হলদিয়া পুরসভার নতুন বাস টার্মিনালে বসছে সোলার প্ল্যান্ট
বন্দর শহরে নবনির্মিত সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাসে আলো জ্বালাতে ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সোলার প্ল্যান্ট বসাচ্ছে হলদিয়া পুরসভা। একইসঙ্গে পুরসভার অফিসে বিভিন্ন কাজ সৌর বিদ্যুতের করার পর…
হলদিয়া পুরসভার নতুন বাস টার্মিনালে বসছে সোলার প্ল্যান্ট
বন্দর শহরে নবনির্মিত সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাসে আলো জ্বালাতে ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সোলার প্ল্যান্ট বসাচ্ছে হলদিয়া পুরসভা। একইসঙ্গে পুরসভার অফিসে বিভিন্ন কাজ সৌর বিদ্যুতের করার পরিকল্পনা করছে পুর কর্তৃপক্ষ। পরিবেশ বান্ধব এবং বিদ্যুতের খরচ সাশ্রয়ে এই উদ্যোগ নিয়েছে পুরসভা। 'ন্যাশনাল ক্লিয়ার এয়ার প্রোগ্রাম' বা সংক্ষেপে এনক্যাপ তহবিলের অর্থে দু'টি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে তারা। ওয়েস্টবেঙ্গল রিনিউয়েবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিকে (ওয়েবরেডা) এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হলদিয়ায় বন্দর সহ বিভিন্ন শিল্পসংস্থা ইতিমধ্যেই তাদের অফিসগুলিতে পুরোমাত্রায় সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার শুরু করেছে। কোনও কোনও শিল্প সংস্থা তাদের আবাসন এলাকাতে সোলার প্ল্যান্ট বসিয়ে বিদ্যুতের খরচ সাশ্রয় করছে। এবার কর্পোরেট সংস্থাগুলির পথে এগচ্ছে হলদিয়া পুরসভাও। টাউনশিপে হলদি নদীর তীরে সৌর বিদ্যুতের আলোয় একটি পরিবেশবান্ধব পার্ক গড়ে তোলার প্রকল্পও হাতে নিয়েছে তারা। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতায় সেই পার্কের কাজ এক বছরের বেশি সময় ধরে থমকে রয়েছে বলে অভিযোগ পুর কর্তৃপক্ষের।
সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারে জোর হলদিয়া পুরসভার নতুন বাস টার্মিনালে বসছে সোলার প্ল্যান্ট ও কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে টাউনশিপে সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাস তৈরি হচ্ছে। আইওসি রিফাইনারি সিএসআর ফান্ড থেকে এই অর্থ দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই সাড়ে ৩ কোটি টাকা খরচে ঝাঁ চকচকে টার্মিনাস তৈরি হয়েছে। এবার আরও কয়েক কোটিখরচে অত্যাধুনিক যাত্রী বিশ্রামাগার, পরিবহণ কর্মীদের রেস্ট রুম, কাফে, রেস্টুরেন্ট তৈরি হবে। ওই এস্টিমেট ভেটিংয়ের জন্য মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে পাঠানো হয়েছে। হলদিয়ার পুর প্রশাসক তথা মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাসকে আধুনিক রূপ দিতে এটি সৌর বিদ্যুতে চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওয়েবরেডা প্রাথমিকভাবে ৫০ লক্ষ টাকার সোলার প্ল্যান্ট বসানোর বাজেট দিয়েছে। জেলায় প্রথম এধরনের সোলার বাসটার্মিনাস তৈরি হচ্ছে। বাড়তি বিদ্যুৎ গ্রিডে দেওয়া হবে। বাস টার্মিনাসের দু'টি গেটের সামনে বেদখল জমি উদ্ধার করে ড্রেন তৈরি করা হবে। একইভাবে পুরসভা ভবনের ছাদেও এক মেগাওয়াটের বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার প্ল্যান্ট বসানো হবে। দু'টি সোলার প্ল্যান্টের জন্য কোটি টাকার বেশি খরচ হবে পুরসভার। নতুন বাস টার্মিনাল এর জন্য ভিত্তিপ্রস্থ স্থাপন হয়েছিল ২১শে জানুয়ারী ২০২২ এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়েছে।
পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, এবছর ২০২৩- ২৪ অর্থ বর্ষে গ্রিন সিটি গড়ার জন্য এনক্যাপ প্রকল্পে ৫ হলদিয়াই সবচেয়ে বেশি ফান্ড পেয়েছে। ইতিমধ্যেই দু' দফায় ২ কোটি ১২ লক্ষ টাকা হলদিয়া পুরসভায় ক এসেছে। সোলার প্ল্যান্ট তৈরি হবে এনক্যাপ ফান্ডের অর্থ থেকে। ইতিমধ্যেই হলদিয়ায় বিভিন্ন শিল্প সংস্থা মিলিয়ে প্রায় ১০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ তৈরি করে। আইওসি, পেট্রকেম দু'টি শিল্প সংস্থা সিংহভাগ সৌর বিদ্যুৎ তৈরি করে। হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ টাউনশিপে একটি সোলার এনার্জি পার্ক তৈরি করেছে। বন্দরের প্রশাসনিক ভবন ছাড়াও আবাসন এলাকায় ওই বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয়। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পর্যটক আকর্ষণের জন্য আইওসির সহযোগিতায় একটি সৌর বিদ্যুৎ পরিচালিত আধুনিক রিভারাইন পার্ক তৈরির পরিকল্পনা করেছিল পুরসভা। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ (নো অবজেকশন দিচ্ছে না। ওই জমি হলদিয়া বন্দর পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ নো অবজেকশন দেওয়ার আগে প্রকল্পের ডিপিআর চাইছে। কিন্তু অনুমোদনের আগে এটা সম্ভব নয়। এই নিয়ে দীর্ঘদিন টানাপোড়েন চলছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। তবে বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর কর্তৃপক্ষ টাউনশিপের নদী তীরবর্তী এলাকা সৌন্দর্যায়নের জন্য ২০১৬ সালে চুক্তি করে নিয়েছিল। কিন্তু মাঝপথে সেই কাজ আটকে রয়েছে। সঠিকভাবে সৌন্দর্যায়ন হয়নি, উল্টে বাণিজ্যিকভাবে পুরসভা ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দু'পক্ষের টানাপোড়েনে ভুগছেন বাসিন্দারা।
No comments