সপ্তদশ শতকের ইউরোপের অন্যতম পদার্থবিদ ও গণিতজ্ঞ ব্লেইস পাস্কাল স্মরণেসপ্তদশ শতকের ইউরোপের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পদার্থবিদ দার্শনিক এবং গণিতজ্ঞ বিজ্ঞানী ব্লেইস পাস্কাল ।পাস্কাল সূত্র, সকলেই কমবেশি স্কুল-কলেজে পড়েছে। পাস্কালের সূত্র ছাড…
সপ্তদশ শতকের ইউরোপের অন্যতম পদার্থবিদ ও গণিতজ্ঞ ব্লেইস পাস্কাল স্মরণে
সপ্তদশ শতকের ইউরোপের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পদার্থবিদ দার্শনিক এবং গণিতজ্ঞ বিজ্ঞানী ব্লেইস পাস্কাল ।পাস্কাল সূত্র, সকলেই কমবেশি স্কুল-কলেজে পড়েছে। পাস্কালের সূত্র ছাড়া hydrodynamics প্রায় অচল। মূলত বাবার তত্ত্বাবধানেই পাস্কালের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় এবং ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞান এবং গণিতের প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রকাশ পেতে থাকে।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি কৌণিক ছেদ সম্পর্কিত উপপাদ্য গণনা করেন এবং Essay on Conics নাম দিয়ে তা প্যারিসের আরেক বিখ্যাত গণিতজ্ঞ Pere Mersenne র কাছে পাঠান। মাত্র ১৬ বছর বয়সী এক যুবকের থেকে এত কঠিন উপপাদ্যের এত সঠিক গণনা Mersenne র মত গণিতজ্ঞকেও অবাক করেছিল। কিন্তু Mersenne র চেয়ে যিনি বেশি অবাক হয়েছিলেন তিনি হলেন ডেকার্ট।
কয়েক বছর পর ১৬৪২ সালে, পাস্কাল এক যুগান্তকারী আবিষ্কার করেন - খাতার পাতায় লিখে লিখে পাস্কালের পিতাকে পেশাগত কারণে বড় বড় গণনা করতে হতো। পিতার কষ্ট লাঘবের জন্য পাস্কাল তৈরি করলেন এক যান্ত্রিক, যার নাম ক্যালকুলেটর।
এইখানেই থেমে থাকলেন না। পরে গণিত চর্চায় মনোনিবেশ করেন এবং গণিতজ্ঞ হিসেবে তার সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ হল প্রোবাবিলিটি থিওরি। সেই সময় তিনি এবং Fermat যৌথভাবে প্রোবাবিলিটি থিওরির একটি গাণিতিক রূপ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন, যা বর্তমানে গণিত এবং আধুনিক বিজ্ঞানের সকল শাখাতেই ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও জ্যামিতিক শাখায় তাঁর গবেষণা সেই সময় বহুল চর্চিত হত। গণিতের পাশাপাশি পদার্থবিদ্যাতেও পাস্কালের অবদান কম ছিল না। ১৬৪৬ সালে পাস্কাল বায়ুর চাপ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। এই বায়ুর চাপ সম্পর্কিত গবেষণা করতে করতেই তিনি তাঁর বিখ্যাত সূত্র Pascal's Law আবিষ্কার করেন।
সময়টা সেপ্টেম্বর, ১৬৪৭। ফ্রান্সের মসনদে তখন সম্রাট লুই ১৪, প্যারিস শহরের বিখ্যাত দার্শনিক ও গণিতজ্ঞ রেনে ডেকার্ট এর বাড়িতে চলছে এক সভা। উপস্থিত ডেকার্ট সহ ৪ জন। কিন্তু আলোচনা তর্ক-বিতর্ক মূলত প্রবীণ ডেকার্টের সাথে এক নবীন গণিতজ্ঞের। তর্কের বিষয় বেশ বিতর্কিত, ভ্যাকিউম বা শূন্যস্থান নিয়ে। ডেকার্ট নিজে যুক্তিবাদী প্রগতিশীল হলেও ভ্যাকিউম ধারণার তীব্র বিরোধী, কিন্তু তার বিপরীতে যিনি আছেন তিনিও কারোর থেকে কম যান না এবং অত্যন্ত যুক্তির সাথে ভ্যাকিউমের স্বপক্ষে যুক্তি দিচ্ছিলেন। সেদিন দুজনের মধ্যে হালকা তর্কাতর্কি হলেও আজীবন তাদের বন্ধুত্ব ছিল অটুট। এই নবীন ব্যক্তি আর কেউ নন, ব্লেয়িস পাস্কাল।
শারীরিকভাবে বরাবরই রুগ্ন পাস্কাল, স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলার কারণে অল্প বয়সেই শরীর ভেঙে পড়ে। মূলত ভগ্নস্বাস্থ্যের কারণেই বহু গুণে পারদর্শী, বিখ্যাত এই ব্যক্তিত্বের জীবনাবসান হয় মাত্র ৩৯ বছর বয়সে।
শারীরিক অসুস্থতা কে তোয়াক্কা না করে আজীবন বিজ্ঞান সাধনায় ব্রতী এই মহান বিজ্ঞানীর জন্মদিনে, আজ ১৯ শে জুন, ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটির শ্রদ্ধার্ঘ্য।
No comments