স্কুলপড়ুয়াদের হাতেকলমে ফলের বাগান তৈরির কাজ শেখানো হবেহলদিয়ার স্কুলগুলিতে যৌথভাবে দেশি ফলের ছোট পুষ্টি বাগান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে হলদিয়া পেট্রকেম ও দুর্গাচকের রামকৃষ্ণ সারদা মিশন আশ্রম। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন, শিক্ষাদপ্তর ও …
স্কুলপড়ুয়াদের হাতেকলমে ফলের বাগান তৈরির কাজ শেখানো হবে
হলদিয়ার স্কুলগুলিতে যৌথভাবে দেশি ফলের ছোট পুষ্টি বাগান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে হলদিয়া পেট্রকেম ও দুর্গাচকের রামকৃষ্ণ সারদা মিশন আশ্রম। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন, শিক্ষাদপ্তর ও উদ্যানপালন দপ্তর সহযোগিতা করছে। স্কুলপড়ুয়াদের হাতেকলমে ফলের বাগান তৈরির কাজ শেখানো হবে। এজন্য পড়ুয়াদের পুরস্কার দেওয়া হবে। বাগানের ফল বিনিময় করা হবে। অভিনব এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘শৈশবে গাছ লাগাও, সারা জীবন ফল খাও’। সোমবার হলদিয়ার দুর্গাচকে বাসুদেবপুর গভর্নমেন্ট স্পনসরড হাইস্কুলে এই প্রকল্পের সূচনা করেন জেলাশাসক তানবীর আফজল। তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের সবুজশ্রী নামে এধরনের একটি প্রকল্প রয়েছে। সদ্যোজাত শিশুদের মায়েদের হাতে হাসপাতাল, পঞ্চায়েত বা পুরসভার পক্ষ থেকে একটি চারাগাছ তুলে দেওয়া হয়। লক্ষ্য, শিশুর যত্নের সঙ্গে মায়েরা যেন চারাগাছকেও যত্ন করেন। আর্থিক এবং পরিবেশ ভাবনা দু’-ই রয়েছে ওই প্রকল্পে। পেট্রকেম ও সারদা মিশনের এই প্রকল্পের অভিনবত্ব হল, স্কুলে পড়ুয়াদের মধ্যে গাছের যত্ন ও বাগান তৈরির পাঠ দেওয়া হবে। বাগান তৈরির কাজে পড়ুয়াদের একঘেয়েমি কাটবে। নিজে হাতে বাগান তৈরি শিখলে হর্টিকালচার নিয়ে পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়তে পারে। জেলাশাসক শিক্ষকদের আবেদন করেন, বাড়িতে নিজের ছেলেমেয়েকে যেভাবে মোবাইলের ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করেন, ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদেরও সেই পাঠ দিন, কখনও এড়িয়ে যাবেন না। স্কুলে ফলের বাগান তৈরিতে পড়ুয়াদের অনুপ্রাণিত করুন। তিনি বলেন, শুধু নম্বর বা মেধার মূল্যায়ন নয়, স্কুলে পড়ুয়াদের মধ্যে মনুষ্যত্বের বিকাশের মূল্যায়ন শুরু করুন। হলদিয়া পেট্রকেমের এইচআর সিএসআর সমীরণ সরকার(প্লান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) বলেন, পেট্রকেম সংস্থা হলদিয়ায় ৭০ হাজার গাছ লাগিয়ে গ্রিন বেল্ট তৈরি করেছে। পরিবেশ সুস্থ রাখার পাশাপাশি পেট্রকেম কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের মধ্যে গাছ লাগানো এবং পরিচর্যা শেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে চাইছে। সেজন্য মিশন এবং স্কুলগুলির সঙ্গে যৌথভাবে সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে এই উদ্যোগ নিয়েছে। প্রকল্প রূপায়ণ করবে হলদিয়ার রামকৃষ্ণ সারদা মিশন আশ্রম। মিশনের সাধারণ সম্পাদক বিবেকাত্মানন্দ মহারাজ বলেন, হলদিয়া পুরসভা, সুতাহাটা ও হলদিয়া ব্লকের ৪০টি স্কুলে ৪০টি করে ২০ ধরনের ফলের চারা লাগানো হবে। দক্ষিণবঙ্গের জলবায়ু উপযোগী ফল যেমন আম, কালোজাম, জামরুল, সবেদা, পেয়ারা, বেদানা, কুল জাতীয় গাছের বাগান তৈরি হবে। পরিবেশবান্ধব শিল্প শহর গড়ার পাশাপাশি শিশুদের মধ্যে পুষ্টিকর ফল খাওয়ার প্রবণতা বাড়াতেই এই পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়, মহিষাদল রাজ কলেজের অধ্যাপক শুভময় দাস, গভর্নমেন্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনুপম বিশ্বাস। অনুপমবাবু ইতিমধ্যেই স্কুলে ছাদবাগান তৈরি করে সব্জি ফলিয়ে জেলা প্রশাসনের নজর কেড়েছেন।
No comments