প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে মেধাতালিকা প্রকাশ
সুপ্রিম কোর্টের সবুজ সংকেত মেলার পর প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মেধা তালিকা প্রকাশ করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। আজ বুধবার সন্ধ্যাবেলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয় এই তালিক…
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে মেধাতালিকা প্রকাশ
সুপ্রিম কোর্টের সবুজ সংকেত মেলার পর প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মেধা তালিকা প্রকাশ করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। আজ বুধবার সন্ধ্যাবেলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয় এই তালিকা। তালিকায় মোট ৯ হাজার ৫৩৩ জনের নাম প্রকাশ করল পর্ষদ। পাশাপাশি আরও জানানো হয়েছে, আজ থেকেই পর্ষদের পক্ষ থেকে চাকরির সুপারিশ পত্র সফলরত পরীক্ষার্থীদের পাঠানো হবে। আগামী সাত দিনের মধ্যেই তাঁরা প্রাথমিক স্কুলগুলিতে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিতে পারবেন।
২০২০ সালের আগে ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং টেট উত্তীর্ণ ৯ হাজার ৫৩৩ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে। দেওয়া হবে নিয়োগপত্রও। পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সোমবার এমনই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে থেকে যোগ্যরা চাকরি পাবেন। প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে নানা মামলায় এতদিন স্রেফ জট বেড়েছে। সেই হিসেবে এদিন খরা কাটল বলা চলে। রাজ্যে প্রাথমিকে শূন্যপদের সংখ্যা ১১ হাজার ৭৬৫। তার মধ্যে আপাতত ৯ হাজার ৫৩৩টি পদ পূরণ হবে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দ্রুত শূন্যপদ পূরণের আর্জিকে গুরুত্ব দিয়েই এদিন শীর্ষ আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে।
২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের অধিকাংশেরই ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন বা ডিএলএড প্রশিক্ষণ ছিল না। তখন এব্যাপারে কিছুটা ছাড়ও ছিল। কিন্তু পরে বিষয়টি বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়ায়। সেই মতো তাঁরা প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন। কিন্তু ২০২২ সালে যখন নিয়োগের প্যানেল তৈরি হচ্ছে, সেই সময় প্রশিক্ষণের শংসাপত্র পাননি ওই প্রার্থীরা। ফলে প্যানেলে নামও ওঠেনি। কিন্তু ডিএলএড প্রশিক্ষণের যোগ্যতা সত্ত্বেও কেন নাম থাকবে না? এই প্রশ্ন তুলে মামলা করেন তাঁরা। সেই মামলাটি অবশ্য সুপ্রিম কোর্টে চলতে থাকবে। আগামী ছ’সপ্তাহ পরে তার শুনানি হবে বলে জানিয়েছে বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি আসাদউদ্দিন আমানুল্লার ডিভিশন বেঞ্চ। সেই মামলার ভবিষ্যতের উপরই ওই প্রার্থীদের চাকরি নির্ভর করবে।
২০২২ সালের প্যানেল তৈরির সময় ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের দাবি ছিল, ‘আমাদের আগে সুযোগ দিতে হবে।’ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদও চাইছে দ্রুত শূন্যপদ পূরণ করতে। এদিন পর্ষদের হয়ে আদালতে হাজির ছিলেন আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত এবং কুণাল চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে, ২০২০ সালের আগে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং টেট উত্তীর্ণদের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী সোমেশ ঘোষ। সওয়াল-জবাব শুনে বিচারপতি হিমা কোহলি জানিয়ে দেন, মোট শূন্যপদের ভিত্তিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ৯ হাজার ৫৩৩ জন যোগ্য প্রার্থীর তালিকা তৈরি করেছে। সেটি প্রকাশ করা হবে। দিতে হবে নিয়োগপত্রও। বাকি পদ আপাতত খালি থাকবে। তবে পর্ষদ চাইলে ওই পদগুলির জন্য ২০২০ সালের পর ডিএলএড প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করা টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিটিউট টেস্ট নিয়ে রাখতে পারে। যদিও নিয়োগের বিষয়টি নির্ভর করবে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উপর। আবেদনকারীদের আইনজীবী পি এস পাটওয়ালিয়া এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন। এদিনের রায়ে খুশি ২০১৭ টেট উত্তীর্ণ ঐক্যমঞ্চের সদস্য অর্ক মণ্ডল। তাঁর সাফ কথা, ‘পরীক্ষা,ফলপ্রকাশ, ইন্টারভিউ এবং নিয়োগ—প্রতিটা বিষয়ের জন্য আন্দোলন করতে হয়েছে। গ্রেপ্তারও হয়েছি। আজ দীর্ঘ ছ’বছরের লড়াইয়ের পরিসমাপ্তি হল।’ পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালও জানিয়েছেন, ‘শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে চলা হবে।’
No comments