আদ্যামায়ের ভোগ
আজও নিয়মের কোন হেরফের হয় না। প্রথা মেনে আদ্যাপীঠ মন্দিরে প্রতিদিন দুপুরে পঞ্চব্যঞ্জন সহকারে তিন দেবতাকে (ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেব, জগৎ জননী আদ্যামা ও শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণ) ভোগ নিবেদন করা হয়। এই ভোগের মধ্যে রাধাকৃষ্ণের…
আদ্যামায়ের ভোগ
আজও নিয়মের কোন হেরফের হয় না। প্রথা মেনে আদ্যাপীঠ মন্দিরে প্রতিদিন দুপুরে পঞ্চব্যঞ্জন সহকারে তিন দেবতাকে (ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেব, জগৎ জননী আদ্যামা ও শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণ) ভোগ নিবেদন করা হয়। এই ভোগের মধ্যে রাধাকৃষ্ণের ভোগ হয় সাড়ে ৩২ সের। আদ্যামায়ের সাড়ে ২২সের এবং ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবের সাড়ে বারো সের চালের। এই ভোগের একটা অংশ প্রতিদিন দীন-দুঃখী নরনারায়ণের মধ্যে বিতরণ করা হয়। মন্দির প্রতিষ্ঠাতা অন্নদাঠাকুর নরনারায়ণের মধ্যে দেখেছিলেন স্বয়ং শিবকে। এখানে প্রতিদিন দুধ দিয়ে পরমান্ন ভোগ হয়। সন্ধ্যায় আরতির আগে ঘি, কিসমিস, বাদাম, পেস্তা, দারুচিনি, তেজপাতা, লবঙ্গ, চিনি দিয়ে আড়াই সের উৎকৃষ্ট সুগন্ধ চালের ভোগ প্রস্তুত করা হয়। তাতে জাফরানও দেওয়া হয়। প্রতিদিন ওই অমৃত ভোগ মন্দিরের তিন দেবতাকে উৎসর্গ করে, তা মন্দিরে আসা হাজার হাজার ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। ৩৬৫ দিনই এই ভোগ ভক্তরা পেয়ে থাকেন।
১৩২২ বঙ্গাব্দে বাসন্তী সপ্তমীর রাতে ঘটে যায় এক অলৌকিক ঘটনা। স্বপ্নে নির্দেশ পেয়ে ইডেন গার্ডেনের জলাশয় ও ঝোপঝাড় ভরা পাকুর গাছের তলা থেকে রামনবমীর সকালে আদ্যামাকে তুলে আনা হয়। সঙ্গে ছিলেন তাঁর পরম ভক্ত সত্যকিঙ্কর রায়, শচীন বসু ও শচীন মজুমদার। শুরু হয় মাতৃসাধনা। কিন্তু বাসন্তীর নবমী রাতে আদ্যামা অন্নদা ঠাকুরকে নির্দেশ দেন, আগামী কাল বিজয় দশমী। তুমি আমায় গঙ্গায় বিসর্জন দিয়ে এসো। আমি সকল ভক্তের ঘরে পুজো পেতে চাই। গঙ্গাবক্ষে দশমীর দিন আদ্যামায়ের ওই মূর্তিকে বিসর্জন দিয়ে আসা হয়। বিসর্জনের আগে মায়ের ছবি তুলে রাখা হয়েছিল। পরবর্তী সময় সেই ফোটোগ্ৰাফ অনুসারেই আদ্যামায়ের ওই মূর্তি তৈরি করা হয়েছিল। যা আজ মূল মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত।
No comments