ভুয়ো শিক্ষাকর্মীদের আজ ধরানো হবে চিঠি
ভুয়ো শিক্ষকের পর এবার স্কুলে ভুয়ো শিক্ষাকর্মীর হদিশ। গোটা রাজ্যে ১৬৯৪ জন গ্রুপ-ডি কর্মী বেআইনিভাবে সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগপত্র পেয়েছেন বলে হাইকোর্টে জানিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সেই তালিক…
ভুয়ো শিক্ষাকর্মীদের আজ ধরানো হবে চিঠি
ভুয়ো শিক্ষকের পর এবার স্কুলে ভুয়ো শিক্ষাকর্মীর হদিশ। গোটা রাজ্যে ১৬৯৪ জন গ্রুপ-ডি কর্মী বেআইনিভাবে সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগপত্র পেয়েছেন বলে হাইকোর্টে জানিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সেই তালিকা জেলায় জেলায় চলে এসেছে। সবচেয়ে বেশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৩৬০জন এরকম কর্মী আছেন। আজ, মঙ্গলবার অফিস খোলার পরই তাঁদের সরকারিভাবে অবগত করতে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। পৌনে দু'শোর স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও টিচার ইন-চার্জদের কাছে চিঠি পৌঁছে যাবে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিস তালিকা প্রস্তুত করে ফেলেছে। একসঙ্গে এতজন গ্রুপ-ডি কর্মীর ভবিষ্যৎ কী সেই নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
জেলা বিদ্যালয় পূর্ব মেদিনীপুরের পরিদর্শক(মাধ্যমিক) শুভাশিস মিত্র বলেন, এই জেলায় ৩৬০ জনের তালিকা আমরা পর্ষদ থেকে তাঁদের সকলকে কোর্টের অর্ডার সম্পর্কে পারে। অবহিত করতে চিঠি দেওয়া হবে। কোনও কোনও স্কুলে দু'জনও আছেন। প্রায় দু'শো স্কুলে ৩৬০ জন গ্রুপ-ডি কর্মী কর্মরত আছেন।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পর্ষদ থেকে তালিকা জেলায় আসার পর তিনটি কর্মদিবসের মধ্যে চিঠি ইস্যু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। চিঠি আসার পরই শনি, রবি ও বড়দিনের ছুটি থাকায় স্কুলে স্কুলে চিঠি যায়নি। আজ, মঙ্গলবার
চিঠি পাঠানো হবে। এর আগে দু'দফায় বিতর্কিত তালিকায় নাম থাকা শিক্ষকদের তথ্য তলব করতে প্রধান শিক্ষকদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেটাও তিনশো স্কুলে পাঠানো হয়েছিল। বিভিন্ন স্কুল থেকে রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে। কোনও কোনও স্কুলের পরিচালন কমিটি রিপোর্ট না দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষকদের চাপ দিয়েছিল। যদিও শেষপর্যন্ত সেই রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। এবার অবশ্য বেআইনিভাবে সুপারিশ পেয়ে নিয়োগ হওয়া চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের অবহিত করতেই চিঠি। ২০১৮ সালে তাঁরা নিয়োগপত্রপেয়ে স্কুলে যোগ দেন। স্কুলে দরজা, জানালা খোলা ও বন্ধ করা, ফাইলপত্র বওয়া, ঘন্টা দেওয়ার মতো কাজ করেন ওই কর্মীরা। একসঙ্গে এতজনের চাকরি চলে গেলে স্কুলের কাজকর্ম ব্যাহত হতেচাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে পূর্ব মেদিনীপুর আলোচনা অব্যাহত। জেলায় টাকা তোলার অভিযোগ নতুন নয়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যু জিইয়ে ওঠার পর ধারাবাহিকভাবে এই জেলায় প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়ছে। প্রতিদিন তিন-চারটি করে এধরনের অভিযোগ থানায় আসছে। ২০ ডিসেম্বর এগরা থানার কৈথোড় গ্রামের বাসিন্দা অসীম দাস কাঁথি থানার এতোয়াড়িবাড়ের এক দম্পতির বিরুদ্ধে ১২ লক্ষটাকার প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন। তাঁর অভিযোগ, গ্রুপ-সি পদে চাকরির জন্য টাকা লেনদেন হলেও চাকরি পাননি। একই দিনে ওই দম্পতির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছেন পটাশপুর থানার সানকুমারদা গ্রামের সুদীপ পাত্র। তাঁর অভিযোগ, ওই দম্পতি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নিয়েছেন। তাঁরা চাকরি পাননি। কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস বলেন, একই দম্পতির বিরুদ্ধে দু'জন যুবক চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন। তদন্ত শুরু হয়েছে। শুধু গ্রুপ-ডি নয়, হাইকোর্টের নির্দেশে পর্ষদ থেকে প্রকাশিত ওএমআর শিট সহ ১৫২জন মাধ্যমিক শিক্ষকের তালিকায় পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় ৭০ জনের নাম আছে। সেইসব শিক্ষকরা গোটা বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত। তাই বেশ কয়েকজন লোকলজ্জার ভয়ে অনিয়মিত স্কুলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ওইসব শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের নিয়ে নেতিবাচক
পাশাপাশি, ১৬৯৪ জনের ওই তালিকায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে রয়েছেন ২৯৮ জন। জেলার বিভিন্ন ব্লক ছাড়াও ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন স্কুলে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন তাঁরা। জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক চাপেশ্বর সর্দার বলেন, আজ মঙ্গলবার আমরা ল সেলের সঙ্গে বৈঠকে বসবো। তারপর নির্দেশিকা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
No comments