Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

৩৮তম ‘এল্ডারলি স্পোর্টস মিট’ রাজ্য প্রতিযোগিতায়- রাজ্য সভাপতি মানস সরকার

৩৮তম ‘এল্ডারলি স্পোর্টস মিট’ রাজ্য প্রতিযোগিতা সমাপ্ত- রাজ্য সভাপতি মানস সরকার
 বুড়ো হয়ে যাওয়ার কারণে আমরা খেলাধুলো থামাই না, বরং খেলাধুলো থামাই বলেই আমরা বুড়ো হয়ে যাই।’ প্রখ্যাত নাট্যকার জর্জ বার্নাড শ’র এই কথাগুলি ধ্বনিত হচ্ছে …

 


৩৮তম ‘এল্ডারলি স্পোর্টস মিট’ রাজ্য প্রতিযোগিতা সমাপ্ত- রাজ্য সভাপতি মানস সরকার


 বুড়ো হয়ে যাওয়ার কারণে আমরা খেলাধুলো থামাই না, বরং খেলাধুলো থামাই বলেই আমরা বুড়ো হয়ে যাই।’ প্রখ্যাত নাট্যকার জর্জ বার্নাড শ’র এই কথাগুলি ধ্বনিত হচ্ছে হলদিয়ায় আয়োজিত ৩৮তম ‘এল্ডারলি স্পোর্টস মিট’ রাজ্য প্রতিযোগিতায়। ৩৫-ঊর্ধ্ব বয়স্ক মহিলা ও পুরুষদের জন্য এই প্রতিযোগিতা। আয়োজক সংস্থা মাস্টার্স অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব ওয়েস্টবেঙ্গল। হলদিয়ার টাউনশিপে বন্দরের সিপিটি গ্রাউন্ডে বসেছে বয়স্কদের দু’দিনের এই খেলাধুলোর আসর। বুড়ো হাড়ে ভেল্কি দেখিয়ে ৮১বছর বয়সি প্রতিযোগী মুজিবর রহমান জ্যাভলিন থ্রো বা বর্শা ছোঁড়া প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন। জ্যাভলিন ও ডিসকাস থ্রো দু’টি খেলাতেই তিনি এদিন প্রথম হলেন। মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা মুজিবরবাবু একসময় বিদ্যুৎদপ্তরে চাকরি করতেন। একই বয়সের আর এক প্রতিযোগী শ্যামল সেন ওই দু’টি প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছেন। তাঁরাই ছিলেন এবারের প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে প্রবীণ। বার্নাড শ’র কথার রেশ ধরেই তাঁরা বার্তা দিলেন, স্পোর্টসম্যান স্পিরিট বাঁচিয়ে রেখেছি বলেই এখনও আমরা মাঠে ময়দানে ছুটছি, খেলায় হারজিতের লড়াই করছি। এটাই জীবনের বাঁচার মন্ত্র। 

শনিবার সকালে মশাল দৌড়ের মধ্য দিয়ে রাজ্যস্তরের এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। মশাল নিয়ে প্রায় ১০কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করেন প্রতিযোগী এবং উদ্যোক্তারা। শহরের খেলাধুলো প্রিয় মানুষজন এবং স্কুল পড়ুয়ারাও অংশ নেয়। মশাল দৌড়ের সূচনা করেন প্রাক্তন বিধায়ক চুনিবালা হাঁসদা। তিনি নিজেও এদিন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। স্পোর্টস মিটের উদ্বোধন করেন এশিয়াডে পদক জয়ী প্রাক্তন ভারতীয় শ্যুটার ভগীরথ সামাই। উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্রীড়া আধিকারিক ইন্দ্রজিৎ সরকার, হলদিয়া বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার(প্রশাসন) প্রবীণকুমার দাস, ডিএভি স্কুলের প্রিন্সিপাল নীতিশপ্রসাদ দত্ত, মাস্টার্স অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মানস সরকার প্রমুখ। প্রতিযোগিতার আহ্বায়ক প্রদীপ বিজলি বলেন, সারা রাজ্য থেকে ৩২০জন প্রতিযোগী অংশ নিয়েছেন। এঁদের মধ্যে ২০০জন মহিলা রয়েছেন। ৩৫-৮০ বছর পর্যন্ত ১০টি বয়সের গ্রুপে ১৪ধরনের অ্যাথলেটিক ইভেন্ট রয়েছে। দু’দিনে মোট ২২৬টি প্রতিযোগিতা হবে। জ্যাভলিন থ্রো, ডিসকাস থ্রো’র মতো পুরুষদের ১০হাজার মিটার এবং মহিলাদের পাঁচহাজার মিটার দৌড় খুবই আকর্ষণীয় ইভেন্ট।

প্রায় চার দশক আগে তাঁর হাত ধরেই প্রথম বয়স্কদের খেলাধুলোর সংগঠন মাস্টার্স অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশন তৈরি হয়েছিল, বললেন বছর সাতাশির মানস সরকার। ২০০৭সাল থেকে তিনি এই সংগঠনের রাজ্য সভাপতি। ২০১৯সালে হলদিয়ায় প্রথমবার রাজ্য মিটে খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। বুকে পেসমেকার বসায় এবার ডাক্তারের বারণ সত্ত্বেও তিনি উৎসাহ দিতে চলে এসেছেন। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে আন্তর্জাতিক মাস্টার্স মিটে অনেকগুলি সোনা পেয়েছেন হলদিয়ার মেয়ে সায়ন্তনী সাহা। তাঁর দৌড় দেখতে দুপুরে ভিড় জমে যায়। পঁচাত্তর বছর বয়সে দৌড়ের দু’টি ইভেন্টে সোনা ও রুপো জিতে বাজিমাত করলেন বেলঘরিয়ার ঝর্ণা মণ্ডল। মহিলাদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বয়স্ক। পঁয়ষট্টি বছরের হাওড়ার কল্পনা দাস সুস্থ রয়েছেন খেলাধুলো করেই। তিনি বললেন, খেলার সুবাদে দেশ-বিদেশ ঘুরি, পদক জিতি আর ছোটদের মাঠে নিয়ে যেতে উৎসাহ দিই। মেদিনীপুরের এক মহিলা প্রতিযোগী ছ’টি কঠিন রোগ উপেক্ষা করে মাঠে নেমে এদিন পদক জিতে চমকে দিলেন সবাইকে।

No comments