কাঁথি পুরসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের যুযুধান দুই শিবিরের মেলবন্ধনবিধানসভা ভোটের হার থেকে শিক্ষা নিয়ে কাঁথি পুরসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের যুযুধান দুই শিবিরের মেলবন্ধন ঘটালেন নেতারা। কাঁথি উত্তর বিধানসভার তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর তরু…
কাঁথি পুরসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের যুযুধান দুই শিবিরের মেলবন্ধন
বিধানসভা ভোটের হার থেকে শিক্ষা নিয়ে কাঁথি পুরসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের যুযুধান দুই শিবিরের মেলবন্ধন ঘটালেন নেতারা। কাঁথি উত্তর বিধানসভার তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর তরুণ জানা ও দলের জেলা যুব সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি এতদিন কাঁথির মাটিতে দলের দুই মেরুতে অবস্থান করতেন। দুই শিবিরের অনুগামীদের সংঘাতের ঘটনায় উত্তেজনা সামলাতে প্রশাসনকেও হিমশিম খেতে হয়েছে। বিধানসভা ভোটে কাঁথি উত্তর ও কাঁথি দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের হারের নেপথ্যেও দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব মূল কারণ ছিল। সংঘাত ও পারস্পরিক দূরত্ব সরিয়ে এবার কাঁথি পুরসভায় জয় ছিনিয়ে আনতে ওই দুই প্রভাবশালী নেতা কাছাকাছি এলেন। বুধবার সুপ্রকাশবাবুর মনোনয়ন জমা উপলক্ষে বর্ণাঢ্য মিছিলের সামনের সারিতে অংশ নেন তরুণবাবু। তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে টানা স্লোগানও দেন। পুরভোটের মুখে এক ফ্রেমে দু’জনের ছবি দেখে উচ্ছ্বসিত কাঁথির তৃণমূল কর্মীরা।
ইতিমধ্যেই মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ শেষ। কাঁথির ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে আটটি ওয়ার্ডে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা গোঁজ হিসেবে লড়াই করছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য তাঁদের অনুরোধ জানিয়েছে দল। ভোটের মুখে দলকে একসুরে বেঁধে লড়াইয়ে নামতে মরিয়া শাসক দল। সেই লক্ষ্যে পারস্পরিক শত্রুতা মিটিয়ে কাঁথি উত্তর বিধানসভার কো-অর্ডিনেটর তথা দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তরুণবাবু ও দলের যুব সংগঠনের জেলা সভাপতি সুপ্রকাশবাবু কাছাকাছি এসেছেন। ১৩নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সুপ্রকাশ গিরি। বুধবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে দুই নেতা ওই ওয়ার্ড পরিক্রমা করেন। অন্যান্য নেতা সহ কয়েকশো তৃণমূল কর্মী তাতে শামিল হন। পুরভোটের মুখে নেতৃত্বের মধ্যে ঐক্য কর্মীদের মনোবল অনেকটাই বাড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দলীয় কর্মীরা ওই ছবি পোস্ট করে নীচে ‘খেলা হবে’ স্লোগান লিখছেন।
কাঁথি পুরবোর্ডের প্রশাসক হরিসাধন দাসঅধিকারী বলেন, এই পুরসভার ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টিতেই জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আমরা যুদ্ধে নেমেছি। নিজেদের মধ্যে সবরকম ভুল বোঝাবুঝি সরিয়ে পরস্পরের কাছাকাছি আসার ফলে কর্মীরাও উজ্জীবিত। বিধানসভায় গোটা রাজ্যে তৃণমূল বিপুল সমর্থন পেলেও কাঁথির দু’টি কেন্দ্রে আমরা জিততে পারিনি। পুরসভা ভোটে জয়ের মধ্যে দিয়ে বিধানসভায় হারের যন্ত্রণা ভুলতে চাই। দুই নেতা এক ফ্রেমে আসায় কর্মীরা দ্বিগুণ উৎসাহিত ও উজ্জীবিত হয়েছেন।
সুপ্রকাশবাবু বলেন, কাঁথির মাটিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এই পুরসভায় ২১-০ ব্যবধানে জয়ী হয়ে কাঁথির গদ্দারকে যোগ্য জবাব দেব। ভোটে অধিকারী পরিবারের কেউ প্রার্থী হননি। আসলে ভোটের আগেই ওঁরা মাঠ ছেড়ে পালিয়েছেন। ওই পরিবারকে কাঁথির মাটিতে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ব না। পুরসভা ভোটে কড়ায় গণ্ডায় জবাব দেওয়া হবে। তরুণবাবু বলেন, আমরা সব নেতৃত্ব এক জায়গায় এসেছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে কর্মীদের ঐক্যের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কাঁথি পুরসভায় টিকিট নিয়ে ক্ষোভ, বিক্ষোভ অনেকটাই নিরসন হয়েছে। নির্দল প্রতীকে যাঁরা মনোনয়ন জমা করেছেন, তাঁদের সরে দাঁড়ানোর আবেদন করা হবে। প্রকৃত কর্মীরা গোঁজ থেকে সরে দাঁড়িয়ে দলের প্রতীককে জেতানোর জন্য লড়াই করবেন। এই পুরসভায় ৪০বছর ক্ষমতায় ছিল একটি পরিবার। বিজেপি সমীক্ষা করে দেখেছে, ওরা প্রার্থী হলে বড় ব্যবধানে হার হবে। তাই ওদের ভোটে টিকিট দেয়নি।বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, বিজেপি কোনও পরিবার ভিত্তিক দল নয়। ২১টি ওয়ার্ডেই যোগ্য প্রার্থী করেছে দল। তাঁদের জেতাতে আমরা বদ্ধপরিকর।
No comments