উষ্ণতার উদযাপন ও উৎসব বিষয়ক
"আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের কোনও আকার নেই তবুও সম্পর্ক আছে, স্বীকৃত বা অস্বীকৃত গোপন এবং প্রকাশ্য। সম্পর্ক এক অনস্বীকার্য অদ্ভুত বলয়---মানুষেরও আসার আগে বৃক্ষে বাতাসে, আকাশ মাটিতে, লতায়-পাতায় সম…
উষ্ণতার উদযাপন ও উৎসব বিষয়ক
"আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের কোনও আকার নেই তবুও সম্পর্ক আছে, স্বীকৃত বা অস্বীকৃত গোপন এবং প্রকাশ্য। সম্পর্ক এক অনস্বীকার্য অদ্ভুত বলয়---
মানুষেরও আসার আগে বৃক্ষে বাতাসে, আকাশ মাটিতে, লতায়-পাতায় সম্পর্ক ছিল, সম্পর্ক এক আশ্চর্য কোমল গ্রন্থি আমাদের বেঁধে রাখে সহজ উষ্ণতায়।"
উষ্ণতার খোঁজেই তো আমরা মিলিত হই বারবার। উষ্ণতার খোঁজেই সানন্দ, সমুজ্জ্বল একটি উৎসব উপহার দেয় 'আপনজন'। প্রতিবছর সকরুণ শীতের দিনগুলিতে। মগজ ও হৃদয়ের জটিল রসায়নে উষ্ণতার উদযাপনের আয়োজন। তিনি একদিন হৃদয়ের ডাক দিতেন। অফুরন্ত সম্ভবনাময় মানুষগুলি কীভাবে জীবন নিঃশেষ করে নিজেকে অক্ষরের মূর্তিতে প্রকাশ করছে, তা মেলে ধরার এক প্রাঙ্গণ রচনা করে, ডাক দিতেন উষ্ণ অভ্যর্থনায়। কবি তমালিকা পণ্ডাশেঠ এমনভাবেই বিবিধ বর্ণে ফুটে রয়েছেন সাহিত্য উৎসবের অঙ্গণে। হলদিয়ায় ২০তম বিশ্ব বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি উৎসবে যেন অনুরণিত হচ্ছে সম্পর্কে বেঁধে ফেলার অনুচ্চারিত উষ্ণতার গল্প। এ তো তাঁর কবিতার অনুভবের মতো। কবিকণ্ঠে বিরহমথিত সেই কবিতার উচ্চারণ, প্রতিটি শব্দ সত্যিই স্পর্শ করছে, পৌষের সন্ধে আরও যেন আবেগঘন। শব্দব্রহ্মের নিভৃত তিরে বাঙ্ময় হয়ে ওঠে কবেকার চেনা গল্পগুলি। আরও এক নতুন গল্পের সন্ধান, আরও কয়েকটি কবিতার উপাদন জড়ো হয় ধীরে। সন্ধে গড়িয়ে চলে রাতের দিকে। শেষ তুলির টান আরও দ্রুত হয়। সাহিত্য নগরী নির্মাণরত বিশ্বকর্মারা তখনও অক্লান্ত। একটু উষ্ণতার খোঁজে এবার সবাই নেমে আসবেন উৎসবের প্রাণবন্ত অঙ্গণে।
তাঁর রাজনীতির ইউএসপি সংস্কৃতির প্রতি ভালবাসা। বরাবর তিনি নতুন ভাবনার দিশারি। একসময় হলদিয়া উৎসবকে এভারেস্টসম উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিলেন যা আজও হলদিয়ার মতো বঙ্গবাসীও স্মৃতির মণিকোঠায় রেখেছে অটুট। সেই পথচলাতে একদিন সঙ্গী হয় বিশ্ব বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি উৎসব। দেখতে দেখতে দু'দশক। উৎসবকে ঘিরে ছোটখাটো একটি 'লিটারেচার সিটি'। পাঁচশো জন কবি, কথাসাহিত্যিক, ভাষা গবেষক, প্রাবন্ধিক, সাহিত্য সমালোচক, আবৃত্তিশিল্পী, সংগীত শিল্পী, চিত্রশিল্পীর এক মহা সমারোহ। বাংলায় লেখেন এমন মানুষজনের এক কুম্ভমেলা। দুই বাংলা, বহির্বঙ্গ ও প্রবাসী বাঙালিরা বছরে একবার নিজেদের আদানপ্রদানের সুযোগ পান। দু'হাজার মানুষ বসবেন এমন একটি অস্থায়ী বিশাল মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। পাশেই চিত্র কর্মশালার আয়োজন। কবিদের জন্যই একটি চায়ের স্টল বসেছে বিশাল আকারে। রঙিন আলো আর আল্পনায় সেজেছে কবিতা নগরী। ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকারাও মুগ্ধ বিস্ময়ে তাকিয়ে। জীবনানন্দ, নীরেন্দ্রনাথ পরস্পর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কালচক্রের গতি মেপে নিচ্ছেন। কবি বলে ওঠেন, তিনি যথার্থই পৃষ্ঠপোষক। যিনি জীবনকে লড়াইয়ের আঙিনায় রেখে মাটিতে এঁকেছেন স্বপ্নের সফল ছবি।
No comments