"কোন নারীর সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হচ্ছে তার নিজের কাছে কিছু টাকা থাকা"- কবিতা আমি এবং আমার কাছের বা দূরের অসংখ্য নারীকে দেখেছি দিনের পর দিন সম্পুর্ন শুন্য হাতে দিন কাটিয়ে দিতে। কেবল ঘর সংসার করা মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নি…
"কোন নারীর সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হচ্ছে তার নিজের কাছে কিছু টাকা থাকা"- কবিতা
আমি এবং আমার কাছের বা দূরের অসংখ্য নারীকে দেখেছি দিনের পর দিন সম্পুর্ন শুন্য হাতে দিন কাটিয়ে দিতে। কেবল ঘর সংসার করা মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দারিদ্র্য শ্রেণির নারীদের ক্ষেত্রেই এটা ঘটে না, প্রায় সকল শ্রেণির নারীদেরকেই এই অর্থহীন অনিরাপদ সময় পার করার অভিজ্ঞতা আছে। এটা প্রচন্ডরকম একটা পরনির্ভরশীল জীবন।
বলতেই পারেন যে, স্বামী বা পরিবারের কর্তাব্যাক্তি যদি নারীর সকল চাহিদা মিটিয়ে রাখেন, তবে তার নগদ টাকা থাকার দরকার কী? দরকার আছে বস্, নারীদের এমন অনেক প্রয়োজন থাকে, যা মেটানোর জন্য কর্তাব্যাক্তির কাছে টাকা চেয়ে নিতে বিব্রত হয়। সংকোচ করে, তবুও বাধ্য হয়ে চেয়ে নিতে হয়। কারণ প্রয়োজন কখনো লজ্জা মানে না। অথবা এমন অনেক প্রয়োজন অনেক নারীরা সংকোচের কাছে হেরে গিয়ে টাকা না চেয়ে পূরণ না করেই কাটিয়ে দেন দিনের পর দিন। যা আমাদের কর্তাব্যক্তিরা কখনো উপলব্ধি করতে পারেন না।
কেবল সংসারি নারীরাই নয়, আমি নিম্নমধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত অনেক কর্মজীবী নারীকেও দেখেছি সারা মাস কাজ করে এরকম অসহায় শুন্য হাতে দিন কাটাতে। তাদের কর্তাব্যাক্তি নিজের আয়ের পাশাপাশি সেই নারী সদস্যর আয় করা টাকাটাও এক রকম ফোর্স করে সবটা আদায় করে নেয়। ফলে কাজ করেও সেই নারীকে হতে হয় পরনির্ভরশীল।
অথচ এসব নারীদের নানারকম প্রয়োজন মোকাবেলা ছাড়াও কখনো কখনো এমন কিছু বিপদ মোকাবেলা করতে হয়, যার জন্য সে প্রস্তুত থাকে না। সেই সময়টায় তার হাতে কিছু টাকা না থাকায় সে যে পরিমান অসহায় বোধ করে তা কেউ বুঝতে পারবেন না, কেবল ভুক্তভোগী ছাড়া। তবুও পুরুষ বা কর্তাব্যাক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগই তাদের সেই অসহায়ত্বটা বোঝার চেষ্টা করে না। পক্ষান্তরে তাদের উপর নানারকম নিয়ম নিষেধের দেয়াল তুলে দেয়।
অথচ আমি দেখেছি, আমার মা ঠাকুমা থেকে শুরু করে আরো অনেক নারীদের মধ্যে এরকম স্বভাব আছে যে, ঘরে কারো বিপদের মুহুর্তে যখন কোনভাবে কর্তাব্যাক্তি টাকা পয়সার ব্যবস্থা করতে পারেন না, তখন নারীরাই তাদের কাছে টাকা থাকলে অনায়াসে বের করে দেন। সেই কঠিন মুহুর্তে পাশে দাঁড়ান নারীরাই। এবং তারা নিজ প্রয়োজনে খরচের বেলায় খুবই হিসেবী। তারা নিজেদর কাছে কিছু টাকা থাকলে সে টাকা অপ্রয়োজনে খরচ করেন না। কেবল অনেকটাই নিরাপদবোধ করেন। যা তার জন্য ভীষণ দরকার।
এখন বলতে পারেন, সবার এই অবস্থা নেই যে, ঘরের নারীদের হাতে কিছু টাকা রেখে দেবেন। এটা অবশ্যই ঠিক। তাই বলে সকল নারীকে কর্মজীবী হয়ে যেতে হবে সেটাও আমি বলছি না। তাদেরকে অন্তত ঘরে বসে হলেও কিছু টাকা আয় করার সুযোগ তো দিতে পারেন। এখন প্রযুক্তির কল্যাণে অনেক নারীরাই ঘরে বসে নিজের সংসার সামলে নিজের জানা কাজটা নিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। যেখানে কিছুটা সময় দিয়ে নিজের উদ্যোগ প্রেজেন্ট করলে কিছুটা আয় নিশ্চিত করা কঠিন কিছু না।নারীকে সুযোগ ঘর থেকেই দিতে হবে কারণ প্রতিটা নারীর কাছে আগে ঘর,তারপর পর বা কাজ যাই বলেন না কেন।
No comments