শতাব্দী প্রাচীন শীতলা মন্দির!হলদিয়ার চকদ্বীপা পূর্ব
হলদিয়ার চকদ্বীপা পূর্ব পল্লির প্রাণকেন্দ্র শতাব্দী প্রাচীন শীতলা মন্দির। বন্দর শহরে প্রবেশের পথেই ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের (পূর্বতন ৪১ নম্বর) পাশে গড়ে ওঠা মন্দির বহু ঘটনার সাক্ষী। …
শতাব্দী প্রাচীন শীতলা মন্দির!হলদিয়ার চকদ্বীপা পূর্ব
হলদিয়ার চকদ্বীপা পূর্ব পল্লির প্রাণকেন্দ্র শতাব্দী প্রাচীন শীতলা মন্দির। বন্দর শহরে প্রবেশের পথেই ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের (পূর্বতন ৪১ নম্বর) পাশে গড়ে ওঠা মন্দির বহু ঘটনার সাক্ষী। মঙ্গলবার থেকে শীতলা মন্দিরে শুরু হয়েছে পাঁচদিনের সয়াল পুজো। বাৎসরিক এই পুজো ঘিরে উৎসবে মেতেছে এলাকা। হলদিয়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এই পুজোয় শহরের বহু মানুষের সমাগম হয়। ইতিহাস থেকে জানা গিয়েছে, ষোড়শ শতকের প্রথমার্ধে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পুরী যাত্রাকালে এই অঞ্চল জলের তলায় ছিল। ১৫১৯ সাল নাগাদ জঙ্গলাকীর্ণ ছোট ছোট দ্বীপ বা চরভূমি মাথা তোলে। হলদি ও হুগলি নদীর মোহনা এলাকার বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড ‘দোরো দুবনান’ নামে পরিচিত হয়। এই অঞ্চলের ছোট ছোট ভূমিখণ্ড ‘চক’ নামে পরিচিত। এরকমই একটি চক হল আজকের চকদ্বীপা পূর্ব পল্লি। পাঁচশো বছরের পুরনো এই জায়গায় বিভিন্ন সময়ে নানা স্থান থেকে মানুষ জন এসে জঙ্গল কেটে বসবাস ও কৃষিকাজ আরম্ভ করে। গড়ে ওঠে নুতন জনপদ। ১৯০৮ সাল নাগাদ খড়ের ছাউনি দিয়ে গড়ে তোলা হয় গ্রামের শীতলা মন্দির। প্রবীণদের কাছে জানা গিয়েছে, এই মন্দির চারটি পর্যায়ে পরিবর্তনের পর বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে। প্রথম পর্যায়ে গ্রামের শুভানুধ্যায়ীরা মন্দির গড়ে তোলেন। ১৩৪৯ বঙ্গাব্দে বন্যায় মূর্তি সহ মাটির মন্দির নষ্ট হয়। পরে টালির ছাউনি দেওয়া মন্দির ও বর্তমানে পাকা মন্দির তৈরি হয়েছে। ২০০৬ সাল নাগাদ মন্দিরের সম্পত্তি সরকার অধিগ্রহণ করে। বর্তমান গ্রাম কমিটির সভাপতি বিদ্যুৎকুমার মাইতি এবং সম্পাদক অলোককুমার মাইতি মন্দিরকে নবরূপে সজ্জিত করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। গ্রামের রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক সুজনকুমার বালার নেতৃত্বে মন্দিরকে ঘিরে পার্ক, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কম্পিউটার শিক্ষাকেন্দ্র, লাইব্রেরি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য হলদিয়া পুরসভার কাছে আবেদন করা হয়েছে। গ্রাম কমিটির পক্ষে নিতাই সেন, শচীন্দ্রনাথ পাল, সজল পাল, শ্যামল মাইতি, পরিমল আচার্য, রঞ্জন জানা প্রমুখ বলেন, ২ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত সয়াল পুজো চলবে। এই দিনগুলিতে পূজার্চনার পাশাপাশি নানা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ৫ ও ৬ এপ্রিল যথাক্রমে মহাষ্টমীর পূজা ও ভোগপ্রসাদ বিতরণ করা হবে। গ্রাম কমিটির সদস্যরা বলেন, সয়াল পুজোর সময় গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়িতে আত্মীয়স্বজন আসেন। পুজো ঘিরে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
No comments