গত ছ'মাসে ট্রাক, ছোট গাড়ি ও বাইকের কাছ থেকে ৭৫ লক্ষ টাকার উপর জরিমানা আদায় করেছে পুলিশ
ট্রাফিক আইন ভাঙায় ছয় মাসে জরিমানা আদায় ৭৫ লক্ষ টাকাহলদিয়া শিল্পাঞ্চলে ট্রাফিক আইন ভাঙায় জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গত ছ'মাসে ট্…
গত ছ'মাসে ট্রাক, ছোট গাড়ি ও বাইকের কাছ থেকে ৭৫ লক্ষ টাকার উপর জরিমানা আদায় করেছে পুলিশ
ট্রাফিক আইন ভাঙায় ছয় মাসে জরিমানা আদায় ৭৫ লক্ষ টাকা
হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে ট্রাফিক আইন ভাঙায় জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গত ছ'মাসে ট্রাক, ছোট গাড়ি ও বাইকের কাছ থেকে ৭৫ লক্ষ টাকার উপর জরিমানা আদায় করেছে পুলিশ। সমস্ত জরিমানা আদায় হয়েছে অনলাইনের মাধ্যমে। শুধু ডিসেম্বর মাসে ২৫ তারিখ পর্যন্ত এই জরিমানা আদায়ের পরিমাণ ১৮ লক্ষ টাকা ছাড়িয়েছে। দুর্ঘটনা কমানোর পাশাপাশি শহরে দূষণের মাত্রা কমাতে কড়া পদক্ষেপ করতেই গত ছ'মাসে জরিমানা আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে বলে জানান হলদিয়া ট্রাফিক পুলিসের আধিকারিকরা। হলদিয়ায় ব্যাপকহারে ধরপাকড় ও জরিমানা করায় হেলমেটের ব্যবহার কয়েকগুণ বেড়েছে বলে দাবি ট্রাফিক পুলিসের। অন্যদিকে, বড়দিনের মতো উৎসব মরশুমের পনেরো দিন আগে থেকে জাতীয় ও রাজ্য অ্যানালাইজার দিয়ে চালকদের পরীক্ষা করায় মদ্যপান করে গাড়ি নিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ার প্রবণতা এবার অনেকটাই কমেছে।
হলদিয়ার ট্রাফিক পুলিস বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ছ'মাসে জরিমানা আদায় ৪ লক্ষ টাকা বেড়েছে। জুলাই মাসে ট্রাফিক আইন ভাঙায় গাড়ির মালিকদের পুলিসকে ১৪ লক্ষ টাকা খেসারত দিতে হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে এই পরিমাণ ছিল ১৫ লক্ষ টাকা, নভেম্বর মাসে মোট জরিমানা আদায় হয় ১৭ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা। এক ট্রাফিক পুলিস আধিকারিক তিনটি জনবহুল সিটিসেন্টার, বলেন, হলদিয়ার মূল তিনটি জনবহুল জায়গা সিটিসেন্টার, দুর্গাচক ক্ষুদিরাম স্কোয়ার এবং সুতাহাটায় নিয়মিত গাড়ি চেকিং হয়। পিওএস পদ্ধতিতে (পয়েন্ট অব সেল হার্ডওয়ার সিস্টেম) গাড়ির নম্বর ইনপুট করলেই তার পলিউশন লাইসেন্স সহ অন্যান্য নথি আপডেট রয়েছে কি না, অনলাইনে জানা যাবে। অনলাইনেই জরিমানা আদায় হবে। দূষণ বিধি ভাঙলে ১০ হাজার টাকা গুণাগার দিতে হয় গাড়িকে। হেলমেট না থাকলে এক হাজার টাকা জরিমানা
সড়কে ব্রিদ হলদিয়া শিল্পাঞ্চল তাঁরা বলেন, পুলিসের জরিমানা আদায় দিতে হয়। জরিমানার ভয়ে হেলমেট ব্যবহার বেড়েছে শহরে। ট্রাফিক পুলিসের ওসি সুরজিৎ চক্রবর্তী বলেন, হলদিয়ায় ট্রাফিক আইন ভাঙার প্রবণতা অন্যান্য জায়গার তুলনায় বেশি। জরিমানা করে রাশ টানার চেষ্টা করছে পুলিস। ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সহ শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বিশেষ ট্রাফিক মোবাইল ভ্যান নজরদারি চালানোয় রাতে স্পিড বাইকিং কমেছে। শীতের সময় দূরপাল্লার ট্রাক ও ট্যাঙ্কার ড্রাইভারদের ঘুম কাটাতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে পুলিস। মাঝরাতে গাড়ি থামিয়ে গরম চা খাওয়ানো হচ্ছে। সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে ৫০০ গ্রাম জলের বোতল। কিন্তু শিল্প শহরের মোড়গুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় দুর্ঘটনার পর গাড়িগুলিকে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য ট্রাফিক পুলিসের ভূমিকায় খুশি নন। হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু শহর জুড়েই বেপরোয়া বাইক ও ডাম্পারের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। পুলিস নির্দিষ্ট কয়েকটি মোড়ে গাড়ি আটকে জরিমানা করলেও তাতে সরাসরি মালিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কাটা হচ্ছে। ড্রাইভাররা তাই মোটেই সচেতন হচ্ছে না। অভিযোগ, শহরে বেশিরভাগ লাইসেন্সহীন অদক্ষ চালক গাড়ি চালানোর ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। অন্যদিকে, শহরের মূল রাস্তাজুড়ে গাড়ি পার্কিং, বাজার, স্থায়ী দোকানপাট নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে। ফলে সামান্য অসাবধান হলেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন মানুষ ও কারখানার শ্রমিকরা। এজন্য এইচপিএল লিঙ্ক রোড, দুর্গাচক থেকে সুতাহাটা রাজ্য সড়ক, সিটিসেন্টার থেকে ব্রজলালচক পর্যন্ত জাতীয় সড়ক ও ব্রজলালচক থেকে কুঁকড়াহাটি সড়ক দিন দিন মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। দু'দিন আগেই ব্রজলালচকের কাছে কুঁকড়াহাটি সড়কে বাসের ধাক্কায় স্বাধীন মণ্ডল (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। এই নিয়ে গত ১৫ দিনে ব্রজলালচক এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় এক শিক্ষিকা সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং জখম হয়েছেন ৫ জন।
No comments