নন্দীগ্রাম থেকেই লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করলেন তমলুক লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যজমি আন্দোলনের পবিত্র ভূমি নন্দীগ্রাম থেকেই লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করলেন তমলুক লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। আন্দোলনের…
নন্দীগ্রাম থেকেই লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করলেন তমলুক লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য
জমি আন্দোলনের পবিত্র ভূমি নন্দীগ্রাম থেকেই লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করলেন তমলুক লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। আন্দোলনের মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রত্যয়ী দেবাংশুর ঘোষণা, ‘জিতব আমরাই।’ সোমবার দুপুর সওয়া ১টা নাগাদ দেবাংশু নিমতৌড়িতে জেলা পার্টি অফিসে হাজির হন। সেখানে জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জেলা কমিটির চেয়ারপার্সন চিত্ত মাইতি তাঁকে স্বাগত জানান। এছাড়াও গোটা লোকসভা থেকে দলের নেতাকর্মীরা পার্টি অফিসে এসে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। একটা সময় তাঁর কাছে যাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ফুলের তোড়া নিয়ে কে আগে যাবেন তারই প্রতিযোগিতা চলে। পার্টি অফিসে নেতাকর্মীদের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন দেবাংশু। তারপর সোজা নন্দীগ্রাম রওনা দেন।
এদিন বিকেলে নন্দীগ্রাম থানা সংলগ্ন জানকীনাথ মন্দিরে পুজো দেন। তাঁর যাওয়ার আগেই নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তৃণমূল নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। বিকেল ৪টা নাগাদ মন্দিরে হাজির হন তৃণমূল প্রার্থী। সেখানে তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জয়দেব দাস। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময়েও এই জয়দেব বিজেপির নন্দীগ্রাম-৩ মণ্ডল সভাপতি ছিলেন। জয়দেব বলেন, নন্দীগ্রাম-১ ব্লক থেকে পাঁচ হাজারের বেশি ভোটের লিড পাবেন দেবাংশু। গত বিধানসভা ভোটে আমার বুথ থেকে বিজেপি ৪৮০ ভোটের লিড পেয়েছিল। আমি দায়িত্বের সঙ্গে বলছি, ওই এলাকা থেকে তূণমূল নিশ্চিত লিড পাবে। নন্দীগ্রামে আমার মতো অনেক বিজেপি নেতাকর্মীর দলের প্রতি মোহভঙ্গ হয়েছে। তাই বিজেপির এখানে ঘুরে দাঁড়ানো অসম্ভব।
এদিন জানকীনাথ মন্দির থেকে বেরিয়ে মীরের বাজার মাজারে চাদর চড়ান দেবাংশু। তারপর নিজের হাতে দেওয়াল লিখে মিছিলেও অংশ নেন। গোকুলনগরে শহিদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাতে সোনাচূড়ায় কর্মিসভাও করেন। নন্দীগ্রাম থানার আইসি অনুপম মণ্ডল সহ থানার বাহিনী আগাগোড়া তৃণমূল প্রার্থীর জনসংযোগ কর্মসূচির পাহারায় ছিলেন। আজ, মঙ্গলবার বিজেপির পক্ষ থেকে জানকীনাথ মন্দিরে পুজো দেওয়ার কর্মসূচি আছে। পাশাপাশি ভাঙাবেড়ায় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন কর্মসূচিও রয়েছে। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সহ দলের নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন বলে নন্দীগ্রাম থানা সূত্রে জানা গিয়েছে।
এদিন দেবাংশু বলেন, উল্টোদিকের লোকেরা তমলুক লোকসভা আসনে কাকে প্রার্থী করবেন জানি না। লালবাড়ি থেকে সোজা চলে আসবেন কিনা তাও জানা নেই। এখানকার মানুষকে তিনি চেনেন না। মাটিও চেনেন না। কিন্তু, আমি অনেকবার এখানে এসেছি। আমরা জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। তমলুকের মানুষ আমাদের সঙ্গেই আছেন। প্রচারের শেষলগ্নে মার্জিনটাও বলতে পারব। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এতদিন বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকলেন। হঠাৎ করে তাঁর মুড চেঞ্জ হল। তিনি রাজনীতিতে ঢুকে পড়লেন। এলাকার মানুষজন তাঁকে নির্বাচিত করার কয়েকদিন বাদে ফের মুড চেঞ্জ হলে রাজনীতি ছেড়ে দিতে পারেন। তখন কি এখানকার মানুষ কপাল চাপড়াবেন? তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের মানুষ এরকম ঝুঁকি নেবেন না। আমার বয়স ৩০ বছরের নীচে। এই প্রজন্মের একজনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী করেছেন। তার কারণ, অনেকটাই দৌড়তে হবে। সবার পাশে দাঁড়াতে হবে। এখন আমার প্রশ্ন, একজন ৬০ বছরের লোক বেশি দৌড়বেন নাকি একজন ২৮ বছরের ছেলে? পাঁচটা বছর মানুষের পাশে দৌড়তে আমারই সুবিধা হবে।
নন্দীগ্রামে এদিন দলীয় প্রার্থী দেবাংশুকে ঘিরে সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ছিল। তাঁরা ফুল ছুড়ে প্রার্থীকে স্বাগত জানান। জেলা পরিষদের সদস্যা নন্দিনী গোল, পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভানেত্রী জয়ন্তী মণ্ডল সহ আরও অনেক মহিলা নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বলেন, ২০২১ সালে আমাদের কাছে দিদিকে নন্দীগ্রাম থেকে নির্বাচিত করার বড় সুযোগ ছিল। কিন্তু, সেটা হয়নি। এবার আমরা দিদির মনোনীত প্রার্থী দেবাংশুকে নন্দীগ্রামের মাটি থেকে লিড এনে বুঝিয়ে দেব, নন্দীগ্রামের মানুষ দিদির পাশেই আছেন।
No comments