করে আছেন।শ্রী শ্রী ব্রহ্মচারিণী পূজা২৭ শে চৈত্র ১৪৩০ (ইং- ১০ই এপ্রিল ২০২৪) বুধবার:দ্বিতীয়া রাত্রি ৮/২ মিঃ, দিবা ৯/৩২ গতে ১১/১২ মধ্যে শ্রী শ্রী ব্রহ্মচারিণী পূজা।
চন্দ্রঘণ্টা- এই দেবীর মস্তকে অর্ধচন্দ্র অবস্থান করে , তাই দেবীকে চন্দ্রঘণ্টা নামে ডাকা হয় । দেবীর এই স্বরূপ পরম কল্যাণকারী। এঁনার শরীরের রং স্বর্ণের মতো উজ্জ্বল। এই দেবী দশভুজা । দেবীর হাতে কমণ্ডলু , তরোয়াল , গদা , ত্রিশূল , ধনুর্বাণ , পদ্ম , জপ মালা থাকে । দেবী তার ঘণ্টার ন্যায় প্রচন্ড চন্ড ধবনিতে দুরাচারী রাক্ষস , দানব , দৈত্য দের প্রকম্পিত করেন । শ্রী শ্রী চন্দ্রঘন্টা পূজা ২৮ শে চৈত্র ১৪৩০ (ইং- ১১ ই এপ্রিল ২০২৪) বৃহস্পতিবার তৃতীয়া সন্ধ্যা ৬/১১ মিঃ, দিবা ২/২৮ মধ্যে শ্রী শ্রী চন্দ্রঘন্টা পূজা
কুষ্মাণ্ডা- দেবী পার্বতী তার চতুর্থ স্বরূপে "কুষ্মাণ্ডা" নামে পরিচিতা। নবরাত্রের চতুর্থদিনে, অর্থাৎ চতুর্থী তিথিতে মাতৃপ্রাণ ভক্তগণ এই কুষ্মাণ্ডারূপেই আদ্যাশক্তিকে আহ্বান করে থাকেন। দেবী সিংহবাহিনী, ত্রিনয়নী ও অষ্টভুজা। আটটি হাতে সুদর্শনচক্র, ধনুর্বাণ, রক্তপদ্ম, কমণ্ডলু, ইত্যাদি দৃষ্টিগোচর হয়। মায়ের বামহস্তে একটি অমৃতপূর্ণ কলসও রয়েছে। এখানে অমৃত ব্রহ্মের রূপক, দেবী ভগবতী পার্বতী অমৃতপূর্ণ কলস অর্থাৎ ব্রহ্মজ্ঞানের আধার হাতে নিয়ে বসে রয়েছেন।শ্রী শ্রী কুষমন্ডা পূজা২৯ শে চৈত্র ১৪৩০ (ইং- ১২ ই এপ্রিল ২০২৪) শুক্রবার চতুর্থী অপরাহ্ন ৫/৩ মিঃ, দিবা ৮/৩১ গতে ১১/১৫ মধ্যে শ্রী শ্রী কুষমন্ডা পূজা
স্কন্দমাতা- মা দুর্গার পঞ্চম শক্তি হল স্কন্দমাতা। স্কন্দের জননী হওয়ায় তাঁকে স্কন্দমাতা বলা হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে সূর্যমণ্ডলের প্রধান দেবতা হওয়ার কারণে, তাঁর সুন্দর চিত্রটি বিশ্বজুড়ে আলোকিত হয়েছে।শ্রী শ্রী কন্দমাতা পূজা৩০ শে চৈত্র ১৪৩০ (ইং- ১৩ই এপ্রিল ২০২৪) শনিবার পঞ্চমী অপরাহ্ন ৪/১২ মিঃ, দিবা ৯/৩৫ গতে ১২/৫৩ মধ্যে শ্রী শ্রী কন্দমাতা পূজা
কাত্যায়নী- এই নাম এবং রূপের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক পৌরাণিক কাহিনি | বৈদিক যুগে কাত্যায়ন নামে এক ঋষি ছিলেন | এক পুত্রের পিতা কাত্যায়নের ইচ্ছে হয় একটি কন্যসন্তান লাভের | দেবী পার্বতী র তপস্যা করে তিনি অভীষ্ট পূর্ণ করেন | তার স্তবে তুষ্ট হয়ে স্বয়ং দেবী পার্বতী জন্ম নেন মহারিশি কাত্যায়নের কন্য রূপে | তখন তার নাম হয় কাত্যায়নী | নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে আরাধিতা হন ভক্তদের কাছে |দেবী পার্বতী এই রূপ নিয়ে মহিষাসুর কে বধ করেনশ্রী শ্রী কাত্যায়নী পূজা১ লা বৈশাখ ১৪৩১ (ইং- ১৪ ই এপ্রিল ২০২৪) রবিবার ষষ্ঠী দিবা ৩/৪৬ মিঃ, দিবা ৫/৫৬ গতে ১২/৫১ মধ্যে শ্রী শ্রী কাত্যায়নী পূজা, শ্রী বাসন্তী দেবীর কল্পারম্ভ সায়ংকালে দেবীর আমন্ত্রন ও অধিবাস।অশোক ষষ্ঠী।
কালরাত্রি- নবদুর্গার রূপের মধ্যে কালরাত্রি দেবী হলেনকৃষ্ণবর্ণা | আলুলায়িত কেশে তিনি ধাবিত শত্রুর দিকে | তার কণ্ঠে বিদ্যুতের মালিকা | ত্রিনয়নী দেবীর শ্বাস প্রশ্বাসে বেরিয়ে আসে আগুনের হলকা | ভীষণদর্শনা দেবীর তিন হাতে অস্ত্র | এক হাতে ভক্তদের প্রতি বরাভয় | এই রূপই উপাসিত হয় কালিকা রূপে | তবে এই রূপেও দেবী ভক্তের শুভ করেন | তাই অন্যদিকে তিনি শুভঙ্করী | দেবীর বাহন গর্দভ | ভক্তরা তার পুজো করেন নবরাত্রির সপ্তম রাতে |
শ্রী শ্রী কালরাত্রি পূজা২ রা বৈশাখ ১৪৩১ (ইং- ১৫ই এপ্রিল ২০২৪) সোমবার সপ্তমী দিবা ৩/৫২ মিঃ পূর্ব্বাহ্ন, দিবা ৮/২৯ গতে শ্রী শ্রী কালরাত্রি পূজা, শ্রী বাসন্তী দুর্গাদেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ স্থাপন সপ্তমী কল্পারম্ভ। দেবীর গজে আগমন, ফল শষ্য পূর্নবসুন্ধরা।
মহা গৌরী-হিন্দু পুরান মতে হিমায়লকন্যা ছিলেন গৌর বর্ণা। শিবের তপস্যা করে রৌদ্রে তিনি কৃষ্ণা হন | মহাদেব যখন গঙ্গাজল দিয়ে তাকে স্নান করান, তখন তিনি হয়ে ওঠেন ফর্সা | তার এই রূপের নাম হয় মহাগৌরী | প্রচলিত বিশ্বাস, নবরাত্রির অষ্টম রাতে তার পুজো করলে সব পাপ ধুয়ে যায় | সাদা পোশাক পরিহিতা, চার হাত বিশিষ্টা দেবীর বাহন ষাঁড় | দেবীর এক হাত শোভিত বরাভয় মুদ্রায় | বাকি তিন হাতে থাকে পদ্ম, ত্রিশূল এবং ডমরু |শ্রী শ্রী মহাগৌরী পূজা১৪৩১ (ইং- ১৬ই এপ্রিল ২০২৪) মঙ্গলবার ৩ রা বৈশাখ অপরাহ্ন ৪/২৮ মিঃ অপরাহ্ন দিবা ৮/২৮ মধ্যে শ্রীশ্রী মহা গৌরী পূজা,শ্রী বাসন্তী দুর্গাদেবীর মহাষ্টমী বিহিত পূজা। সন্ধিপূজা :- অপরাহ্ন দিবা ৪/৪ গতে পূজারম্ভ, বলিদান- ৪/২৮ গতে,সন্ধিপূজা ৪/৫২ সমাপন।
সিদ্ধিদাত্রী-হিন্দু শাস্ত্রে বর্ণিত আছে শ্রী বাসন্তী দুর্গাদেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ স্থাপন সপ্তমী কল্পারম্ভ। দেবীর গজে আগমন, ফল শষ্য পূর্নবসুন্ধরা। নবম তথা শেষ রূপ হল সিদ্ধিদাত্রী | সিংহবাহিনী দেবীর চার হাতে আশীর্বাদী মুদ্রা | তিনি সিদ্ধি দান করেন | অর্থাত্ তার উপাসনায় সংসারে আসে সুখ এবং সমৃদ্ধি | সবাইকে বরাভয় দেন এই মাতৃকামূর্তি | দেবী ভগবত্ পুরাণে আছে, স্বয়ং মহাদেব দেবী পার্বতী কে সিদ্ধিদাত্রী রূপে পুজো করেছিলেন | এবং তার ফলে মহাদেব সকল সিদ্ধি লাভ করেন | সিদ্ধিদাত্রীর আশীর্বাদেই সর্ব সিদ্ধি লাভ করেন মহাদেব | নবদুর্গার শেষ রূপটি হল ‘সিদ্ধিদাত্রী’। ‘মার্কণ্ডেয় পুরাণে’-এ ‘সিদ্ধিদাত্রী’ অষ্টভুজা, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের শ্রীকৃষ্ণজন্ম খণ্ডে ‘সিদ্ধিদাত্রী’ অষ্টাদশভুজা। ‘সিদ্ধিদাত্রী’ চতুর্ভুজা রূপেও দেখা যায়। সেখানে তিনি শিবের আরাধ্য। এই হল নবদুর্গার চর্চিত কাহিনি। শ্রী শ্রী সিদ্ধিদাত্রী পূজা৪ ঠা বৈশাখ ১৪৩১ (ইং- ১৭ ই এপ্রিল ২০২৪) বুধবার নবমী সন্ধ্যা ৫/৩৫ মিঃ দিবা পূর্বাহ্ন ৮/২৮ মধ্যে শ্রী শ্রী সিদ্ধিদাত্রী পূজা, শ্রী বাসন্তী দুর্গাদেবীর পূজা এবং কুমারী পূজা, রাম নবমীব্রত।
শ্রী শ্রী বাসন্তী দুর্গাদেবীর দশমী বিহিত পূজা ৫ ই বৈশাখ ১৪৩১ (ইং- ১৮ ই এপ্রিল ২০২৪) বৃহস্পতিবার: দশমী রাত্রি ৭/৫ মিঃ পূর্ব্বাহ্ন ৯/৩১ মধ্যে শ্রী শ্রী বাসন্তী দুর্গাদেবীর দশমী বিহিত পূজা সমাপনন্তে বিসর্জন, দেবীর দোলায় গমন ফল মড়ক। পুজোকে ঘিরে চলছে এখন শিল্প তালুকে উন্মাদনা।
*আরো নিত্য নতুন আপডেট খবর দেখতে
আমাদের whatsapp চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন*
WhatsApp channel link - https://whatsapp.com/channel/0029VaCqqNUGk1FyEgWxaZ2r
No comments