নিয়োগ দুর্নীতিতে এখনও পর্যন্ত নেতা মন্ত্রী বিধায়ক আধিকারিক মিলিয়ে ২৮ জন প্রাথমিক থেকে উচ্চ প্রাথমিক, এসএসসি- শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সিংহভাগই শাসক দলের নেতা, মন্ত্…
নিয়োগ দুর্নীতিতে এখনও পর্যন্ত নেতা মন্ত্রী বিধায়ক আধিকারিক মিলিয়ে ২৮ জন
প্রাথমিক থেকে উচ্চ প্রাথমিক, এসএসসি- শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সিংহভাগই শাসক দলের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক। যদিও এদিনের রায়ের পরেও বেমালুম মুখ্যমন্ত্রী দায় এড়িয়ে বলেছেন, 'এমন কিছু হয়নি, যদি কোথাও ভুল থাকে তবে সংশোধন করে নেওয়া হবে।'
যদিও গোটা নিয়োগ দুর্নীতির ছবি বলছে মুখ্যমন্ত্রীর দল আপাদমস্তক ডুবে রয়েছে এই দুর্নীতির পাঁকে। প্রাথমিক থেকে একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক নিয়োগ এবং রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষাকর্মী নিয়োগে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির চেহারা ধরা পড়েছে। কোনও নিরামিষ সুপারিশ নয়, সংগঠিতভাবে কোটি কোটি টাকার খেলা চলেছে। জেলায় জেলায় রীতিমত এজেন্ট চক্র গড়ে উঠেছিল।
এখনও পর্যন্ত নিয়োগ দুর্নীতির সবক্ষেত্র মিলিয়ে আদালতে ১২৫টি মামলার তদন্ত চলছে, যেখানে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত চালাচ্ছে।
সেই দুর্নীতির কাঠামো কেমন? জেলায় জেলায় এজেন্ট চক্র
চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা জোগাড় করেছে। রীতিমত রেট কার্ড ধরে টাকা তোলা হয়েছে। প্রাইমারির ক্ষেত্রে একরকম, উচ্চ প্রাথমিকের ক্ষেত্রে আরেকরকম টাকা। কোনোটারই পরিমাণ ৫ লক্ষের কম নয়। তারপর আছে শিক্ষাকর্মী পদের চাকরি। টাকা খারা দিয়েছে তাঁদের পৃথক তালিকা তৈরি হয়েছে। সেই তালিকা এজেন্টদের মাধ্যমে গেছে শাসক তৃণমূলের প্রভাবশালী মহলে। সেখান থেকে মন্ত্রী, শীর্ষ আধিকারিকরদের কাছে। তার ভিত্তিতে সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার
করে ওএমআর শিট বিকৃত করা হয়েছে। টাকা দিয়েছে তৃণমূল নেতার কাছে, তাই খালি ওএমআরশিটেও ৫০'র ওপর নম্বর মিলেছে। খালি খাতা শুধু নয়, পরিকল্পিত ভাবে 'ভুল উত্তর'লেখা প্রার্থীও পাশ করে চাকরি পেয়ে গেছে। এক্ষেত্রে ভুল উত্তরটাই আসলে সঙ্কেত। সেই সঙ্কেতের বিনিময়মূল্য প্রায় দশ থেকে বারো লক্ষ টাকা। আর তার ভিত্তিতেই বেমালুমচাকরি পেয়ে গেছে।
আবার ওএমআর শিট বিকৃত করার জন্য নির্দিষ্ট ভাবে একটি সংস্থাকে
যাবতীয় পরীক্ষা প্রক্রিয়ার বরাত দেওয়া হয়েছিল। গ্রেপ্তার হয়েছে সেই সংস্থার আধিকারিকও। মূলত উত্তরপ্রদেশের সংস্থা। শিক্ষা দপ্তরের সবুজ সঙ্কেত নিয়েই সেই সংস্থাকে নিয়োগ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। ঐ সংস্থার বিরুদ্ধে আগেই প্রতারণার অভিযোগ ছিল ভিন রাজ্যে। সন্দেহজনক সংস্থা। সংস্থার বিরুদ্ধে 'আইবি কোড, ২০১৬'ধারায় মামলাও আছে।
২০১৬ সালে গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগের পরীক্ষার ওএমআর শিট মূল্যায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সেই সন্দেহজনক সংস্থাকেই। যদিও পরবর্তীতে সেই সংস্থাকেই আবার সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ওএমআর শিটের পূর্নমূল্যায়নের কারণে কালো তালিকাভুক্ত করেছে কমিশনই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগ দুর্নীতির এই কেলেঙ্কারির তদন্তে ঐ সংস্থার ভূমিকাও গুরুত্বের সঙ্গেই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খোদ মন্ত্রী থেকে পর্ষদ, সংসদের মাথারা সরাসরি যুক্ত। কোটি কোটি টাকার চক্র। শুধুমাত্র প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিকেই কেলেঙ্কারির বহর দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি। গ্রুপ ডি'পদেও কেলেঙ্কারির বহর কয়েকশো কোটি টাকা।
No comments