প্রায় তিন বছর পর স্বাস্থ্যভবন থেকে পূর্ব মেদিনীপুরে ৪৬ জন স্থায়ী চিকিৎসক নিযুক্ত
প্রায় তিন বছর পর স্বাস্থ্যভবন থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৪৬ জন স্থায়ী চিকিৎসক নিযুক্ত হলেন। হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে নিযুক্ত চিকিৎসকদের…
প্রায় তিন বছর পর স্বাস্থ্যভবন থেকে পূর্ব মেদিনীপুরে ৪৬ জন স্থায়ী চিকিৎসক নিযুক্ত
প্রায় তিন বছর পর স্বাস্থ্যভবন থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৪৬ জন স্থায়ী চিকিৎসক নিযুক্ত হলেন। হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে নিযুক্ত চিকিৎসকদের সম্প্রতি জেলায় জেলায় পোস্টিং দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এরকম ৪৬ জনকে পাঠানো হয়েছে। ২১ অক্টোবরের মধ্যে তাঁদের যোগ দিতে বলেছে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। ইতিমধ্যে ৩৮ জন বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগ দিয়েছেন বলে পূর্ব মেদিনীপুরের সিএমওএইচ বিভাস রায় জানিয়েছেন। এছাড়াও ডিস্ট্রিক্ট হেলথ অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার সমিতির মাধ্যমে জেলায় চুক্তিভিত্তিতে চিকিৎসক, নার্স ও ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ করা হয়েছে। ১০ অক্টোবর ১৪ জন চিকিৎসক, ৩৭৬ নার্স, ২৪১ জন ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং ১৭জন কাউন্সিলারের প্যানেল প্রকাশিত হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্যজেলার অধীনে ১৪টি গ্রামীণ হাসপাতাল ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। এছাড়াও ২৮টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। চিকিৎসকের অভাবে অধিকাংশ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে
ইন্ডোর পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যেমন, ময়না ব্লকে আড়ংকিয়ারানা ও রামচন্দ্রপুরে দু'টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। তারমধ্যে আড়ংকিয়ারানা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বেড থাকলেও চিকিৎসকের অভাবে ইন্ডোর চালু করা যাচ্ছিল না। নতুন একজন চিকিৎসক ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগ দিয়েছেন। আড়ংকিয়ারানা পিএইচসিতে ইন্ডোর চালুর পরিকল্পনা রয়েছে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের।
তমলুক ব্লকে মোট চারজন চিকিৎসক যোগ দিয়েছেন। তারমধ্যে অনন্তপুর গ্রামীণ হাসপাতালে দু'জন ও পূর্বনখা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু'জন জয়েন করেছেন। পূর্বনখা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইন্ডোর পরিষেবা চালুর মতো পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। দ্রুত সেখানে ইন্ডোর পরিষেবা চালু হবে বলে তমলুকের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক জানিয়েছেন। ওই ব্লকের অধীন কেলোমাল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ইন্ডোর চালু আছে। কিন্তু, পূর্বনখায় ছিল না। চিকিৎসক সমস্যা মিটে যাওয়ায় সেখানেও ইন্ডোর চালু হবে।
পাশাপাশি ন্যাশনাল হেলথ মিশন ও ন্যাশনাল আরবান হেলথ মিশনের অধীনে চুক্তিভিত্তিতে চিকিৎসক, নার্স ও ল্যাব টেকনিসিয়ান নিয়োগ হয়েছে।
গত ১০ অক্টোবর ডিস্ট্রিক্ট হেলথ অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার সমিতি সফল প্রার্থীদের প্যানেল প্রকাশ করেছে। তাতে ১৪ জন চিকিৎসক, ৩৭৬ জন নার্স, ২৪১ জন ল্যাব টেকনিসিয়ানের নাম রয়েছে। পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে তাঁদের নাইনে দেওয়া হবে। বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁদের পোস্টিং দেওয়া হবে। এর ফলে ডাক্তার ও নার্স সঙ্কট অনেকটাই কনবে বলে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের বক্তব্য।
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাসবাবু বলেন, করোনার সময় থেকে ডাক্তার সঙ্কট চলছে। আমরা এক জায়গা থেকে চিকিৎসক তুলে আর এক জায়গায় ডিউটি করাতে বাধ্য হচ্ছি। কিন্তু, স্বাস্থ্যভবন থেকে একসঙ্গে ৪৬ জনের নিয়োগের ফলে চিকিৎসক সঙ্কট অনেকটা মিটবে। পাশাপাশি যাঁদের এক জায়গা থেকে আর এক জায়গার পাঠানো হয়েছিল, তাঁদের আগের জায়গায় ফেরানো হবে। আমরা খুব শীঘ্রই কোন কোন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ইন্ডোর পরিষেবা চালু করা যায়, সেটি রিভিউ করে দেখব। অধিকাংশ প্রাইমারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ইন্ডোর পরিষেবা বন্ধ ছিল। চিকিৎসক ঘাটতি অনেকটা মেটার ফলে কয়েকটি জায়গায় ইন্ডোর চালু হবে।
No comments