ইউক্রেন থেকে সময়মতো দেশে ফিরতে পারেনি বলে অভিযোগ
কেন্দ্রীয় সরকার প্লেনের ভাড়া তিনগুণ করে দেওয়ায় ভারতীয় পড়ুয়ারা যুদ্ধের আশঙ্কা সত্ত্বেও ইউক্রেন থেকে সময়মতো দেশে ফিরতে পারেনি বলে অভিযোগভিডিও দেখতে ক্লিক করুন।https://youtu.be/h4t…
ইউক্রেন থেকে সময়মতো দেশে ফিরতে পারেনি বলে অভিযোগ
কেন্দ্রীয় সরকার প্লেনের ভাড়া তিনগুণ করে দেওয়ায় ভারতীয় পড়ুয়ারা যুদ্ধের আশঙ্কা সত্ত্বেও ইউক্রেন থেকে সময়মতো দেশে ফিরতে পারেনি বলে অভিযোগ
ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন।https://youtu.be/h4tfzG8HmFg
কেন্দ্রীয় সরকার প্লেনের ভাড়া তিনগুণ করে দেওয়ায় ভারতীয় পড়ুয়ারা যুদ্ধের আশঙ্কা সত্ত্বেও ইউক্রেন থেকে সময়মতো দেশে ফিরতে পারেনি বলে অভিযোগ করলেন অভিভাবকরা। ২৫হাজার টাকার টিকিটের দাম বেড়ে হঠাৎ ৮০হাজার টাকা হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ভারতীয় পড়ুয়ারা। আরও অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার সময়মতো ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফেরানোর উদ্যোগ না নেওয়ায় পড়ুয়া ও অভিভাবক উভয়েই উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন। ফলে যুদ্ধ ঘোষণার পর দেশে ফেরার প্লেনের টিকিট কাটতে গিয়ে পড়ুয়াদের নাজেহাল হতে হচ্ছে। ৮০হাজার টাকা জমা দেওয়ার পর অনেকে টিকিট পাননি এমন অভিযোগও উঠেছে। বিমানবন্দর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আপাতত উড়ান চালু না থাকায় টিকিট দেওয়া বন্ধ রয়েছে। বিপদকালে একসঙ্গে হাজার হাজার টাকা খুইয়ে সমস্যায় পড়েছেন এরাজ্যের ডাক্তারি পড়ুয়ারা।
যুদ্ধ আক্রান্ত ইউক্রেনের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে পূর্ব মেদিনীপুরের অনেক পড়ুয়া ডাক্তারি পড়ছেন। এখন পর্যন্ত এদের মধ্যে চারজনের পরিবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন হলদিয়ার ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রী দীপাঞ্জলি বেরা। পুরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের গিরিশমোড় এলাকায় তাঁদের বাড়ি। তিনি মেডিকেলের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী। ২০১৬সালে পূর্ব ইউক্রেনের লুগানস্ক স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। পরে তিনি চলে আসেন কিয়েভ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে। আগামী মে মাসেই ডাক্তারি পড়া শেষ করে তাঁর দেশে ফেরার কথা ছিল। শুক্রবার দুপুরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে ভিডিও কলে দীপাঞ্জলী জানান, তাঁরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। সারারাত ধরে গোলাগুলি ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শব্দে ঘুম আসেনি। ওসময় তাঁরা বাঙ্কারের মধ্যে ছিলেন।
কিয়েভ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির কাছেই একটি ফ্ল্যাটে কয়েক বন্ধু মিলে থাকেন দীপাঞ্জলী। তাঁর সঙ্গী বেলদার অনিন্দিতা, সোনারপুরের সম্রাট মল্লিক সহ আরও ছ’জন। এদের কারও বাড়ি কেশপুর, কারও মেদিনীপুর। আপাতত দীপাঞ্জলীদের ফ্ল্যাটই হয়ে উঠেছে একঝাঁক বাঙালি ডাক্তারি পড়ুয়ার কন্ট্রোল রুম। তাঁদের ফ্ল্যাট থেকে মিনিট দশেক দূরে একটি গাড়ি পার্কিং লটে তৈরি হয়েছে বাঙ্কার। সেখানে হাজার খানেক বাসিন্দার সঙ্গে এরাজ্যের বহু পড়ুয়ার ঠাঁই হয়েছে। সাইরেনের শব্দ পেলেই তাঁরা বন্ধুরা মিলে পড়িমড়ি করে ছুটছেন বাঙ্কারে। বম্বিং শেষ হলে আবার ফিরছেন ফ্ল্যাটে। দীপাঞ্জলী জানান, কিয়েভের তাপমাত্রা মাইনাস ১৬ডিগ্রিতে নেমে যাওয়ায় বাঙ্কারে বেশিক্ষণ থাকতে পারছেন না। তিনটে মোটা কম্বলেও শীত কাটছে না। সেজন্য মাঝে মাঝে ফ্ল্যাটে এসে রুম হিটারে উত্তাপ নিচ্ছেন সকলে। দুপুরে সকলে মিলে নুন ভাত ও ডিমভাজা খেয়েছেন। কিন্তু দোকানপাট সব বন্ধ থাকায় কিছু খাবারও মিলছে না। পানীয় জলের হাহাকার দেখা দিয়েছে।
দীপাঞ্জলীর দাদা দীপসাগর বলেন, বোনকে খাবার কেনার জন্য গতকাল ৮হাজার টাকা পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু এটিএম সব বন্ধ থাকায় টাকাও পাচ্ছে না। কয়েকদিনের মধ্যে খাবারের সঙ্কট শুরু হবে। ওদের ফিরে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু প্লেন ভাড়া অস্বাভাবিক রকম বেড়ে যাওয়ায় কেউ ঝুঁকি নেয়নি। দীপাঞ্জলীর পরিবারের আর্জি, কেন্দ্র সরকার প্লেন ভাড়া কমালে ইউক্রেনের পড়ুয়াদের দেশে ফিরতে সুবিধে হয়। বহু সাধারণ পরিবারের ছেলেমেয়ে স্রেফ এত টাকা ভাড়ার জন্য যুদ্ধের কথা শুনেও দেশে ফিরতে পারেনি।
No comments