আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কোন জোট নয় একলা চলার নীতি তৃণমূল-
লোকসভা নির্বাচনের আগে জোট আর নয়। বাংলাতে তো নয়ই। এই প্রত্যয়েই অনড় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই দিনাজপুরের সভামঞ্চ থেকে ‘একলা চলো’র এই উত্তাপ ফের রাজনীতির বাত…
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কোন জোট নয় একলা চলার নীতি তৃণমূল-
লোকসভা নির্বাচনের আগে জোট আর নয়। বাংলাতে তো নয়ই। এই প্রত্যয়েই অনড় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই দিনাজপুরের সভামঞ্চ থেকে ‘একলা চলো’র এই উত্তাপ ফের রাজনীতির বাতাসে ছড়িয়ে দিলেন বাংলার অগ্নিকন্যা। সাফ বললেন, বিজেপিকে হারানোর জন্য তৃণমূল একাই যথেষ্ট। এর জন্য কারও সাহায্য লাগবে না। আর এই ভোটযুদ্ধে কংগ্রেস এবং সিপিএমকেও এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দেবেন না তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মবিশ্বাস, মানুষই তাঁর পাশে থাকবে। কারণ, মানুষের জন্য কাজ করেছে তৃণমূলের সরকার। সেটাই তাঁর শক্তি।
বাংলায় ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার কর্মসূচি, অথচ তাঁকে জানানোর সৌজন্যটুকুও দেখাননি রাহুল গান্ধী। ইন্ডিয়ার জোট শরিক এবং অন্যতম কাণ্ডারী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় যথেষ্ট উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। এবং এখনও তার বিন্দুমাত্র গোপনের চেষ্টা করছেন না তিনি। জোট প্রসঙ্গে কংগ্রেসের অসহযোগিতা এবং প্রদেশ নেতাদের বিরুদ্ধ-মন্তব্যে শেষ পর্যন্ত ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন মমতা। মল্লিকার্জুন খাড়্গে, এমনকী সোনিয়া গান্ধীর ফোনেও বরফ গলেনি। রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাট—দুই মঞ্চেই বারবার ঝরে পড়েছে তাঁর অসন্তোষ। আক্রমণের মূল নিশানায় বিজেপি থাকলেও কংগ্রেস-সিপিএমকেও রেয়াত করেননি তিনি। সাফ বলেছেন, কেউ আপনাদের জন্য কিছু করবে না। কিন্তু ভোট চাইবে। এটাই এদের চরিত্র। নাম না করে বহিরাগত নেতাদের উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ, ‘এখন আপনারা ভোটপাখিদের দেখা পাবেন। তাঁরা শুধু কুৎসা করেন। টাকার থলি হাতে ঘুরে বেড়ান। মনে রাখবেন, এঁরা একদিন পর চলে যাবে। আমরা কিন্তু সারা বছর থাকব, আপনাদের পাশে।’ চেনা ছন্দে তাঁর আক্রমণ, ‘ভোটের আগে আবার এনআরসি-সিএএ এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি মাথাচাড়া দিয়েছে। এগুলোই বিজেপির ভোটের ইস্যু। কথা দিচ্ছি, প্রাণ থাকতে বাংলায় এনআরসি চালু করতে দেব না।’
আজ বুধবার মালদহ পৌঁছবেন মমতা। পদযাত্রা, আর সভা—দু’টি কর্মসূচিই রয়েছে তাঁর। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা আগেই রাজনৈতিক উত্তাপ তৈরি করে দিয়েছেন তিনি। আশ্বাস এবং প্রতিশ্রুতি পালনের মধ্যে যে বিস্তর ফারাক, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তাঁর বক্তব্য, ‘দু’দিন পরই ভোটের বাজেট। কিছুই করার থাকবে না, অথচ এই সুযোগ ব্যবহার করেও বিস্তর প্রতিশ্রুতি দেবে বিজেপি। বিশ্বাস করবেন না। পুরোটাই ভাঁওতা হতে পারে।’
মমতার প্রত্যয়, আগামী দিনে ভারতকে পথ দেখাবে বাংলাই। ২০২১ সালে যে ‘খেলা’ এ রাজ্য বিজেপিকে দেখিয়েছিল, পুনরাবৃত্তি হবে তারই। তাই বালুরঘাটের সভায় মমতার মুখে ফিরেছে ‘খেলা হবে’ স্লোগান। বাংলার মানুষের কাছে তাঁর আর্জি, ‘কাজ না করে যারা ভোট চাইতে আসবে, তাদের বলবেন, বিদায় নাও। শুধু আমাদের উপর ভরসা রাখবেন। আমরা কথার খেলাপ করি না।’
No comments