Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস, সুগারে কী কী পরীক্ষা জরুরি?

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস, সুগারে কী কী পরীক্ষা জরুরি? 
পরামর্শে বিশিষ্ট এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডাঃ শুভঙ্কর চৌধুরী
আমাদের দেশে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ও প্রবণতা দুই-ই বেশ বেশি। তাই বয়স তিরিশ পেরলেই প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াটা বুদ্ধিমানের …

 



বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস, সুগারে কী কী পরীক্ষা জরুরি? 


পরামর্শে বিশিষ্ট এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডাঃ শুভঙ্কর চৌধুরী


আমাদের দেশে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ও প্রবণতা দুই-ই বেশ বেশি। তাই বয়স তিরিশ পেরলেই প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ। পারিবারিক ইতিহাসে কারও ডায়াবেটিস  না থাকলেও যে কারও শরীরে এই রোগের উপস্থিতি দেখা দিতে পারে। আর পরিবারে ডায়াবেটিস থাকলে শঙ্কা আর একটু বেড়ে যায়। তাই সতর্কতা ও সচেতনতার অঙ্কও বৃদ্ধি পাওয়া উচিত। সাধারণত ৩০ পেরলেই ওবেসিটি ও কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে রীতিমতো নিয়ম মেনে কিছু পরীক্ষা নিয়মিত করানো দরকার। পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে ডায়াবেটিসের সাধারণ কিছু উপসর্গ দেখা দিচ্ছে কি না। যেমন, ঘন ঘন প্রস্রাব, ঘন ঘন তেষ্টা, ক্লান্তিভাব বেড়ে যাওয়া, খিদে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওজন হ্রাস পাওয়া, গোপনাঙ্গে ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ ইত্যাদি। তবে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে ৩০-৪০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে কোনও উপসর্গই থাকে না। তাই সঠিক সময়ে পরীক্ষা ও নিয়মিত চিকিৎসাই এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখার একমাত্র উপায়। দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস থাকলে চলতি পরীক্ষাগুিলর সঙ্গে বাড়তি কিছু পরীক্ষা করারও প্রয়োজন আছে।

কখন কী কী পরীক্ষা?

ক. যখন নিজের ডায়াবেটিস নেই, পরিবারেও রোগের ইতিহাস নেই

১. বয়স ৩০ পেরলে অন্তত ৮ ঘণ্টা না খেয়ে (ফাস্টিং) বা খালি পেটে ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খেয়ে তার দু’ঘণ্টা পর টেস্ট (পিপি) অথবা এইচবিএ১সি —তিনটির একটি পরীক্ষা করতে হবে।

২. প্রথমবারের পরীক্ষায় রিপোর্ট ঠিক থাকলে দু’তিন বছর অন্তর ফের পরীক্ষা করলে চলবে। 

৩. যদি দেখা যায় রক্তে শর্করার মাত্রা একেবারে বর্ডার লাইনে, লাইফস্টাইলগত পরিবর্তন করতে হবে। তিনমাস পর ফের পরীক্ষা করতে হবে।


খ. নিজের ডায়াবেটিস নেই, পারিবারিক ইতিহাসে সুগার আছে

১. পারিবারিক ইতিহাসে ডায়াবেটিস থাকলেও এই তিন পরীক্ষার একটি করে দেখতে হবে।

২. রিপোর্ট ভালো এলেও এই টেস্ট অন্তত ১ বছর অন্তর করতে হবে। 

৩. রিপোর্ট বর্ডার লাইনে থাকলে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে ফের তিন মাসের মাথায় পরীক্ষা করতে হবে। 

৪. বছরে একবার লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করিয়ে নেওয়াও বাধ্যতামূলক।

৫. ওবেসিটি বাড়তে দেওয়া চলবে না (এটি সকলের ক্ষেত্রেই)।


গ. সদ্য ডায়াবেটিস ধরা পড়লে

ডায়াবেটিস ধরা পড়লে শুধু সুগার পরীক্ষাই নয়, সারা বছর দরকার আরও কিছু টেস্ট করে নেওয়া। তা রোগীর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

১. তিন-চার মাস অন্তর ফাস্টিং, পিপি ও তিন মাসের গড় ধরে এইচবিএ১সি টেস্ট করতে হবে। 

২. বছরে একবার লিপিড প্রোফাইল, একটি ইসিজি (হার্টের অসুখ না থাকলেও) এবং একটি রেনাল ফাংশন টেস্ট করতে হবে। 

৩. বাড়িতে কিনে রাখতে হবে কন্টিনিউয়াস গ্লুকোজ মনিটরিং মেশিন অথবা গ্লুকোমিটার। 

সেখানেও মাঝে মাঝেই দেখে নিতে হবে গ্লুকোজের পরিমাণ। সুগার ফল করার সমস্যা এক্ষেত্রে দ্রুত ধরা পড়বে। 


ঘ. দীর্ঘদিন সুগার থাকলে

১. দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে ভুগলে তিন চার মাস অন্তর ফাস্টিং, পিপি ও এইচবিএ১সি পরীক্ষা করতে হবে। পরীক্ষার ফল যা-ই আসুক, পরামর্শ নিতে হবে চিকিৎসকের। 

২. ছ’মাস অন্তর রেনাল ফাংশন টেস্ট করতে হবে। কিডনির পরীক্ষা অবশ্যকর্তব্য।

৩. ছ’মাস অন্তর চোখের পরীক্ষা বাঞ্ছনীয়। দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে ভুগলে রেটিনোপ্যাথি হওয়ার ঝুঁকি  বাড়ে। 

৪. চার মাস অন্তর ইসিজি ও লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা করতে হবে। 

৫. ত্বকের সমস্যা থাকলে ত্বকবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। 

নিয়মিত পরীক্ষা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চলা জরুরি। 

ওজন কমানো ও লাইফস্টাইল পরিবর্তন করা এবং দিনে এক ঘণ্টা শরীরচর্চাও ডায়াবেটিসের সঙ্গে লড়াই করার অন্যতম হাতিয়ার। তাই পরীক্ষার ঘরে ঢিলেমি দেওয়া যাবে না।

No comments