মহকুমার হাসপাতালে পানীয় জলের অভাব ক্ষুব্ধ রোগীর পরিবারহলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে একমাসের বেশি সময় ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে পানীয় জলের ফিল্টার মেশিন। গরমের সময় তীব্র জল সঙ্কটে পড়েছেন হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোর মিলিয়ে প্রায় এ…
মহকুমার হাসপাতালে পানীয় জলের অভাব ক্ষুব্ধ রোগীর পরিবার
হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে একমাসের বেশি সময় ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে পানীয় জলের ফিল্টার মেশিন। গরমের সময় তীব্র জল সঙ্কটে পড়েছেন হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোর মিলিয়ে প্রায় এক হাজার রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন। বাইরে থেকে জল কিনে খেতে হচ্ছে রোগীদের। কিন্তু হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে বাইরে বেরতে পারেন না রোগীরা। বাড়ির লোকজন না থাকলে তেষ্টা মেটাতে হয় ধার করে। কখনও আবার জল না থাকলে তেষ্টা নিয়েই সারাদিন কাটাতে হয়। হাসপাতাল সংলগ্ন পুরসভার ওয়াটার এটিএম একমাত্র ভরসা। রাত্রি ৮টা বাজলে সেই ওয়াটার এটিএমও বন্ধ হয়ে যায়। এমনকী ওষুধের দোকান ছাড়া হাসপাতালের আশপাশের দোকানপাটও রাত ৯টার পর খোলা থাকে না। ফলে জল কিনতে চাইলেও তা সহজে মেলে না। রাতে প্রয়োজন হলে জল কিনতে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয় রোগীর পরিবারের লোকজনকে। ২০ টাকা করে লিটার বোতলের জল কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে অক্টোবর মাসে হলদিয়া বন্দরের একটি হ্যান্ডেলিং এজেন্সি সংস্থা টাটা মারটেড ইন্টারন্যাশনাল
একমাস ধরে পানীয় জল নেই হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে, ক্ষোভ রোগীদের
লজিস্টিকস সিএসআর প্রকল্পে কয়েক লক্ষ টাকা খরচে ওই ওয়াটার ফিল্টার মেশিন বসিয়ে দেয়। দিনে এক হাজার লিটার জল শোধনের ক্ষমতা রয়েছে এই মেশিনের। রোগীদের অভিযোগ, তীব্র দাবদাহের সময় যখন প্রবল জলের চাহিদা, তখন খারাপ হয়ে যাওয়া ফিল্টারটি সারানোর কোনও উদ্যোগই নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক ও এইচডিইউ সংলগ্ন দু'টি ফিল্টার মেশিনই গরমের সময় বন্ধ
প্রসঙ্গত,আউটডোরে প্রতিদিন এক হাজার রোগী আসেন। এছাড়া হাসপাতালের মেল ও ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ড সহ চারটি ওয়ার্ডে গড়ে প্রতিদিন ১৬০- ১৭০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। রোগীর বাড়ির লোকজন বলেন, রোগীদের একটি বড় অংশ গরিব পরিবারের। তাঁদের ক্ষেত্রে রোজ জল কেনার জন্য ৫০ টাকা খরচ সম্ভব নয়। তাছাড়া জল কিনতে হাসপাতাল থেকে কোথায় যাবে মানুষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বেশকিছু দিন ধরে ফিল্টার মেশিন খারাপ হয়ে রয়েছে। এই মেশিনগুলির মেন্টেন্যান্স খুবই ব্যয়বহুল। তিনমাস অন্তর ফিল্টার পাল্টাতে হয়। বছরে ফিল্টার পাল্টাতেই লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির টাকা থেকে এই খরচ বহন করা হতো। এবার মার্চ মাসে সেই টাকাও আসেনি। সেজন্য ফিল্টার পাল্টানো হয়নি। এর দায়িত্বে মুলত রয়েছেন হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার। সমস্যা দেখার পরও তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ। অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার অর্ণব মুনিয়ান বলেন, হাসপাতাল ফান্ডে টাকা না থাকায় কাজ করা যাচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিচ্ছন্নতার জন্য কায়াকল্প প্রকল্পে পুরস্কার হিসেবে ১ লক্ষ টাকা পেয়েছে। সেই অর্থ নতুন দু'টি ফিল্টার বসানোর জন্য ব্যয় করা হবে। ঘণ্টায় তার শোধন ক্ষমতা ২০০ লিটার। পুরসভার কাছেও সহায়তা চাওয়া হয়েছে। হলদিয়ার মহকুমা শাসক তথা পুর প্রশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পানীয় জলের ফিল্টারের জন্য সহায়তা চেয়েছে। রোগীরা দীর্ঘদিন জল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করছেন। দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের আবাসনে পানীয় জলের সঙ্কট মেটাতে পুরসভা ৯ লক্ষ টাকা খরচ করে সাব মার্সিবল পাম্প বসিয়েছে।
No comments