বুকে কষ্ট চেপে দর্শকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছিলেন যে মহান অভিনেতা, জীবনের ট্র্যাজেডি হাসতে শেখায় যাঁকে, আজ সেই চার্লির প্রয়াণ দিবস।
আজ এমন একজন মানুষের মৃত্যুদিন, যাঁকে সিনেমাপ্রেমী সকল মানুষই এক ডাকে চেনেন। ছোট-বড় সকলেরই খুব প্রিয় ম…
বুকে কষ্ট চেপে দর্শকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছিলেন যে মহান অভিনেতা, জীবনের ট্র্যাজেডি হাসতে শেখায় যাঁকে, আজ সেই চার্লির প্রয়াণ দিবস।
আজ এমন একজন মানুষের মৃত্যুদিন, যাঁকে সিনেমাপ্রেমী সকল মানুষই এক ডাকে চেনেন। ছোট-বড় সকলেরই খুব প্রিয় মানুষ তিনি। নিজের অভিনয় দক্ষতায় তিনি মানুষকে হাসাতে-হাসাতে কাঁদিয়ে দিতে পারেন। আবার কান্নাভেজা পরিবেশকে মুহূর্তে বদলে দিতে পারেন হাসিতে। তাঁর নাম, স্যার চার্লস স্পেনসার চ্যাপলিন, যাঁকে আমরা চার্লি চ্যাপলিন নামে চিনি।
পরনে জরাজীর্ণ কোট-টাই, ঢিলেঢালা মলিন প্যান্ট, মাথায় কালো রঙের ডার্বি হ্যাট, হাতে একটি ছড়ি, পায়ে পুরোনো এক জোড়া বুট এবং ঠোঁটের উপর খাটো অথচ প্রশস্ত একটুখানি টুথব্রাশ গোঁফ - এই লোকটাকে কে না চেনে! শতাব্দী পূর্বে তার অমর কাজগুলো আজকের দিনেও আমাদের বিনোদনের খোরাক জোগায়, আজও আমাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলে। বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ও সবচেয়ে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ব্যক্তিদের তালিকা করা হলে নিঃসন্দেহে চার্লি চ্যাপলিনের নাম একদম উপরের দিকেই থাকবে
বিভিন্ন সিনেমায় ছড়ি হাতে হ্যাট-কোট পরিহিত ছোট্টখাট্টো মানুষটা ছোটবেলায় নিছক আনন্দ দিলেও, পরিণত বয়সে তাঁর সিনেমা সমাজ, জীবনকে অন্যভাবে দেখতে শেখায়। কখনও তিনি হালকা চালে বুঝিয়ে দেন যন্ত্রসভ্যতার সমস্যা (মডার্ন টাইমস), কখনও বা পালিত পুত্রকে বাঁচানোর জন্য গরিব বাবার সংগ্রাম (দ্য কিড)। গম্ভীর বিষয়কে হাসিঠাট্টার মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে তোলার ব্যাপারে তাঁকে পথপ্রদর্শক বলা চলে। সেই কারণেই তাঁকে চলচ্চিত্র জগতে সর্বকালের সেরাদের একজন বলে মেনে নিয়েছেন সকলেই।
পরনে জরাজীর্ণ কোট-টাই, ঢিলেঢালা মলিন প্যান্ট, মাথায় কালো রঙের ডার্বি হ্যাট, হাতে একটি ছড়ি, পায়ে পুরোনো এক জোড়া বুট এবং ঠোঁটের উপর খাটো অথচ প্রশস্ত একটুখানি টুথব্রাশ গোঁফ - এই লোকটাকে কে না চেনে! তিনি আর কেউ নন, আমাদের সকলের প্রিয় মূকাভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন। প্রায় এক শতক আগে তার অমর কাজগুলো আজকের দিনেও আমাদের বিনোদনের খোরাক জোগায়, আজও আমাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলে। বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ও সবচেয়ে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ব্যক্তিদের তালিকা করা হলে নিঃসন্দেহে চার্লি চ্যাপলিনের নাম একদম উপরের দিকেই থাকবে।
চার্লি চ্যাপলিন তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘আমার কাছে সৌন্দর্য হচ্ছে নর্দমায় ভেসে যাওয়া একটা গোলাপ ফুল’। তিনি আরো লিখেছেন - শেষ জীবন পর্যন্ত তিনি তার শৈশবকে বয়ে বেরিয়েছেন। যে শৈশব ছিল দুঃসহ। বাবা তার মাকে ত্যাগ করেছিলেন। মা কখনো সস্তা নাটকের দলে গান গেয়ে, কখনো সেলাই করে চালিয়েছেন সংসার। তারা না খেয়ে থেকেছেন বহুদিন। কখনো ভিক্ষা করে, কখনো চুরি করে জোগাড় করতে হয়েছে খাবার। শৈশবের সেই বঞ্চনা আর অপমানকেই যেন চার্লি মোকাবিলা করেছেন তার চলচ্চিত্রের ভেতর দিয়ে। চার্লি লিখেছেন, প্রবল বঞ্চনার ভেতর দাঁড়িয়েও কী করে পৃথিবীকে ভালোবাসতে হয়, সে শিক্ষা তিনি পেয়েছেন তার মায়ের কাছ থেকে।
শিল্প কী, চার্লির উত্তর, ‘শিল্প হচ্ছে পৃথিবীর কাছে লেখা এক প্রেমপত্র।’ তার অনবদ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্য দিয়ে চার্লি চ্যাপলিন এমন একেকটি প্রেমপত্রই পাঠিয়েছেন পৃথিবীর মানুষের কাছে। সেই প্রেমপত্রগুলো আজকের এই ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ পৃথিবীতেও সমান প্রাসঙ্গিক। তার চলচ্চিত্রগুলো দেখতে গিয়ে এখনো প্রাণবন্ত হাসির স্রোতে ভাসতে ভাসতে মহৎ বেদনায় আর্দ্র হওয়া যায়।
চার্লি চ্যাপলিন একাধারে অভিনেতা, গায়ক, চিত্রনাট্যকার, গল্প লেখক, পরিচালক, শিল্প নির্দেশক, সঙ্গীত পরিচালকসহ আরো বিভিন্ন বিশেষণে বিশেষিত। এই মানুষটি একটি দুর্বিষহ শৈশব পার করে এলেও জীবনের কাছে কখনো হার মানেননি। আর অনেক বেশি প্রাণবন্ত ছিলেন বলেই হয়তো তিনিই বলতে পারেন - ‘আমার জীবনে অনেক সমস্যা আছে কিন্তু আমার ঠোঁট তা জানে না তাই সে সব সময় হাসতে থাকে।’
‘আমি বৃষ্টিতে হাঁটতে ভালোবাসি, কারণ তখন কেউ আমার কান্না দেখতে পায় না।’ এই উক্তিটি হলো- যিনি নিজের চোখের জল আড়াল করে শুধু মূকাভিনয়ের মাধ্যমে অগণিত মানুষের হাসির খোরাক হয়েছেন, জায়গা করে নিয়েছেন অসংখ্য ভক্ত হৃদয়ে তিনি হলেন স্যার চার্লস স্পেন্সার - চার্লি চ্যাপলিন।
নাকের নিচে নকল ছোট গোঁফ, মাথায় টুপি, হাতে ছড়ি, ঢিলেঢালা প্যান্ট, আঁটসাঁট কোট, ঢাউস আকারের জুতো তাও আবার উল্টো করে হেঁটে বেড়াচ্ছেন আর তাই দেখে দর্শকরা হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে। লোকটি যখন হাসছে, দর্শকদের চোখে তখন জল। আর লোকটি যখন কাঁদছে, তখন দর্শকদের হাসতে হাসতে দম বন্ধ হবার জোগাড়। অত্যন্ত দারিদ্র্য ও কষ্টের মাঝে শৈশব পার করেছেন বলেই হয়তো তিনি খুব ভালো করেই উপলব্ধি করতেন, আনন্দ মানুষের জীবনে কতটা প্রয়োজন।
এই পৃথিবীতে কোনও কিছুই চিরস্থায়ী নয়, এমনকী আমাদের সমস্যাগুলোও। বলেছিলেন চার্লি চ্যাপলিন। বেঁচে থাকলে আজ ১৩৩-এ পা দিতেন গোটা বিশ্বের অভিনেতা অভিনেত্রীদের আদর্শ এই শিল্পী। এখনও উদ্বুদ্ধ করে চার্লির ছবি, শেখায়, কী করে শিল্পকে জীবন করে তুলতে হয়। আজ তাঁর চলে যাওয়ার দিনে তাঁর অমর সৃষ্টির কয়েকটি আপনারা দেখে নিতেই পারেন কিন্তু।
আজ এই মহান অভিনেতার প্রয়াণ দিবসে আমার শ্রদ্ধার্ঘ্য।
No comments