শরীর ও স্বাস্থ্য ক্যান্সারচিনবেন কীভাবে? লিখেছেন সুপ্রিয় নায়েক
পরামর্শে বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়।
ভারতে জনগণের মধ্যে মূলত ৫টি ক্যান্সার বেশি দেখা যায়—ব্রেস্ট ক্যান্সার ও লক্ষণ• ব্রেস্ট-এ ব্যথাহীন মাংসপিণ্ড …
শরীর ও স্বাস্থ্য ক্যান্সার
চিনবেন কীভাবে? লিখেছেন সুপ্রিয় নায়েক
পরামর্শে বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়।
ভারতে জনগণের মধ্যে মূলত ৫টি ক্যান্সার বেশি দেখা যায়—
ব্রেস্ট ক্যান্সার ও লক্ষণ
• ব্রেস্ট-এ ব্যথাহীন মাংসপিণ্ড তৈরি হওয়া। • নিপল দিয়ে রক্তমিশ্রিত তরল বেরয় বা নিপল ভিতরের দিকে ঢুকে যায়। • ব্রেস্ট-এর ঘা দীর্ঘদিন ধরে না সারলে। • বগলে গ্রন্থি ফুলে উঠলে।
• ব্রেস্ট-এর আকারে পরিবর্তন এলে। • কণ্ঠায় ফোলা অংশ তৈরি হলে।
যে কোনও একটি লক্ষণ দেখা গেলে সতর্ক হন। ১৮ বছর বয়সের পরে প্রত্যেক মহিলারই উচিত মাসে অন্তত একবার হাত দিয়ে ব্রেস্ট-এর পরীক্ষা করা। পুরুষদের ব্রেস্ট-এও কিন্তু ক্যান্সার হয়। তাঁরাও সতর্ক হন।
ওরাল ক্যান্সারের লক্ষণ
• মুখগহ্বরের তালু, গাল বা জিভে যে কোনও ধরনের ঘা সপ্তাহ দু’য়েকের বেশি সময় ধরে চিকিৎসা করানোর পরও না সারলে সাবধান হন। ঘা হতে পারে নানা কারণে। প্রধান কারণ দু’টি। ১. কোনও ভাঙা বা ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতের কোনায় খোঁচা লেগে ২. দ্বিতীয়ত গুটকা, গুড়াকু, সুপারি সেবনের অভ্যেস থেকে।
• কিছু ক্ষেত্রে গলার ভিতরে অর্থাৎ শ্বাসনালী বা খাদ্যনালীর উপরের অংশে ক্যান্সার হলে গলার দু’পাশে গ্ল্যান্ড বা নোড ফুলে উঠে একটা ডেলার মতো তৈরি হয়। এছাড়া খাবার গিলতে সমস্যা হওয়া বা ব্যথা বোধ করা কিংবা কাশির সঙ্গে রক্ত বেরনও ওরাল ক্যান্সারের লক্ষণ।
যাঁরা গুটকা, সুপারির মতো নেশাসামগ্রী মুখে রাখেন, তাঁদের কারও কারও হাঁ মুখ ছোট হয়ে আসে। চিকিৎসা পরিভাষায় এই সমস্যাকে বলে ওরাল সাবমিউকোসাল ফাইব্রোসিস যা প্রাক-ক্যান্সার অবস্থা। সেইসঙ্গে মুখের মধ্যে কখনও সাদা প্যাচ বা গাঢ় লাল প্যাচ দেখাও যেতে পারে। এই প্যাচগুলি প্রাক-ক্যান্সার অবস্থা নির্দেশ করে।
ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ
ধূমপায়ীদের মধ্যে লাং ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। এই ক্যান্সার প্রাথমিকদিকে সেভাবে বোঝা যায় না। কিছুদিন পর কিছু উপসর্গ নিয়ে প্রকাশ পেতে পারে—
• শুকনো কাশি অনেকদিন ধরে সারছে না, কাশির সঙ্গে রক্ত বেরচ্ছে, খাবার খাওয়ার সময় বারবার বিষম লাগছে, এমন লক্ষণে ফুসফুসের এক্স-রে করাতেই হবে।
• হঠাৎ গলার স্বর বসে গেলে এবং ৫-৭ দিন পরও গলার স্বর স্বাভাবিক না হলে সতর্ক হতে হবে।
সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের লক্ষণ
মহিলাদের ইউটেরাসের মুখ বা সারভিক্সে এই ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার অনেকক্ষেত্রে একটি ভাইরাস দ্বারা সৃষ্টি হয়। ভাইরাসটির নাম হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস।
• মহিলাদের কটুগন্ধযুক্ত সাদা ডিসচার্জ। • মেনস্ট্রুয়েশন বন্ধ হওয়ার পরও ব্লিডিং। • শারীরিক সংসর্গের পরে রক্তপাত। তলপেট ও কোমরে ব্যথা এবং ঘনঘন মূত্রনালীর সংক্রমণ। এই ক্যান্সার দূরে রাখতে ব্যক্তিগত শারীরিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দেওয়া দরকার। মনে রাখবেন, প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগী সেরে ওঠেন। তাই ত্রিশোর্ধ্ব মহিলার উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যাপস্মিয়ার টেস্ট করানো। ভ্যাকসিনও রয়েছে। ভ্যাকসিন নিতে হয় ১০-১৪ বছরে বয়সের মধ্যে।
পাকস্থলীর ক্যান্সারের লক্ষণ
• দীর্ঘদিনের হজমের গণ্ডগোল। • খাবার খাদ্যনালী দিয়ে নামতে চাইছে না, বমি হয়ে যাচ্ছে। • বমির সঙ্গে রক্ত পড়া। অল্প একটু খেলেই পেট ভরে যায়, দ্রুত ওজন হ্রাস পেতে থাকে।
শেষ কথা
রোগ ফেলে রাখবেন না। মনে সন্দেহ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
No comments