মসজিদ-গির্জা সাফাই অভিযানে নামছে বিজেপি
লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে হিন্দুরাষ্ট্রের স্বপ্ন ফেরি শুরু করেছে বিজেপি। ২২ জানুয়ারি খুলে যাচ্ছে রামমন্দিরের দরজা। উদ্বোধন অনুষ্ঠান কার্যত বয়কট করেছে কংগ্রেস, তৃণমূল সহ বিরোধী দলগুলি। তার জ…
মসজিদ-গির্জা সাফাই অভিযানে নামছে বিজেপি
লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে হিন্দুরাষ্ট্রের স্বপ্ন ফেরি শুরু করেছে বিজেপি। ২২ জানুয়ারি খুলে যাচ্ছে রামমন্দিরের দরজা। উদ্বোধন অনুষ্ঠান কার্যত বয়কট করেছে কংগ্রেস, তৃণমূল সহ বিরোধী দলগুলি। তার জেরে গেরুয়া শিবিরে তৈরি হয়েছে আশঙ্কার মেঘ। কারণ, সংখ্যালঘু ভোট। রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার চড়া প্রচারে তাদের একাংশ যথেষ্ট ভীত। আগামী ২০-২৬ জানুয়ারি মুসলমানদের বাড়িতে থাকার পরমার্শ দিয়েছেন এআইইউডিএফ প্রধান তথা অসমের এমপি বদরুদ্দিন আজমল। এই পরিস্থিতিতে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া মোদি-শাহরা আর উপেক্ষা করতে পারছেন না সংখ্যালঘুদের। তাই ড্যামেজ কন্ট্রোলে এবার তড়িঘড়ি দেশজুড়ে মসজিদ-গির্জা-গুরুদ্বারে ঝাঁট দেওয়ার কর্মসূচি নিল বিজেপি। আগামী ১৩-২০ জানুয়ারি এই সাফাই অভিযানে নামছে দলের সংখ্যালঘু মোর্চা। মূল উদ্দেশ্য একটাই— সংখ্যালঘুদের মন জয়।
পার্টির সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশে গত ৮ জানুয়ারি সংখ্যালঘু মোর্চার নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দুষ্মন্ত গৌতম। সূত্রের খবর, আলোচনায় পশ্চিমবঙ্গকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ, এ রাজ্যে সংখ্যালঘু ভোট প্রায় ৩৮ শতাংশ। বাংলায় ৪২টি আসনের মধ্যে ৩৫টি জেতার টার্গেট দিয়েছেন অমিত শাহ। সংখ্যালঘু ‘দরদী’ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে না পারলে হালে পানি পাওয়া যাবে না। তাই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আগামী কাল, শনিবার থেকে এ রাজ্যে মসজিদ-গির্জা সাফাই অভিযানে নামছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার এ প্রসঙ্গে পার্টির সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সভাপতি চার্লস নন্দী বলেন, ‘রাষ্ট্রবাদী মুসলমান ভাই-বোনেরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উন্নয়ন যজ্ঞে সামিল হতে চান। কেননা, বাংলার সংখ্যালঘুরা আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন। তাঁরা উপলব্ধি করেছেন, দেশ সামগ্রিকভাবে এগিয়ে না গেলে নির্দিষ্ট কোনও জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন সম্ভব নয়।’ তাই গত ২৪ ডিসেম্বর ব্রিগেডে লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠে অসংখ্য সংখ্যালঘু মানুষ অংশ নিয়েছিলেন বলেও তাঁর দাবি। তিনি আরও বলেন, ‘মসজিদ-গির্জা-গুরুদ্বার পবিত্রতার প্রতীক। কাল থেকে সেই স্থানগুলিকে কাল থেকে আরও স্বচ্ছ-পরিচ্ছন্ন করার কাজ আমরা শুরু করব।’ পার্টির অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে পরাজিত লোকসভা আসনগুলির অধিকাংশেই সংখ্যালঘুরা বিজেপির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিল। তাই ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’ স্লোগানের সার্থক বাস্তবায়নে হিন্দুত্বের ইমেজ থেকে খানিক সরতে চাইছেন স্বয়ং ‘বিশ্বগুরু’ মোদি। বিজেপি নেতা-কর্মীদের বার্তা দিয়েছে, আরও বেশি করে সংখ্যালঘু সমাজের কাছে পৌঁছতে হবে। ভোটের আশায় না থেকে দাঁড়াতে হবে পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক শ্রেণির মানুষদের পাশে। সেই কারণেই এবার বাধ্য হয়েই মসজিদ-গির্জায় ঝাঁট দিয়ে সংখ্যালঘু প্রীতি বাড়াতে মরিয়া গেরুয়া ব্রিগেড।
No comments