Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

যমজ সন্তান কেন হয়?

যমজ সন্তান কেন হয়?
যমজ সন্তান বা ট্যুইন স্বামী-স্ত্রীর স্বাভাবিক মেলামেশা থেকে যেমন আসতে পারে তেমনই আসতে পারে অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাকটিভ থেরাপি থেকেও। ট্যুইন দুই ধরনের হয়— ১) মনোজাইগোটিক ট্যুইন এবং ২) ডাইজাইগোটিক ট্যুইন।মনোজাইগোটিক…

 


যমজ সন্তান কেন হয়?


যমজ সন্তান বা ট্যুইন স্বামী-স্ত্রীর স্বাভাবিক মেলামেশা থেকে যেমন আসতে পারে তেমনই আসতে পারে অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাকটিভ থেরাপি থেকেও। ট্যুইন দুই ধরনের হয়— ১) মনোজাইগোটিক ট্যুইন এবং ২) ডাইজাইগোটিক ট্যুইন।

মনোজাইগোটিক ট্যুইন: প্রাকৃতিকভাবে মেয়েদের একটিই ওভ্যুলেশন হয়। অর্থাত্‍ ওভারি থেকে একটি ওভাম বেরিয়ে আসে। এই ওভাম স্পার্ম দ্বারা ফার্টিলাইজড হলে তৈরি হয় জাইগোট। এই জাইগোট দু’ভাগে ভাগ হয়ে দু’টি এমব্রায়ো তৈরি হলে তখন হয় মনোজাইগোটিক ট্যুইন। এই যমজ সন্তান একইরকম দেখতে হয়।

ডাইজাইগোটিক ট্যুইন: আবার একটি মেনস্ট্রুয়েশন সাইকেলে কোনওভাবে দু’টি ওভাম ওভারি থেকে বেরিয়ে আসলে ও দু’টি স্পার্ম দ্বারা দু’টি এগই নিষিক্ত হলে, তৈরি হতে পারে দু’টি এমব্রায়ো। এক্ষেত্রে যে  যমজ হবে তাকে বলে ডাইজাইগোটিক ট্যুইন। তবে এই যমজ সন্তান দেখতে আলাদা হয়।

পরিসংখ্যান

স্বাভাবিক পথে যে সমস্ত দম্পতির সন্তান আসে তাদের মধ্যে যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা ৩ থেকে ৫ শতাংশ। অন্যদিকে অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাকটিভ টেকনোলজির (এআরটি) মাধ্যমে সন্তান নিলে যমজ হওয়ার সম্ভাবনা ২০-২১ শতাংশ! এক্ষেত্রে এআরটি বলতে মূলত আইভিএফ-এর কথা বলা হচ্ছে।

স্বাভাবিক হোক বা অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাকটিভ টেকনোলজি— ট্যুইন প্রেগন্যান্সি কখনওই মা এবং গর্ভস্থ সন্তানের জন্য খুব একটা স্বাস্থ্যকর অবস্থা নয়। 

কাদের যমজ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি?

যে সমস্ত পরিবারে আগেও যমজ সন্তান হওয়ার ইতিহাস থাকে সেই সব পরিবারে ট্যুইন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আগের প্রেগন্যান্সিতে যমজ হলে পরবর্তী প্রেগন্যান্সিতেও ট্যুইন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিছু জাতি যেমন আফ্রিকার মহিলাদের অতি উচ্চ সম্ভাবনা থাকে যমজ সন্তান হওয়ার। আবার মহিলাদের ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়স— এই সময়কালে যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। দৈহিক উচ্চতার তুলনায় ওজন খুব বেশি হলেও আসতে পারে ট্যুইন প্রেগন্যান্সি। অন্যদিকে যাঁরা ওভ্যুলেশনে সাহায্যকারী ওষুধ খান, তাঁদের সুপার ওভ্যুলেশন হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে। এর ফলেও দু’টি এগ তৈরি হওয়া ও সেখান থেকে যমজ সন্তান আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়।

যমজের স্বাস্থ্যঝুঁকি

মনোজাইগোটিক ও ডাইজাইগোটিক ট্যুইনের মধ্যে তুলনা করলে বলতে হয় মনোজাইগোটিক ট্যুইনের জন্মের সময় ওজন কম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আবার ডাইজাইগোটিক ট্যুইনে প্রিটার্ম লেবার, প্রি ম্যাচিওর ডেলিভারি ইত্যাদি হওয়ার আশঙ্কা অনেক কম থাকে।

গর্ভে যমজ থাকলে মায়েদের স্বাস্থ্যঝুঁকি

কোনও কারণে গর্ভের মধ্যে একটি বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেলে তখন অন্যটিও নষ্ট হতে পারে। এছাড়া এক্ল্যাম্পশিয়া (রক্তচাপ বেড়ে খিঁচুনি), প্রি টার্ম লেবার, হাইপারেমেসিস গ্রাভিডেরাম (বমি বমি ভাব ও বমি অনেক বেশি হয়), জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া, কোলেস্টেসিস অব প্রেগন্যান্সি (সন্তানসম্ভবা নারীর লিভারের একটি বিশেষ অবস্থা যার কারণে ত্বকে চুলকানি হয়, র‌্যাশ বেরয়), পলিহাইড্রামনিওস (গর্ভে অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের মাত্রা বৃদ্ধি) ইত্যাদির আশঙ্কা বাড়ে। এছাড়া গর্ভে যমজ সন্তান থাকলে নর্মাল ডেলিভারির তুলনায় সিজারিয়ান ডেলিভারি হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে।


একজনকে কাতুকুতু দিলে অন্যজনের হাসি পাবে?

বাংলার ভ্রান্তিবিলাস, হিন্দির রাম-শ্যাম, জুড়ুয়া, ধুম থ্রি, সীতা অউর গীতার মতো ছবি দেখে সাধারণ মানুষের ধারণা হয়েছে যমজ সন্তানরা আসলে রেডিও স্টেশনের মতো! সর্বক্ষণ তরঙ্গ ছুঁড়ছে একে অপরকে। তাই একজন কাশ্মীর আর অন্যজন আন্দামানে থাকলেও তাদের মধ্যে রয়েছে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যের অতীত কোনও কানেকশন! ফলে একজন ঘুষি খেলে চোয়াল ফোলে অন্যজনের! সত্যিই কি তাই? যমজ ভাই বা বোনের মধ্যে সত্যিই কি এমন যোগাযোগ থাকে? একজন ব্যথা পেলে সহোদর ভাই বা বোনও তা অনুভব করে? চিকিৎসকরা বলছেন মনোজাইগোটিক ট্যুইন বা আইডেন্টিক্যাল ট্যুইনের মধ্যে কিছু কিছু মিল থাকে। যেমন মনোজাইগোটিক ট্যুইন হলে সাধারণত দু’টি সন্তানই মেয়ে হয় বা দু’টিই ছেলে হয়। চরিত্রগত দিক থেকেও তাদের মধ্যে অনেকখানি সাদৃশ্য পাওয়া যায়। একজন পড়াশোনায় ভালো হলে সাধারণত অন্যজনও পড়াশোনায় ভালো হয়। তাই বলে একজনের ব্যথা লাগলে অন্যজনও ব্যথা পাবে, একজন কাঁদলে অন্যজনের চোখ দিয়ে জল বেরবে— এগুলি সম্পূর্ণভাবে ঊর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা। বিজ্ঞানের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।

No comments