এক দিনেই বদলি জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারএক দিনে জোড়া প্রাশসনিক বদলি। প্রথমে জেলাশাসক। পরেই পুলিশ সুপার। মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ-প্রশাসনের সর্বোচ্চ দুই পদাধিকারীর রদবদল ঘটেছে। আর এ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে।রাজ…
এক দিনেই বদলি জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার
এক দিনে জোড়া প্রাশসনিক বদলি। প্রথমে জেলাশাসক। পরেই পুলিশ সুপার। মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ-প্রশাসনের সর্বোচ্চ দুই পদাধিকারীর রদবদল ঘটেছে। আর এ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে।
রাজ্যে লগ্নি আনার লক্ষ্যে মঙ্গলবার ১২ ই সেপ্টেম্বর সকালে ১১ দিনের বিদেশ সফরে পাড়ি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন দুপুরেই নবান্ন থেকে একটি নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি জেলায় জেলাশাসক পদে রদবদল ঘটছে। এদের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি রয়েছেন। তাঁকে পাঠানো হল পূর্ব বর্ধমান জেলার জেলাশাসক হিসাবে। আর পূর্ব মেদিনীপুরের নতুন জেলা শাসক হচ্ছেন তনবির আফজল। তিনিরাজ্য সরকারের বিশেষ সচিব ছিলেন।
ওই নির্দেশিকার কিছুক্ষণ পরেই রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব পৃথক একটি নির্দেশিকা মারফত জানিয়ে দেন, রাজ্য পুলিশেও বড়সড় রদবদল ঘটছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ প্রশাসনিক মহলে। কে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার হিসাবে বদলি হয়েছেন। পরিবর্তে জেলার পুলিশ সুপার করা হয়েছে সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যকে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) মানব কুমার সিঙ্ঘলকে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটর ডিসি হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে জেলায় নতুন কাউকেএখনও পর্যন্ত নিয়োগ করা হয়নি।জেলা প্রশাসনের দুই শীর্ষ বদলি
এঁদের দুজনেরই তিন বছরের মেয়াদ শেষ হতে কিছুটা সময় বাকি রয়েছে। তার আগে একই দিনেই দুজনকে কেনই বা সরিয়ে দেওয়া হল তা নিয়ে নানা রকম গুঞ্জন শুরু হয়েছে অধিবেশন ডেকেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আগামী বছর লোকসভা ভোট হওয়ার কথা। কিন্তু যেভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে তাতে লোকসভা ভোট কয়েক মাস এগিয়ে আনার কথা ভাবছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে রাজ্যের শাসকদলের আশঙ্কা, পুজোর মরসুম মিটে যাওয়ার পর লোকসভা ভোটে নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দিতে পারে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। সে ক্ষেত্রে একই জেলায় থাকা তিন বছরের বেশি পুলিশ এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদেরকে সরিয়ে দিত মহলের অনুমান, তার আগে ভাগেই শুধু তাই নয়, গত আড়াই বছরে না। এটা রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত।”
কৌশলগত কারণে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এই রদবদল ঘটানো হয়েছে।ইয়াস ঝড় পরবর্তী সময় জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝির নেতৃত্বে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে উপকূলবর্তী এলাকা। সামগ্রিকভাবে জেলার ২৫টি ব্লক এবং পাঁচটি পুরসভাতে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলি চলছিল পুরোদমে। সে সব নিয়ে জেলাশাসকের কর্মপদ্ধতি নিয়ে হামেশাই প্রশংসা শোনা গিয়েছে নীচুতলার আধিকারিক এবং কর্মচারীদের মধ্যে। প্রশাসনের অন্দরে কান পাতলে শোনা যায়, পূর্ণেন্দু মাজি মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বস্তও ছিলেন। তবে, জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে বরাবর পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছে বিরোধীরা। পুলিশ সুপার অমরনাথ কে প্রসঙ্গে নানা বিষয়ে সরাসরি আক্রমণ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী। শুধু তাই নয় গত আড়াই বছর ধরে জেলায় তিনটি বিস্ফোরণে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাই তাঁর বদলির কারণ রাজনৈতিক মহল মনে করাচ্ছে, হিসাবে সেই অঙ্কও কাজ করতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান।
আগামী অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলাশাসকের একাধিক কর্মসূচির কথা মোটামুটি স্থির করা হয়েছিল বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। তার আগে আচমকা বদলি ঘিরে নানা অঙ্ক কষছেন প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এ প্রসঙ্গে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক অরূপ দাস। বলছেন, “সামনেই লোকসভা ভোট। নিজেদের বিপদ আগাম বুঝতে পেরে নিজেদের অনুগত আধিকারিকদের জেলায় জেলায় পাঠানো হচ্ছে।” যদিও তমলুকের বিধায়ক তথা সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলছেন, “জেলা প্রশাসনিক এবং পুলিশের সর্বোচ্চ পদে রদবদলের ক্ষেত্রে আমরা কিছুই জানি না। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত।
No comments