করোনা মোকাবিলায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ‘হ্যালো ডাক্তারবাবু’ পরিষেবা শুরু করোনা মোকাবিলায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ‘হ্যালো ডাক্তারবাবু’ পরিষেবা শুরু হল। প্রতিটি ব্লক ও পুরসভা এলাকার করোনা সংক্রামিতরা ফোন করে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পা…
করোনা মোকাবিলায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ‘হ্যালো ডাক্তারবাবু’ পরিষেবা শুরু
করোনা মোকাবিলায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ‘হ্যালো ডাক্তারবাবু’ পরিষেবা শুরু হল। প্রতিটি ব্লক ও পুরসভা এলাকার করোনা সংক্রামিতরা ফোন করে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারবেন। বুধবার এসংক্রান্ত লিফলেট ছাপানো হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে গোটা জেলায় ওই লিফলেট বিলি করা হবে। প্রত্যেক ব্লকের জন্য একটি নির্দিষ্ট নম্বর থাকবে। সেই নম্বরে ফোন করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ পাওয়া যাবে। হাসপাতালে ভর্তির ঝক্কি কেটে যাবে এক ফোনেই। পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকেন। এই সময় কী করা উচিত, এনিয়ে সংক্রামিতদের অনেকের ভাবনার শেষ থাকে না। ‘হ্যালো ডাক্তারবাবু’তে ফোন করলেই সেই সমস্যার সমাধান হবে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, করোনা নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কাটাতে আমরা ‘হ্যালো ডাক্তারবাবু’ পরিষেবা চালু করেছি।
তমলুক ও নন্দীগ্রাম জেলা হাসপাতাল, কাঁথি ও হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল, পাঁশকুড়া ও এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল সহ জেলার সমস্ত গ্রামীণ হাসপাতাল এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে হ্যালো ডাক্তারবাবু পরিষেবা আনা হয়েছে। সংক্রামিতের সঙ্গে কথা বলেই চিকিৎসক তাঁকে হোম আইসোলেশনে থাকবেন, নাকি হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে, সেই পরামর্শ দেবেন। ফোন করার একদিন পরেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বাড়িতে হাজির হবেন আশাকর্মী।
পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। গত ১ জানুয়ারি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট ৪৮১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এই পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক বলে সকল বিডিও, এসডিওদের সতর্ক করেছেন জেলাশাসক। কোলাঘাট ব্লকে এবারও সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৮৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তমলুকের এসডিও, কোলাঘাটের বিডিওর করোনা উপসর্গ থাকায় হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।
বুধবার দীঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে র্যাপিড টেস্টে একসঙ্গে ন’জনের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। তারমধ্যে দু’জন হাসপাতালের চিকিৎসক ও দু’জন স্টাফ আছেন। মঙ্গলবার ছ’জনের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছিল।গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত দীঘায় প্রচুর পর্যটক সমাগম হয়েছিল। ওই এলাকার হোটেল কর্মী, দোকানদারদের র্যাপিড টেস্ট হচ্ছে। দীঘার ভিড় থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।
পূর্ব মেদিনীপুরের মতো পশ্চিম মেদিনীপুরেও গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ অনেকটাই বেড়েছে। জেলায় সোমবার পজিটিভের হার ছিল ০৩.৮৬ শতাংশ। ওইদিন মোট ২১৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮৩ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। মঙ্গলবার পজিটিভিটি রেট বেড়ে দাঁড়ায় ০৫.৯৫ শতাংশ। ২৭৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে সংক্রামিত হন ১৬৬ জন। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৪ জন। হোম আইসোলেশনে আছেন ৩৪৮ জন। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩৬২। জানা গিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে খড়্গপুর আইআইটির ২৭ জন আছেন। রেল এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪১। এছাড়াও সংক্রামিতদের মধ্যে মেদিনীপুর শহর, খড়্গপুর শহর, দাসপুর, ডেবরা, ঘাটাল, ক্ষীরপাই, শালবনী, বেলদা, কেশপুর, গড়বেতা সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারাও অছেন। যদিও মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শহরে পজিটিভের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল সহ অন্যান্য মিলিয়ে মোট ছ’জন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
No comments