শরীরের কোন লক্ষণ কোন রোগের পূর্বাভাস দেয়
দুয়ারে কড়া নাড়ছে শীত। জাঁকিয়ে বসার আগেই একগাদা সমস্যায় জর্জরিত সাধারণ মানুষ। শরীরে দেখা দিচ্ছে নানা লক্ষণ। শরীরের কোন লক্ষণ কোন রোগের পূর্বাভাস দেয়, তা আলোচিত হল। ১. কাশি, জ্বর, সর্দ…
শরীরের কোন লক্ষণ কোন রোগের পূর্বাভাস দেয়
দুয়ারে কড়া নাড়ছে শীত। জাঁকিয়ে বসার আগেই একগাদা সমস্যায় জর্জরিত সাধারণ মানুষ। শরীরে দেখা দিচ্ছে নানা লক্ষণ। শরীরের কোন লক্ষণ কোন রোগের পূর্বাভাস দেয়, তা আলোচিত হল।
১. কাশি, জ্বর, সর্দি: ঋতু পরিবর্তনের সময়ে একটি রেসপিরেটরি ইনফেকশন এখন অনেককে কাবু করছে। কাশি, জ্বর, সর্দি— এই ইনফেকশনের বড় লক্ষণ। বারবার জ্বর আসে। অনেক সময় কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্টও হয়। অধিকাংশ সময় বয়স্কদের ও শিশুদের এই শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেশি হয়। অ্যাজমা, সিওপিডির লক্ষণ হতে পারে এগুলি। তিন থেকে চারদিন পরেও সমস্যা না মিটলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়। তবে সব ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক প্রযোজ্য নাও হতে পারে। অ্যান্টিবায়োটিক সম্পর্কে প্রথমে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। চট করে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াটা মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়। বয়স্কদের কো মর্বিডিটিও নজরে রাখা প্রয়োজন।
কাশির ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, যাঁদের অ্যাজমা বা সিওপিডি রয়েছে, তাঁদের এই ইনফেকশন বেশি ঘায়েল করে। তাঁরা ইনহেলার নিতে পারেন। এই সময় সাবধানে থাকতে হবে। খুসখুসে কাশি, শ্বাসকষ্ট হলে অবহেলা করবেন না। গার্গল, উষ্ণ জলের ভাপ ইত্যাদি নিলেও উপশম মেলে। এই মুহূর্তে জ্বর বেশিদিন থাকলে ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো মাস্ট।
২. জিভ সাদা হওয়া: জিভ সাদা হওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া। যাঁদের ডায়াবেটিস থাকে তাঁদের মুখে ছত্রাকে সংক্রমণের কারণেও হয়ে থাকতে পারে। এছাড়াও ডিহাইড্রেশনের কারণে জিভ সাদা হয়। তাই বেশি করে জল খাওয়া ভীষণ প্রয়োজন।
৩. মুখ ফ্যাকাশে হওয়া: ডিহাইড্রেশনের সমস্যা, অ্যানিমিয়া থাকলে মুখ সাদা বা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। অতিরিক্ত চিন্তা করলে, ভয় পেলেও এমনটা হয়।
৪. হঠাৎ করে চুল পড়া, খুশকি: শীতকালে হঠাৎ করেই নানান চুলের সমস্যা দেখা দেয়। জিনগত কারণে, অত্যধিক স্ট্রেস পড়লে বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের কারণে হঠাৎ করে চুল পড়তে পারে। শীতে খুশকির সমস্যাও বাড়ে। এগুলি অ্যালোপেশিয়ার লক্ষণ হতে পারে বা কোনও ওষুধের সাইড এফেক্টও হতে পারে। এর সঙ্গে ভাইরাল ইনফেকশনের কোনও সম্পর্ক নেই।
৫. গা, হাত পায়ে ব্যথা: যে কোনও ভাইরাল ইনফেকশনে আক্রান্ত হলে তার প্রথম লক্ষণ হল গা, হাত পায়ে অসহ্য ব্যথা। যেমন ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে হয়। ভাইরাল ইনফেকশন কেটে গেলে ধীরে ধীরে ব্যথাও কমে যায়।
৬. হঠাৎ ওজন কমা: না খেয়ে থাকা বা কম খাওয়ার কারণে ওজন কমে। আবার হরমোনাল বা দীর্ঘমেয়াদি কোনও রোগে আক্রান্ত হলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৭. লাল চোখ: চোখ লাল হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কিছুদিন আগেই যেমন কনজাংটিভাইটিসের সমস্যা খুব দেখা যাচ্ছিল। ঠান্ডা লাগলে, জ্বর হলে, শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিলে চোখ লাল হয়। অতিরিক্ত দূষণের কারণে অ্যালার্জি হলে বা কন্ট্যাক্ট লেন্সের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও এমন সমস্যা দেখা যায়।
মনে রাখবেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শরীরের কোনও লক্ষণ দেখে রোগ নির্ণয় করবেন না। হতে পারে তার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে। তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন চিকিৎসকই।
No comments