Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

শরীরে ঠিক জুত পাচ্ছিনা! টনিক খাবেন! টনিক খাওয়া শরীরের পক্ষে ভালো?

শরীরে ঠিক জুত পাচ্ছিনা! টনিক খাবেন!টনিক খাওয়া শরীরের পক্ষে ভালো?
ডাক্তারবাবুর চেম্বারে অনেকে এসে আবদার করেন, শরীরে ঠিক জুত পাচ্ছিনা, একটা ভালো টনিক লিখে দিন তো ডাক্তারবাবু! TONIC। ইংরেজির পাঁচ অক্ষরের এই নির্দোষ শব্দগুলোর মধ্যে …


 শরীরে ঠিক জুত পাচ্ছিনা! টনিক খাবেন!টনিক খাওয়া শরীরের পক্ষে ভালো?


ডাক্তারবাবুর চেম্বারে অনেকে এসে আবদার করেন, শরীরে ঠিক জুত পাচ্ছিনা, একটা ভালো টনিক লিখে দিন তো ডাক্তারবাবু! TONIC। ইংরেজির পাঁচ অক্ষরের এই নির্দোষ শব্দগুলোর মধ্যে কী জাদু আছে কে জানে! পুষ্টিকর সুষম খাবার না খেয়ে অনেকেরই নজর এই বোতলবন্দি টনিকের দিকে। কিন্তু সত্যিই কি এটি দেহের কোন কাজে লাগে! ভিটামিন টনিক, লিভার টনিক, আয়রন টনিক, ব্রেন টনিক— কত বাহারি সব নাম!

ভিটামিন টনিক : নানা শারীরবৃত্তীয় কাজের জন্য প্রতিদিন দেহে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিভিন্ন ভিটামিন অবশ্যই দরকার। দু'ধরনের ভিটামিন আমরা খেয়ে থাকি। ১) চর্বিতে দ্রবীভূত ভিটামিন। এই দলে রয়েছে এ, ডি, ই, এবং কে। ২) জলে দ্রবীভূত ভিটামিনষ তাতে রয়েছে বি গ্রুপের সব ভিটামিন এবং ভিটামিন সি। অথচআমরা সারাদিন নানা ধরনের খাবার খাই। যেমন শাকসব্জি, ডাল, চাল, গম, নানা ধরনের ফল, মাছ-মাংস, তেল, ঘি, মাখন ইত্যাদি। এইসব খাদ্যদ্রব্যগুলো থেকেই দেহ তার প্রয়োজনীয় ভিটামিন পেয়ে যায়। বাড়তি ভিটামিনের প্রয়োজন তখনই হয়, যখন দেহের কোনও অসুখে বা বয়সজনিত কারণে এগুলোর ঘাটতি দেখা দেয়। তার আগে নয়। বাজারি ভিটামিন টনিকগুলোতে থাকে নানা ধরনের ভিটামিনের জগাখিচুড়ি, সঙ্গে কোথাও ক্যালসিয়াম-সহ নানা মিনারেলস, কোথাও বা স্নায়ু উত্তেজক নিউরোফসফেট, ক্যাফিন, স্টিকনিন  ইত্যাদি। আর থাকে বিশুদ্ধ জল। একজন সুস্থ মানুষের এই বাড়তি ভিটামিন গুলোর কোনও প্রয়োজনই নেই। এদের অধিকাংশই মূত্রের সঙ্গে দেহ থেকে বার হয়ে যায়। সুস্থ দেহে ভিটামিন ক্যাপসুলেরও কোনও ভূমিকা নেই।

 লিভার টনিক: বাঙালিদের লিভার নাকি জন্ম থেকেই খারাপ! তাই শিশুকাল থেকেই অনেক মা তার সন্তানকে  দু’বেলা খাওয়ার পরেই দু'চামচ করে লিভার টনিক খাওয়ান। লিভার কোনও দুর্বল অঙ্গ নয়। কিন্তু অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো যখন তখন অসুস্থ হয় না। বরং আমরা যা খাই তাকে গ্লাইকোজেনে পরিণত করে নিজের মধ্যে জমিয়ে রেখে বিপদে-আপদে সে দেহকে রক্ষা করে। লিভারের দশ ভাগের এক ভাগ কোষ সুস্থ থাকলেই সে দিব্যি তার কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারে। তবে হ্যাঁ,লিভারও মাঝেমধ্যে অসুস্থ হতে পারে। সেসব রোগের প্রত্যেকেরই চিকিৎসা পদ্ধতি ভিন্ন। এখানে লিভার টনিকের কোনও ভূমিকা নেই।

 তথাকথিত লিভার টনিকে থাকে বাইল সল্ট বা পিত্ত লবণ, যেগুলোর ব্যবহার কোনও ডাক্তারি বইতে লেখা নেই। বরং বেশি খেলে এগুলো পাকস্থলি ও ক্ষুদ্রান্তের প্রথম অংশের মিউকাস মেমব্রেনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, ফলে আলসার বা ঘা দেখা দিতে পারে। লিভার টনিকের অন্যতম উপাদান হল সরবিটল নামক এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট, মুখে খেলে যেটি লিভারে পৌঁছনোর আগেই অন্ত্রনালীতে শোষিত হয়ে যায়। কাজেই উপকার বা অপকারের প্রশ্নই আসে না। 

এই দুর্মূল্যের বাজারে নিজের বুদ্ধিতে বা বিজ্ঞাপনে প্রভাবিত হয়ে দয়া করে ওষুধের দোকান থেকে লিভার টনিক কেন, কোনও টনিকই কিনে খাবেন না।

No comments