মোদি সরকারের ‘এক দেশ এক ভোট’ কর্মসূচিকে আক্রমণ করে কড়া চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
স্বেচ্ছাচার, একনায়কতন্ত্র, গণতন্ত্রকে খুনের চেষ্টা। এমন চাঁছাছোলা ভাষাতেই মোদি সরকারের ‘এক দেশ এক ভোট’ কর্মসূচিকে আক্রমণ করে …
মোদি সরকারের ‘এক দেশ এক ভোট’ কর্মসূচিকে আক্রমণ করে কড়া চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
স্বেচ্ছাচার, একনায়কতন্ত্র, গণতন্ত্রকে খুনের চেষ্টা। এমন চাঁছাছোলা ভাষাতেই মোদি সরকারের ‘এক দেশ এক ভোট’ কর্মসূচিকে আক্রমণ করে কড়া চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য, আর অখণ্ডতাই হল মূল ভিত্তি। দেশ এগিয়ে চলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মোতাবেক কেন্দ্র-রাজ্যের সুসম্পর্কের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু এই কাঠামোতে কেন্দ্র সরাসরি আঘাত করছে বলে তোপ দাগলেন মমতা। তাঁর সাফ কথা, এই উদ্যোগ গণতন্ত্র ও ভারতের সংবিধানের পরিপন্থী। এক দেশ এক ভোটের ‘চক্রান্ত’ তিনি মানছেন না। মানবেন না।
শুধু লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন নয়, পঞ্চয়েত-পুরসভা ভোটও একসঙ্গে করানো যায় কি না, সে নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে কেন্দ্রের অন্দরমহলে। আর এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে মাথায় বসিয়ে কমিটি গঠন করেছে মোদি সরকার। আপাতত চলছে আলাপ-আলোচনা এবং মতামত নেওয়ার পর্ব। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই ইস্যুতে রাজ্য সরকারগুলির কোনও মতামতই নেওয়া হয়নি। এমনকী কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে উচ্চ পর্যায়ের কমিটিতেও রাখা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট মত, এক দেশ এক ভোট প্রস্তাব একেবারেই বাস্তবসম্মত নয়। কমিটির সচিব ডঃ নীতিন চন্দ্রকে লেখা চারপাতার চিঠিতে ছ’টি ধাপে আপত্তি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রথমেই মমতার প্রশ্ন, এক দেশ বলতে কী বোঝানো হচ্ছে? তাঁর কথায়, ঐতিহাসিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক পটভূমি রয়েছে দেশের। কিন্তু কেন্দ্রের প্রস্তাবিত এক দেশের অর্থ বোধগম্য নয়। এক দেশ এক ভোট প্রস্তাবকে সংবিধান মান্যতা দেয় কি? এই প্রশ্নও তুলে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। উল্লেখ করেছেন, সংবিধানে কি এক এক দেশ এক ভোট নীতি অনুসরণের কথা বলা আছে? যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে কোথাও এক দেশ এক ভোটের উল্লেখ নেই। মমতা জানিয়েছেন, এক দেশ এক ভোট করতে গেলে একক নির্বাচনের কাঠামো তৈরি করা দরকার। কিন্তু তা কি করে সম্ভব? কারণ লোকসভা ও রাজ্যভিত্তিক বিধানসভা ভোট আলাদা সময়ে হয়। একসঙ্গে সব ভোট করাতে গেলে সেই সব রাজ্যের বিধানসভার মেয়াদ কমে যাবে অথবা বাড়বে। এই প্রক্রিয়া মোটেও যুক্তিগ্রাহ্য নয়। তাছাড়া যদি কেন্দ্রের সরকারে ডামাডোল তৈরি হয়, তার প্রভাব পড়বে রাজ্যগুলির উপর। যদি কোনও কারণে কেন্দ্রের সরকার পড়ে যায়, তখন কী হবে? এটা তো অনেকটা প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম অব ইলেকশন! মমতার স্পষ্ট বার্তা, এক দেশ এক ভোট গণতান্ত্রিক কাঠামোর পক্ষে বিপজ্জনক। কেন্দ্রের সরকার গণতন্ত্রকে কুক্ষিগত করতে চাইছে।
No comments