মাধ্যমিক স্কুলে ছাএ সংখ্যা ১ পড়ুয়ার অভাবে কার্যত বন্ধের মুখে হলদিয়ার সুধীরচন্দ্র মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র। শিল্পশহর হলদিয়া দেভোগ গ্রাম পঞ্চায়েত কিসমত শিব রামনগর গ্রামে স্কুলটিতে খাতা কলমে ২৫ থেকে ২৬ হলেও নিয়মিত স্কুলে আসে মা…
মাধ্যমিক স্কুলে ছাএ সংখ্যা ১
পড়ুয়ার অভাবে কার্যত বন্ধের মুখে হলদিয়ার সুধীরচন্দ্র মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র। শিল্পশহর হলদিয়া দেভোগ গ্রাম পঞ্চায়েত কিসমত শিব রামনগর গ্রামে স্কুলটিতে খাতা কলমে ২৫ থেকে ২৬ হলেও নিয়মিত স্কুলে আসে মাত্র ৬ থেকে ৭ জন। তাদের অধিকাংশই আবার স্কুলের নাম, কোন ক্লাসে পড়ে, কিছুই সঠিকভাবে বলতে পারে না। আর সেই স্কুলের শিক্ষক সংখ্যা চারজন।এই ধরনের ছবি দেখা গেল সপ্তাহের প্রথম দিনে উপস্থিত হল মাত্র একজন ছাত্র। একজন মাত্র পড়ুয়া নিয়েই এ দিন কোনরকম ভূগোলের ক্লাস নিলেন এক শিক্ষক। ছাত্র না আসায় বন্ধ মিডেমিল পড়ুয়ার অভাবে করোনার পর স্কুল খোলা থাকলেও বন্ধ, প্রার্থনা, রোলকল, নিয়মিত ক্লাস, মিড-ডে-মিল ,সবকিছুই বন্ধ। স্থানীয় অভিভাবকরা স্কুলের বেহাল দশা দেখে অনেকেই পড়ুয়াদের অন্য স্কুলে ভর্তি করেছেন।
গত ২০১৯ হলদিয়া রিফাইনারি মোটা অংকের টাকা দিয়ে ক্লাস রুম বানিয়ে দিয়েছিলেন। এবং তার আগে মিড ডে মিলের কিচেন রুম, এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা করেছিলেন স্থানীয় শিল্প সংস্থা। কিন্তু কেন এই স্কুলের বেহাল দশা?
স্কুল শিক্ষক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।করোনার আগে থেকেই পড়ুয়ার অভাবে ধুকছিল শিব রামনগরের এই মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র। স্কুলে মাধ্যমিক উঠে যাওয়ার পর থেকে দুরবস্থা আরো বেড়েছে।
শুধু শিব রামনগর? তার সাথে আছে ব্রজলালচক ও কাস্ঠখালির দুই টি। হলদিয়া ব্লক এ তিনটি মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রে একই অবস্থা। কোথাও ৩৫ কোথাও ২৮জন। শিব রামনগরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষকরা ছাত্র পাঠানোর জন্য আর্জি জানানোর পরও সমস্যা মেটে নি। স্থানীয় সূত্রের খবর, হলদিয়া নতুন কারখানা তৈরীর জন্য জমি অধিগ্রহণের সময় দোরো শোভারামপুর হাই স্কুল অন্যএ সরে যাওয়ায় এলাকার পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ ভেবে ২০০৩ সালে এই মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে ওঠে। কারণ আশপাশের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোন মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল নেই। এদিকে রানীচক, গেওয়াডাব সুতাহাটা চৈতন্য পুর স্কুল অনেকটা দূরেই। অর্থাৎ প্রায় তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোথাকার উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল না থাকায় সমস্যা।
প্রথমে উচ্চমাধ্যমিক থেকে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রথম পঠন-পাঠন চালু হয়। পরের নবম ও দশম শ্রেণির ক্লাস যোগ হওয়ার ছাত্র সংখ্যা দুই শত পড়ুয়া ছাড়িয়ে গিয়েছিল। স্কুলের শিক্ষক বিশ্বজিৎ দিন্ডা বলেন স্কুলে পড়ুয়া না আসায় ক্লাস করতে পারছে না শিক্ষকরা।
কয়েক বছর আগে নবম-দশম বন্ধ হওয়ার পর থেকেই পড়ুয়া সংখ্যা কমতে থাকে।
স্কুলে নবম ও দশম অনুমোদন না থাকায় অন্য স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে হতো। এই ক্লাস চালাতে বছরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ হতো। কিন্তু খরচ জোগাড় করতে না পারায় ওই ক্লাস গুলো বন্ধ হতেই পড়ুয়া কমতে থাকে। শেষে স্থানীয় দুটি প্রাইমারি থেকে পঞ্চম শ্রেণীর চালু হওয়া অভিভাবকরা কেউ দু-তিনটি ক্লাসের জন্য এখানে ভর্তি করতে চাইছেন না।
শিক্ষকদের দাবি এই স্কুল গুলির মধ্য শিক্ষা পর্ষদ অনুমোদিত হলে এবং মাধ্যমিক ক্লাস পুনরায় চালু হলে সূরা মিলাতে পারে। এর জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য পঞ্চায়েত সমিতি ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে হওয়া আবেদন জানান এলাকার মানুষ। হলদিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুব্রত হাজরা বলেন রাজ্য সরকারের কাছে এ বিষয়ে আমরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আবেদন জানাব। হলদিয়া পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধক্ষ আলোক দাস বলেন ওই এলাকার ভৌগোলিক পরিবেশ অনুযায়ী জায়গা অধিগ্রহণের ফলে অনেকেই চলে গেছেন অন্যত্র সেক্ষেত্রে ছাত্র সংখ্যা কমেছে।হলদিয়া বিডিও সঞ্জয় দাস বলেন শীঘ্রই স্কুলগুলি হাল ফেরাতে মিটিং করার উদ্যোগ নিচ্ছি।
No comments