জ্বর হয়েছে? প্যারাসিটামল খাবেন,প্যারাসিটামল কীভাবে জ্বর কমায়?
স্কুল থেকে ফিরতেই শিরিনের গা ম্যাজম্যাজ, ক্লান্তি। সন্ধের মধ্যেই ধুম জ্বর। ডাক্তারজেঠুর কাছে নিয়ে যেতেই নিদান টানা প্যারাসিটামল। সঙ্গে কিছু ঠান্ডার ওষুধ। শিরিন দেখেছে,…
জ্বর হয়েছে? প্যারাসিটামল খাবেন,প্যারাসিটামল কীভাবে জ্বর কমায়?
স্কুল থেকে ফিরতেই শিরিনের গা ম্যাজম্যাজ, ক্লান্তি। সন্ধের মধ্যেই ধুম জ্বর। ডাক্তারজেঠুর কাছে নিয়ে যেতেই নিদান টানা প্যারাসিটামল। সঙ্গে কিছু ঠান্ডার ওষুধ। শিরিন দেখেছে, ঠাম্মার ঠান্ডা লেগে মাথাব্যথা হলেও বাবা প্যারাসিটামল নিয়ে এসে দেয়। ঠাম্মার ওই ওষুধ যেন জ্বরের জন্য ম্যাজিক! দিন কয়েক খেতেই জ্বর গায়েব! কিন্তু, শিরিন বোঝে না, এই ওষুধের মধ্যে কী এমন আছে যে খেলেই জ্বর কমে, ব্যথা সারে! প্যারাসিটামলের এই ক্ষমতার নেপথ্যে কী আছে তা জানার আগে দেখা যাক, জ্বর কেন হয়?
আমরা অনেকেই জানি, জ্বর কোনও অসুখ নয়, অসুখের উপসর্গ মাত্র। আমাদের শরীর মাঝেমধ্যে রোগজীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। আবার শরীরে আঘাত লাগার মতো ঘটনাও ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে মানবদেহের প্রতিরক্ষাবলয় নিজের মতো করে কাজ শুরু করে দেয়। ফাস্ট এড, ওষুধ এসব পরার আগেই শরীর কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ শুরু করে। এগুলোকে বলে অটাকয়েড। এই অটোকয়েড নিঃসরণ শুরু হলেই আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে ব্যথা বোধ হয় বা জায়গাটা ফুলে যায়। জীবাণু হানা দিলেও শরীর চুপ করে বসে থাকে না। নিজের যা আছে, তা দিয়েই রোগজীবাণুর সঙ্গে লড়াই শুরু করে। আমাদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের কাজ শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে শরীর প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন জাতীয় একটি অটোকয়েড নিঃসরণ করে। হাইপোথ্যালামাসে এই প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের পরিমাণ বেড়ে গেলে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। একেই জ্বর বলে। তাই জ্বর হওয়ার অর্থ শরীরে কোনও রোগজীবাণু প্রবেশ করেছে। এই তাপমাত্রাকে একমাত্র তখনই কমানো সম্ভব, যদি প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন উৎপন্ন হওয়া আটকে দেওয়া যায়। প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন তৈরি হয় কক্স উৎসেচক দিয়ে। প্যারাসিটামল রক্তের সঙ্গে মিশে এই উৎসেচক তৈরিতে বাধার সৃষ্টি করে। এই উৎসেচক ছাড়া প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন তৈরি হতে পারে না। তাই জ্বরের সময় প্যারাসিটামল খেলে শরীরের তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। জ্বরের উৎস যে রোগজীবাণু, সেটিও দুর্বল হয়ে পড়ে ও অসুখ সারে।
সতর্কীকরণ: সব ধরনের জ্বরই যে প্যারাসিটামলে কমে যায় বা সব রোগজীবাণুকেই যে প্যারাসিট্যামল কব্জা করতে পারে, তা নয়। তখনই জ্বরের উৎস খুঁজতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করার উপদেশ দেন চিকিৎসকরা। প্যারাসিটামলের ডোজও বয়স এবং শরীরভেদে এক একরকম। তাই জ্বর হলে নিজের ইচ্ছায় প্যারাসিটামল না খেয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
No comments